স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে অবস্থানরত ৩২৭ জন জাপানী নাগরিক নিয়ে ঢাকা ছেড়ে গেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট। বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়। ৮ ঘণ্টা পর এটি সন্ধ্যা ৬টায় নারিতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। জাপানীদের বিদায় দিতে গতকাল বিমানববন্দরে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতসহ অন্যান্য কূটনীতিক। এদিকে ঢাকায় অবস্থানরত নাগরিকদের দেশে ফেরাতে আরও একটি ফ্লাইট সংগ্রহ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। আগামী রবিবার নাগাদ কাতার এয়ারওয়েজের আরও একটি ফ্লাইটে তিন শতাধিক নাগরিক ঢাকা ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জাপানের নাগরিকদের বিষয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোকাব্বির হোসেন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, জাপান বিমানের একটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর চার্টার্ড করে। ওই ফ্লাইটেই ৩২৭ জন ঢাকা ত্যাগ করেন। এদিকে মার্কিনীদের দেশে ফেরাতে আরও একটি চার্টার্ড ফ্লাইট জোগাড় করছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দেশে ফিরতে আগ্রহী মার্কিন নাগরিকদের কাছে তথ্য চেয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে বার্তা দিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। বিস্তারিত বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা পরবর্তী ফ্লাইটের সময়সূচী ঘোষণা করব, বুধবার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে মার্কিন নাগরিকদের জন্য দেয়া বার্তায় এ কথা বলা হয়। পাশাপাশি দেশে ফিরতে আগ্রহী মার্কিন নাগরিকদের একটি ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার আগে অনলাইনে প্রশ্নপত্রটি পূরণ করতে হবে তাদের। যাতে করে দেশে ফিরতে দূতাবাস তাদের সহায়তা করতে পারে। ওই বার্তায় আরও বলা হয়, মার্কিন সরকারের চার্টার্ড ফ্লাইটটিতে বৈধ পাসপোর্টধারী মার্কিন নাগরিকদেরই প্রথম অগ্রাধিকার। এছাড়া আইনীভাবে স্থায়ী কিছু মার্কিন নাগরিকরা সুবিধা পাবেন। তবে ফ্লাইটের চূড়ান্ত গন্তব্য এখনও নিশ্চিত করা হয়নি বলে জানায় দূতাবাস। গত ১৪ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে এসেছে এমন বা অসুস্থ বোধ করছেন মার্কিন নাগরিকদের আপাতত ভ্রমণের চেষ্টা না করার পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন দূতাবাসগুলো। এর আগে ৩০ মার্চ কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন ২৬৯ মার্কিন নাগরিক ও কূটনীতিক। সেই ফ্লাইটে তাদের পোষা ৭টি কুকুরও ছিল। কাতার এয়ারলাইনসের বোায়িং ৭৭৭ বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি দোহা হয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে যায়।
এ সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের জরুরী ভিডিও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মার্কিন সরকার কাউকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে বাধ্য করছে না, এটি মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। করোনাভাইরাসের কারণে শুধু বাংলাদেশ থেকেই নয় মোট ২৮টি দেশ থেকে ১০ হাজার আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন বা ফিরছেন। পুরো বিষয়টি ব্যবস্থা করছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। ব্রিফ্রিংয়ে এটা স্পষ্ট করা হয়, করোনা পরিস্থিতিতেও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম সচল রয়েছে। আমেরিকান নাগরিকদের জন্য কনস্যুলার সেবা পুরোপুরি চালু। তবে পরিস্থিতির কারণে সাধারণের ভিসা সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। এর আগে মার্কিন দূতাবাসের এক বার্তায় জানানো হয়, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে ঢাকায় উদ্যোগ নিয়েছে তারা। উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ রাতে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মালয়েশিয়ার ২২৫ জন নাগরিক ঢাকা ছেড়ে যান। ২৬ মার্চ সকালে দ্রক এয়ারের দুটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়েছেন ভুটানের ১৩৯ জন নাগরিক। ওই দুটি ফ্লাইটে ঢাকায় ভুটান দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বাংলাদেশে অধ্যয়নরত দেশটির শিক্ষার্থীরাও ছিলেন।