ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে কোয়ারেন্টাইন থেকে প্রথম মুক্তি মিলল ইতালি ফেরত ৩৬ জনের

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ৩১ মার্চ ২০২০

দেশে কোয়ারেন্টাইন থেকে প্রথম মুক্তি মিলল ইতালি ফেরত ৩৬ জনের

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গাজীপুরের মেঘডুবি কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র থেকে ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন ইতালি ফেরত ৩৬ জন। দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার এটিই প্রথম ঘটনা। গাইবান্ধা ও নওগাঁয় নতুন করে কাউকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়নি। তবে হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১৪৭ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এদিকে গাজীপুরে হাসপাতালে ভর্তির চারদিন পর যুবকের স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর ঠাকুরগাঁওয়ের এক পরিবারের পাঁচজনকে রংপুর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের রাখা হয়েছে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। সিরাজগঞ্জে করোনা সন্দেহে এক তরুণীকে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। বগুড়ার শিবগঞ্জের দাড়িদহ গ্রামের যে ব্যক্তির করোনা সন্দেহে মৃত্যু হয়েছিল তার রক্তের পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে। তার মানে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। জামালপুরের ইসলামপুরে এক এসআইয়ের স্ত্রীর করোনা সন্দেহে তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আনা হয়েছে। চৌগাছার এক তরুণীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তার রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। রাজশাহীতে এক যুবক এবং গাইবান্ধায় চারজন আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। লালমনিরহাটে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে এক যুবককে পুলিশ খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। এছাড়া ফরিদপুরে নতুন ৪৫, বগুড়ায় আরও ২০, কুড়িগ্রামে নতুন ছয়জনসহ ৬৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরও ১১৩ প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। এদিকে হবিগঞ্জে ৬৭৯, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ১৯০ প্রবাসী, বরিশালে এক হাজার ৫১৪ ও সাভারের ৭২ জন হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ করায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। করোনাভাইরাস না থাকায় গাজীপুরের কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র থেকে ছাড়পত্র পেয়ে ১৬ দিন পর বাড়ি ফিরেছেন নারী ও শিশুসহ ইতালি ফেরত ৩৬ প্রবাসী। সোমবার দুপুরে তারা পূবাইল এলাকার ‘মেঘডুবি ২০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’ থেকে মুক্ত হয়ে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র থেকে বিদেশ ফেরতদের সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার এটিই প্রথম ঘটনা। এছাড়াও আগামী ১ এপ্রিল কাপাসিয়ার পাবুর মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোয়ারেন্টাইনে থাকা অপর সাতজনকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুরের পূবাইল এলাকার ‘মেঘডুবি ২০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’ থেকে ইতালি ফেরত নারী ও শিশুসহ ৩৬ প্রবাসীকে ছাড়পত্র দিয়ে সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাদের বাড়ির উদ্দেশে পাঠানো হয়। কোয়ারেন্টাইনে রেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণে এই ৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন থেকে বাড়ি ফেরার এটিই প্রথম ঘটনা বলে জানান তিনি। মেঘডুবির ওই হাসপাতালের ইনচার্জ ডাঃ জামাল উদ্দিন জানান, সোমবার সকালেই কোয়ারেন্টাইনের ছাড়পত্র দেয়া হয়। এদিকে গাজীপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তির চারদিন পর সোমবার এক যুবকের স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ নিয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হন হতদরিদ্র মেহেদী হাসান নামের ওই যুবক। সিভিল সার্জন মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা এক হাজার ৮৯৫ জনের মধ্য থেকে ৮৯০ জনকে সোমবার পর্যন্ত রিলিজ করে দেয়া হয়েছে। অপর একজন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ঠাকুরগাঁও সদরের চিলারং ইউনিয়নের নদীপাহাড় গ্রামের এক পরিবারের পাঁচ সদস্যকে রংপুর থেকে ফেরত পাঠিয়েছে রংপুর মেডিক্যাাল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগ। তারা রবিবার রাতে ঠাকুরগাঁওয়ে পৌঁছালে তাদের রাখা হয় ঠাকুরগাঁও সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্থানীয় ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে স্থাপিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে। সোমবার ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডাঃ মাহফুজার ও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ নাদিরুল আজিজ চপল জানান, তারা প্রত্যেকেই আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাই তাদের ফেরত পাঠিয়েছে এবং রংপুরে আইইডিসিআরের সদস্যরা তাদের শরীরের সংক্রমণের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছে। রিপোর্ট আসার পর তাদের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা কি হবে তা বলা যাবে। সিরাজগঞ্জ ॥ সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে সুমাইয়া (২০) নামে এক তরুণীকে করোনা সন্দেহে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। পরে তাকে ঢাকায় আইইডিসিআর করোনা ইউনিটে পাঠানো হয়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী কাশি ও শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসেন। তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। তবে তিনি করোনায় আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষার পর জানা যাবে। তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ফেনী ॥ ফেনীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ান্টোইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ১৪ দিনের হোম কোয়ান্টোইন শেষ হওয়ায় ১০৩ প্রবাসীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। জামালপুর ॥ ইসলামপুরে করোনা উপসর্গ থাকা এক নারীর (২৪) নমুনা সংগ্রহ করে রবিবার রাতে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। ওই নারীর বাড়ি পাথর্শী ইউনিয়নের ঢেঙ্গারগড় গ্রামে। তার স্বামী ঢাকায় সিআইডিতে এসআই পদে চাকরি করেন। এ ঘটনায় ওই নারীর বাড়িসহ আশপাশের দশ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। জানা গেছে, ঢাকায় কর্মরত সিআইডির এসআই বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে ঢেঙ্গারগড় গ্রামে শ^শুরবাড়িতে যান। স্ত্রীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে এলে সেখানেই তার শরীরে গলাব্যথা, জ্বর, কাশির উপসর্গ দেখা দেয়। তার স্বামী ওই এসআই জামালপুর সদরের নান্দিনায় নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তবে তার কোন উপসর্গ দেখা দেয়নি। ফরিদপুর ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। এ নিয়ে ফরিদপুরে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে এক হাজার ৬৬২ জন। এদিকে কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা পার করায় সোমবার আরও ১৮৯ জনকে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এই পর্যন্ত ৯০৮ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। ফরিদপুরে সোমবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত কোন রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান জানান, হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে সর্দি, জ্বর, গলা ব্যথা জাতীয় উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া দুজন রোগীর চিকিৎসা চলছে। তবে তাদের কারোরই মধ্যে করোনাভাইরাসজনিত কোন সমস্যা দেখা যায়নি। মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জে গত ১ মার্চ বিদেশ ফেরত লোকের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৪৭৩ জন। এর মধ্যে এ পর্যন্ত চিহ্নিত করা গেছে মাত্র ৬৮১ জনকে। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে গত কয়েকদিনে ৪১০ প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে। কিন্তু বাকি চার হাজার ৭৯২ বিদেশ ফেরতের অবস্থান জানা যায়নি। নওগাঁ ॥ নওগাঁয় নতুন করে কাউকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়নি। তবে হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই সময়ে ১৪৭ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪৮৭ জন। সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্ত হওয়া কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের কোন নমুনা পাওয়া যায়নি। গাইবান্ধা ॥ করোনাভাইরাসে গাইবান্ধায় সোমবার নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ২২ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা প্রবাসী দুজনসহ তার সংস্পর্শে আসা আরও দু’জনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে এবং অপরজন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আইসোলেশনে রয়েছেন। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নতুন করে দুজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। লালমনিরহাট ॥ রাণীনগরের কালীগ্রাম ইউনিয়নের অলংকারদীঘি গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে আল-আমিন শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রামেক হাসপাতালে মারা যান। এর আগে বেলা তিনটার দিকে তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জ্বর-কাশি নিয়ে শনিবার গ্রামের বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু করোনা সন্দেহে গ্রামবাসী তাকে নিজ বাড়ি ঢুকতে দেননি। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এদিকে নিহত আল-আমিনের সঙ্গে ঢাকায় একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং একই সঙ্গে মেসে থাকতেন যুবক মাসুদ (৩০)। মাসুদ করোনা আক্রান্ত বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন জানতে পেরে রবিবার বিকেল তিনটায় তাকে খুঁজে বের করে নিজবাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়। রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে করোনা সংক্রমিত সন্দেহে এক যুবককে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে রাজশাহী বিভাগে গেল ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইন ব্যক্তি কমেছে। রবিবার সকাল আটটা থেকে সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত বিভাগের আট জেলায় নতুন করে হোম কোয়ারেন্টাইনে এসেছে ১৩১ জন। বগুড়া ও জয়পুরহাটে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে সাত রোগী। