ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় আরও ২২ জনের মৃত্যু

৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার সর্বোচ্চ

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ২ জুন ২০২০

৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার সর্বোচ্চ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিবেচনায় সোমবার নতুন রোগী শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়াল ২১ শতাংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২২ জনের মৃত্যু এবং ২৩৮১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৬৭২ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯ হাজার ৫৩৪ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৮১৬ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ১০ হাজার ৫৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৪৩৯টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৩৬৯টি। গত ২৪ ঘণ্টায় হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত প্রায় দুই লাখ কল এসেছে। সোমবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২২ জনের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ ও তিনজন নারী। ১১ জন ঢাকা বিভাগের, আটজন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুইজন সিলেট বিভাগের এবং একজন বরিশাল বিভাগের। এদের মধ্যে হাসপাতালে ১৫ জন, বাসায় ছয়জন এবং হাসপাতালে আনার পর একজন মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, ৪০ বছরের বেশি বয়সী আটজন, ৫০ বছরের বেশি বয়সী চারজন, ৬০ বছরের বেশি বয়সী সাতজন এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সী দুজন রয়েছেন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় নতুন রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৪৪৯ জনকে, ছাড়া পেয়েছেন ২২২ জন, বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ছয় হাজার ২১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিন হাজার ২৩৮ জন। আর ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন দুই হাজার ৭০৭ জন, ছাড়া পেয়েছেন তিন হাজার ৭৫২ জন। এ পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় দুই লাখ ৮৭ হাজার ৮৭৯ জনকে। আর এ পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন দুই লাখ ২৮ হাজার ৭৪৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৯ হাজার ১৩৬ জন। ডা. নাসিমা সুলতানা আরও জানান, সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি। ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১১২টি। আর দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুই লাখ করোনা সংক্রান্ত কল স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নের নম্বরে ৬৩ হাজার ৬২১টি, ৩৩৩ নম্বরে ১ লাখ ১১ হাজার ৫৬৫টি এবং আইইডিসিআর-এর নম্বরে ১৮০৩টি করোনা সংক্রান্ত কল এসেছে। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কল এসেছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৯টি। এ পর্যন্ত হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত মোট কল এসেছে ৮৮ লাখ ৯৭ হাজার ৮১টি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৮১৬ জন ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বিত করোনা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ২০, কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতালে ২৪ জন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৯ জন, রেলওয়ে হাসপাতালে ২ জন, রিজেন্ট হাসপাতালে ১ জন, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ৮ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ১৫৩ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২ জন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১০৯ এবং সিএমএইচ হাসপাতালে ৬৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এভাবে ঢাকা বিভাগে ১৯১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ২২ জন, খুলনা বিভাগে ১২ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, সিলেট বিভাগে ২০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২১ জন এবং রংপুর বিভাগে ২২ জন সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ একদিনে সারাদেশে ৮১৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৫৯৭ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান ডাঃ নাসিমা সুলতানা। ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে ৬০ বছরের বেশি ৪২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ৪ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৪ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ২৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৪ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ৩ শতাংশ। করোনায় মৃতের হার ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৭ শতাংশ নারী। আর আক্রান্তের হার ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী। প্রায় চার লাখ পিপিই মজুদ রয়েছে Ñ স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ১৬২টি পিপিই এবং বিতরণ করা হয়েছে ২১ লাখ ৪০ হাজার ২৯৩টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৯টি পিপিই।
×