ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে জনগণের রক্ত টানছে : রিজভী

প্রকাশিত: ১৮:০৯, ২৭ জুন ২০২০

বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে জনগণের রক্ত টানছে : রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলের মাধ্যমে সরকার জনগণের রক্ত টানছে বলে মন্ত্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার সকালে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিদ্যুত ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপনের প্রতিবাদে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকার অনেক মানুষ আমাদের জানিয়েছেন, যেখানে বিদ্যুত বিল হওয়ার কথা ১ হাজার ঠাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২‘শ টাকা, সেখানে ২০ হাজার ঠাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল আসছে। এই ভূতুড়ে বিলের অনেক তথ্য নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে। কিন্তু সরকারের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, সরকার এদিকে তাকাচ্ছে না। তারা গায়ের জোরে বছরে কয়েকবার করে বিদ্যুত ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে। সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তারা মনে করে আমরা যেটা বলবো সেটাই আইন। কেউ কিছু বললে লাল ঘরে পাঠিয়ে দেবো। এ সরকার জনগণকে এটাই বুঝাতে চায়, তোমরা বেশি কথা বলো না, বেশি কথা বললে আমরা তোমাদের একেবারে লালঘরে পাঠিয়ে দেবো। বিরোধী দল ও বিরোধী মতের জন্য একেবারে পর্মানেন্ট করে রেখেছি লাল ঘর, ইটের লাল দেয়ালের মধ্যে বন্দী করে রাখবো। আর একবার বন্দী হলে সহজে বের হওয়া যাবে না। সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, আমরা বলতে চাই, আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেবেন, আমাদের বন্দী করবেন করেন। তারপরেও আমরা প্রতিবাদ করবো। আমারা কারাগারকে ভয় পাই না। আমরা কারাগারে যেতে সবসময় প্রস্তুত। আমরা অন্যায়-অবিচার, অত্যাচার-জুলুম আর মেনে নেবো না। দেশের মানুষও কখনো তা মেনে নেবে না। রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিরিঞ্জে করে যেমন রক্ত টানা হয়, বিদ্যুত ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে সরকার জনগণের শরীরে তেমনিভাবে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত টেনে নিচ্ছে। তাই আমরা বিদ্যুত ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় সংসদে এ বিল পাস হলে আমরা রাজপথে আন্দোলন করবো। রিজভী বলেন, সরকারের অনেক টাকা দরকার। কিন্তু এত টাকা কোথায় যাচ্ছে কেউ জানে না। বিভিন্ন পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ৫ হাজার কয়েকশো কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে জমা আছে। এই টাকা কার? এই টাকা মন্ত্রীদের, এই টাকা আমলাদের, এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। তিনি বলেন, আজ ১১ থেকে ১২ বছর ধরে জনগণের এই টাকা আত্মসাত করে সুইস ব্যাংকে রেখে ফুলে-ফেঁপে একেবারে বিশাল মহীরুহে পরিণত হয়েছে তারা। এখন তাদের আরও টাকা দরকার, সুইস ব্যাংকে আরও কালো টাকা পাঠাতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে বছরে কয়েকবার বিদ্যুত ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করছে সরকার। করোনা ভাইসরাস সংক্রামণ পরিস্থিতি তুলে ধরে রিজভী বলেন, মানুষ মরছে, হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, অক্সিমিটার নেই। ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া কোথাও চিকিৎসা নেই । কিন্তু এতোসব কথা গণমাধ্যমে আসছে না। তিনি বলেন, হাসপাতালে গিয়েও করোনা রোগী কোন চিকিৎসা পাচ্ছে না। কারণ সরকার জনগণকে সুবিধা দেয়া ও জনগণের কষ্ট লাঘব করার জন্য কোন কাজ করেনি। রিজভী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙ্গে পড়েছে, একেবারে ভঙ্গুর অবস্থা। দেশের মানুষ এখন কুকুর-বিড়ালের মতো রাস্তায় মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে করোনায় আক্রান্ত মানুষ চিকিৎসার অভাবে রাস্তায় মারা যাচ্ছে। এ সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে তেমন কিছুই করেনি। আর এ কারণেই এখন দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা। এ অবস্থার উত্তোরণে সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি নবী উল্লাহ নবী, ফিউচার অব বাংলাদেশের নেতা শওকত আজিজ, সাজ্জাদুল হানিফ প্রমুখ।
×