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানানো হয়, করোনা সংক্রমিত সন্দেহে এক যুবককে আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার রাত ১২টার দিকে তাকে ভর্তি নেয়া হয়। ওই যুবকের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলায়। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বগুড়া ॥ বগুড়ায় সোমবার পর্যন্ত নতুন ২০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ায় ২৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনমুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭৪৩ জন। এদিকে শিবগঞ্জের দাড়িদহ গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী যে ব্যক্তির করোনা সন্দেহে মৃত্যু হয়েছিল তার নজেল সোয়াব পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল এসেছে। সোমবার সকালে বগুড়ার সিভিল সার্জন গাউসুল আজিম চৌধুরী বিষয়টি জানিয়ে বলেন আইইডিসিআর থেকে পরীক্ষার ফলে বলা হয়, ওই ব্যক্তি কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিলেন না। এদিকে করোনা আইসোলেশন বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা লক্ষণের দুই রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন। সোমবার দুপুরে করোনা লক্ষণের ৪৫ বছর বয়সী আরেকজনকে আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, দাড়িদহের মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও কন্যার হোম কোয়ারেন্টাইন মুক্ত করে তাদের সামজিক দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে। ওই গ্রামের যে ১৫ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছিল, তা খুলে দেয়া হয়েছে। যশোর ॥ চৌগাছায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে এক তরুণীকে (১৮) যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তার রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই নারীর সংস্পর্শে আসা উপজেলার পাঁচটি বাড়ির সদস্যদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হওয়ায় সন্দেহবশত তাকে রবিবার সন্ধ্যায় চৌগাছা হাসপাতালে নেয়া হয়। নমুনা সংগ্রহ করে সোমবার সকালে ঢাকায় আইইডিসিআরে এবং তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চৌগাছার ইউএনও জানান, ওই তরুণী পৌরসভার পশ্চিম কারিগরপাড়ার যে বাড়িতে ছিলেন, সেই বাড়ি ও তার পাশের আরও তিন বাড়ি এবং তার স্বামী পরিচয়দানকারী মমিনের হাকিমপুর গ্রামের বাড়ির সব সদস্যকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডাঃ আরিফ আহমেদ জানান, চৌগাছা থেকে আসা এক নারীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে। তার কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। বরিশাল ॥ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের মধ্যে সোমবার দুপুর পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছে এক হাজার ৫১৪ জন। যার মধ্যে অধিকাংশই বিদেশ ফেরত। ১৪ দিন বাড়িতে থাকার পরেও এদের কোন শারীরিক অসঙ্গতি দেখা না যাওয়ায় হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এর বাইরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঁচজন এবং ভোলায় এক রোগী আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নীলফামারী ॥ নীলফামারীতে বিদেশ ফেরত হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১৯৬ জন। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পূর্ণ হয়েছে ১৪২ জনের। তারা সবাই সুস্থ আছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নতুন করে আরও ১১৩ প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ২৭৬৭ জনের মধ্যে মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ায় ২০৬১ প্রবাসীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৭০৬ প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, এখন পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত কোন ব্যক্তি শনাক্ত হয়নি। ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম ॥ হাটহাজারীতে প্রায় ৫০০ বিদেশ ফেরত ব্যক্তির হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছেন উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে ১৯০ প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের ধন্যবাদপত্র দিচ্ছে প্রশাসন। সাভার ॥ সাভারে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ১১১ প্রবাসীর মধ্যে ৭২ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। সোমবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা। কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামে নতুন ছয়জনসহ ৬৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫৭ জনের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন তারা সবাই সুস্থ রয়েছেন। উল্লেখ্য, সোমবার জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় ‘করোনা পরিস্থিতি ক্রমে উন্নতির পথে, অনেকে ঘরে ফিরছেন’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের একটি বাক্যে অনবধানবশত ‘সন্দেহভাজন’ শব্দটি বাদ পড়েছে। প্রকৃত লাইনটি হবে-‘...শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট সন্দেহভাজন আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।’
×