ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ২৩ জুন ২০২০

শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের জন্মদিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তার মেধা ও মননেই বিকশিত হয়েছে এদেশের ছাপাই ছবির ভুবন। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ছাপচিত্রের জনক শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদ। জীবনব্যাপী সাধনা দ্বারা দেশের ছাপচিত্র জগতকে বিশ্বমানে উন্নীত করেছেন পথিকৃৎ এই শিল্পী। উৎকর্ষম-িত করেছেন ছাপচিত্রের পাশাপাশি রেখাচিত্র ও তেলচিত্রের ভুবনকেও। শিল্পের এই দুই শাখায় রয়েছে তার ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, রয়েছে বিপুল, অনুশীলন ও গভীর অভিনিবেশ। আজ মঙ্গলবার এই বরেণ্য শিল্পীর ৯৮তম জন্মাবার্ষিকী ও ৯৯তম জন্মদিন। ১৯২২ সালের এই দিনে কলকাতার ভবানীপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সফিউদ্দীন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কমপ্লেক্সে তার সমাধিতে চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে। চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম পরিহার করে সীমিত পরিসরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এজন্য এবার শ্রদ্ধাঞ্জলির জন্য কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এছাড়াও শিল্পীর জন্মদিনে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করবে গ্যালারি চিত্রক। সফিউদ্দীন আহমেদ গত শতকের চল্লিশের দশক থেকেই খ্যাতিমান চিত্রকর হিসেবে পরিচিত। তার সৃজনশক্তি, উৎকর্ষ ও পরিশীলিত বোধ এবং শিল্পমনীষা দ্বারা এদেশের চিত্রকলা অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন। এদেশের ছাপচিত্রকলার তিনিই শিল্পগুরু। ১৯২২ সালে তিনি ভারতের কলকাতায় জন্ম নেয়া এই গুণী শিল্পী ১৯৪২ সালে কলকাতা সরকারী আর্ট স্কুল থেকে চারুকলায় স্নতক এবং ১৯৫৮ সালে যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল স্কুল অব আর্টস এ্যান্ড ক্র্যাফটস থেকে এচিং ও এনগ্রেভিংয়ে সম্মানের সঙ্গে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। ১৯৪৮ সালে জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসান, আনোয়ারুল হকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঢাকা আর্ট স্কুল (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট) প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন সফিউদ্দীন আহমেদ। পরবর্তীতে ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত সাল তিনি চারুকলা অনুষদের ছাপচিত্র বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশে-বিদেশে বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন সফিউদ্দীন আহমেদ। ২০০৮ সালে ৮৬তম জন্মবার্ষিকীতে বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টসের উদ্যোগে বাংলাদেশে তার প্রথম একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে তার সৃষ্টিসমগ্র নিয়ে ‘শিল্পের অশেষ আলো’ শিরোনামে দুই পর্বে দুটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। চারুশিল্প ভুবনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সফিউদ্দীন আহমেদ একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি তিনি কলকাতা একাডেমি অব ফাইন আর্ট প্রদত্ত ‘একাডেমি প্রেসিডেন্ট পদক’, ভারতের পাটনার শিল্পকলা পরিষদ প্রদত্ত ‘দ্বারভাঙ্গা মহারাজার স্বর্ণপদক’, পাকিস্তান সরকার প্রদত্ত ‘প্রেসিডেন্ট পদক’ অর্জন করেন।
×