ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় জল, বিদ্যুতের দাবিতে অবরোধ

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ২২ মে ২০২০

কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় জল, বিদ্যুতের দাবিতে অবরোধ

অনলাইন ডেস্ক ॥ আমপানের (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) ছোবলে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে কলকাতা। স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার কোনও চিহ্ন নেই। উল্টে জল, বিদ্যুতের দাবিতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে বিক্ষোভ, অবরোধ। বুধবার সন্ধেয় প্রবল গতিতে শহরের বুক দিয়ে বয়ে যায় অতি-ঘূর্ণিঝড় আমপান। সেই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিমি। সেই ক্ষত এখনও স্পষ্ট শহরের বুকে। বিভিন্ন রাস্তায় পড়ে রয়েছে বড় বড় গাছ। পড়ে রয়েছে ট্রাফিক সিগন্যাল পোস্ট। ফলে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। পৌঁছচ্ছে না জলও। শহর জুড়ে চলছে হাহাকার। পুরসভা, পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়েছে শহরকে পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু শহরবাসীদের অভিযোগ, গত দু’দিন হয়ে গেলেও তাঁরা না পাচ্ছেন জল, না পাচ্ছেন আলো। সেই সঙ্গে মরার উপর খাঁড়ার ঘা, মোবাইলে সংযোগের দুরবস্থা। যোগাযোগ করা যাচ্ছে না কারও সঙ্গে। বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা পরিজন কোথায় রয়েছেন, কেমন রয়েছেন, তা জানা যাচ্ছে না, দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে। বেহালা থেকে টালিগঞ্জ, গড়িয়া থেকে যাদবপুর ও উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় একই ছবি ফুটে উঠছে। এ দিন জল এবং বিদ্যুতের দাবিতে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড অবরোধ করেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ সরাতে হবে। বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। এবং জলের ব্যবস্থা করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই তিন দাবি না মিটবে, তাঁরা অবরোধ চালাবেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ বাহিনী। তাঁরা অবস্থানকারীদের বোঝাচ্ছেন কলকাতার সর্বত্র একই অবস্থা। একই ছবি বেহালার শকুন্তলাতেও। সেখানে বিশাল আকারের গাছ পড়ে গিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাস্তাকে। গাড়ি চলাচল স্তব্ধ। দু’দিন হয়ে গেল পুরসভার কোনও কর্মী সেই গাছ সরানোর উদ্যোগ দেখাননি বলে অভিযোগ। বেহালার বিভিন্ন এলাকা এখনও জলমগ্ন। ট্রামডিপোর সামনে, ব্যাঙ্কের সামনে পড়ে রয়েছে গাছ। মানুষ ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা তুলবেন, সে উপায়ও নেই। বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্পের সাহায্যে পুরসভার জল রিজার্ভারে তোলা যাচ্ছে না। তার ফলে জলের সংকট তৈরি হয়েছে। রাস্তায় কল অধিকাংশই ভাঙা। ফলে সেখান থেকেও জল পাওযা যাচ্ছে না। যে দু-একটি টিউবওয়েল রয়েছে। সেখানে প্রচুর মানুষের লাইন পড়ছে। যাদবপুরের বিভিন্ন জায়গায়, বিজয়গড়, বাঘাযতীনেও একই অবস্থা। শহর যেন একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে। পুরসভার সূত্রে জানা যাচ্ছে, শহরের বিভিন্ন জায়গা গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে তা সরানোর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাস্তায় গাছ সরিয়ে এক দিক ফাঁকা করা হয়েছে। সেখান দিয়েই কোনও মতে চলছে গাড়ি। কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নেমেছে পথে। প্রশাসনের আশ্বাস, এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে তাঁরা সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছেন। শহরবাসীর কাছেও তাঁদের আবেদন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে।
×