ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অনলাইন আলোচনা

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন

প্রকাশিত: ২৩:০১, ২৫ জুন ২০২০

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দেয়ার জন্য। বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা দিলেন তখন সারা বাংলার মানুষ একে মুক্তির সনদ হিসেবে গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরে যত কাজ এবং যে ধারা রচনা করেছিলেন, তা বাংলাদেশকে ৩৫ বছর এগিয়ে এনেছিল। এরপর তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জাতির পিতার দেখানো পথেই দেশ পরিচালনা করছেন। এ কারণেই আমরা সেই সুদিন আবার দেখতে পাচ্ছি।’ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের ৭১ বছর’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও বিশিষ্টজনেরা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার রাতে জুম এ্যাপের মাধ্যমে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লেখক-রাজনীতিবিদ সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনায় অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি কণ্ঠের বজ্রনিনাদ সাড়ে সাত কোটি কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়ে প্রতিরোধের দাবানল ছড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে যুক্ত হয়েছে আরেকটি দেশ। সেই দেশের নাম স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের সাধারণ মানুষ, দলের নেতাকর্মী ও সুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। জাতির পিতা বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য সারা জীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তিনি তাঁর জীবনের ১৪টি বছর জেলে কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা দিলেন, তখন সারা বাংলার মানুষ একে মুক্তির সনদ হিসেবে গ্রহণ করে। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ১৬৭টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। যখন পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে সরকার গঠন করতে দিল না, তখন স্বাধীনতার ডাক দেয়া ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আর কোন উপায় ছিল না। কারণ বঙ্গবন্ধু আগেই জানতেন নির্বাচনে জিতলেও তারা ক্ষমতা দেবে না, যুদ্ধ করেই দেশকে স্বাধীন করতে হবে। সেটিই হয়েছিল ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যদিও মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি যত কাজ করে গেছেন এবং কাজের যে ধারা রচনা করে গেছেন, তা বাংলাদেশকে ৩৫ বছর এগিয়ে দিয়েছিল। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও জাতির পিতার দেখানো পথেই দেশ পরিচালনা করছেন। আর সে কারণেই আমরা সেই সুদিন আবার দেখতে পাচ্ছি। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশকে একটি অনগ্রসর জাতিতে পরিণত করতে বিএনপি-জামায়াত জোট যখন সাবমেরিন কেবল সংযোগের অনুমতি দিল না, তখনই আমরা অনেক পিছিয়ে পড়লাম। পরবর্তীতে যখন মোবাইল সেবা এলো বিএনপি আমলে, তখন একটা মোবাইল সংযোগ নিতে খরচ পড়ত দেড় লাখ টাকা। যা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে সংযোগ নেয়া সম্ভব ছিল না। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় এলো, তখন দলমত নির্বিশেষে সবাইকে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবসার সুযোগ দেয়া হলো। এখন সব মানুষের হাতে হাতে মোবাইল, ইন্টারনেট। এটাই হচ্ছে মানুষকে সেবা করার সদিচ্ছা। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দেয়ার জন্য। ১৯৭১ সালে যখন লাখ লাখ তরুণ মুক্তিযুদ্ধ করছিল, তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তারা ‘প্লানিং সেল’ গঠন করেছিল। ভবিষ্যত বাংলাদেশ কিভাবে পরিচালিত হবে, তার জন্য। স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ, যাকে বলা হচ্ছিল টিকবে না- সেই রকম একটা পরিস্থিতি থেকে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশকে পুনর্গঠন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু মাত্র ১ হাজার ৩১৪ দিন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন, এই সময়ের মাঝে তিনি ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন করেছিলেন বলে যোগ করেন সঞ্চালক সুভাষ সিংহ রায়।
×