ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ২১ মে ২০২০

করোনার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নমুনা সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে করোনায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার দৈনিক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৬ জনের মৃত্যু এবং ১৬১৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৩৮৬ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ হাজার ৭৩৮ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ২১৪ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৫২০৭ জন। পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিবেচনায় বুধবার প্রকাশিত নতুন রোগী শনাক্তের হার ১৬ শতাংশের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ২০৭টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ৮৫২টি। আরও ১৩টি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বর্তমানে ৪৩টি ল্যাবে পরীক্ষা হচ্ছে। রাজধানীতে সর্বাধিক করোনা রোগী কাকরাইলে ২৯৮ জন। করোনায় মোট মৃতের ৭১ শতাংশই ঢাকা বিভাগের। বুধবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ এবং তিন জন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সাত জন, চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচ জন, সিলেট বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে তিন জন রয়েছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে চার জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন এবং ১০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ১২ জন, বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ জন। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩০০ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩ হাজার ৮১৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১০০ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৮৯৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ৪ হাজার ১১ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৫১ হাজার ৫০২ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ২৮৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন মোট ১ লাখ ৯৮ হাজার ৫৬১ জন। বর্তমানে দেশে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫২ হাজার ৯৪১ জন। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় আইসোলেশন শয্যা বেড়েছে চার হাজার ১৫০টি। মোট আইসোলেশন শয্যার মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা বেড়েছে ৬০টি। ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৪টি। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৭টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে। ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ বছরের বেশি ৪২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ৪ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৪ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ২৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৪ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ৩ শতাংশ। করোনায় মৃতের হার ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৭ শতাংশ নারী। আর আক্রান্তের হার ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী। আরও ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষার অনুমতি প্রদান ॥ দেশের ১৩টি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে (হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার) কোভিড-১৯ পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাজধানী ঢাকায় ১১টি এবং ঢাকার বাইরে বগুড়া ও চট্টগ্রামে একটি করে প্রতিষ্ঠান। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑ এভার কেয়ার হাসপাতাল (সাবেক এ্যাপোলো হাসপাতাল), স্কয়ার হাসপাতাল, পুর্নাভা হেলথ বাংলাদেশে লিমিটেড, ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, আনোয়ার খান মর্ডান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, বায়োমেড ডায়াগনস্টিক, ডিএমএফআর মলিকিউলার ল্যাব এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, ল্যাব এইড হাসপাতাল, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্স জেনারেল হাসপাতাল এবং কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ। রাজধানী ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে বগুড়ার টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড রাফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল এবং চট্টগ্রামের শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি (পিটিই) লিমিটেড। বর্তমানে দেশে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ৪২টি প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে। ঢাকা সিটিতে কাইরাইলে সর্বোচ্চ করোনা রোগী ॥ কাকরাইলে ২৯৮ জন, যাত্রাবাড়ীতে ২৭৪ জন, মহাখালীতে ২৫৯ জন, মোহাম্মদপুরে ২২৪ জন, মুগদায় ২২১ জন, রাজারবাগে ২০৭ জন, উত্তরায় ১৬২ জন, তেজগাঁওয়ে ১৫৩ জন, মগবাজারে ১৫১ জন, বাবুবাজারে ১২৬ জন, লালবাগে ১২৬ জন, মালিবাগে ১১৯ জন, ধানম-িতে ১১৬ জন, মিরপুরে ১০৯ জন ও বাড্ডায় ১০৮ জন।
×