ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনা শঙ্কা

বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

  বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সকলকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। অত্যাবশ্যক নয় এমন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক করোনাভাইরাস আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এখন পর্যন্ত কারও নমুনাতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। উহান ফেরত ৩১২ জন যাত্রী কোয়ারেন্ট্াইন পরবর্তী সপ্তম দিনেও সুস্থ আছেন। করোনা ভাইরাসমুক্ত রয়েছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাস সম্পর্কে জানার কিছু থাকলে আইইডিসিআর’র করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইনে ফোন করে জেনে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক ডাঃ সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, চীনের বাইরে কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের রোগতাত্ত্বিক তথ্য পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, তাদের রোগাক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে চীন ভ্রমণ কিংবা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শের ইতিহাস নেই। অজানা উৎস থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ও ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো করোনাভাইরাস এর দ্রুত বিস্তারকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জটিল পরিস্থিতি বলে আখ্যায়িত করেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এর উৎসকে চিহ্নিত করে তাকে বিচ্ছিন্ন করতে হয়। চীনের হুবেই প্রদেশে বিশেষ করে উহান শহরকে বিচ্ছিন্ন করে তার কিছু সুফল দেখা যাচ্ছে, এখন হুবেই প্রদেশে সংক্রমণের হার নি¤œমুখী। সিঙ্গাপুরেও এ ধরনের পদেক্ষেপের সুফল দেখা যাচ্ছে। কিন্তু চীনের বাইরে কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার ও কয়েকটি দেশে সংক্রমণের উৎস খুঁজে না পাওয়াটা করোনাভাইরাসের মহামারী নিয়ন্ত্রণকে জটিল করে তুলেছে। করোনাভাইরাস নিয়ে আইইডিসিআর’র সভাকক্ষে রবিবার নিয়মিত অবহিতকরণ ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সেব্রিনা ফ্লোরা এসব কথা বলেন। সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আক্রান্ত বাংলাদেশীদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে পরিচালক বলেন, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রেরিত সর্বশেষ খবরে আমরা জানতে পেরেছি যে, মোট ৫ বাংলাদেশের নাগরিক করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে আছেন। কোয়ারেন্টাইনে আছেন পাঁচজন বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাস থেকেও আমাদের সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতেও বাংলাদেশের একজন নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর পেয়েছি। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি বলে জানান অধ্যাপক ডাঃ ফ্লোরা। দেশের জল, স্থল ও আকাশপথে বাংলাদেশে আসা প্রত্যেককে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক ডাঃ ফ্লোরা বলেন, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর, রেলপথ ও বিমানপথে আসা মোট ২ লাখ ৯১ হাজার ১২৬ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় স্ক্রিনিং করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৫৩ জনকে। এভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে বিদেশ থেকে আগত স্ক্রিনিংকৃত যাত্রী সংখ্যা ৯৪১৫ , চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরে স্ক্রিনিংকৃত যাত্রী ছিল ১৭০ জন এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে স্ক্রিনিং করা হয়েছে ৪২৫ যাত্রীকে। এছাড়া অন্য চালু স্থলবন্দরগুলোতে স্ক্রিনিংকৃত যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৭৪১৩। রবিবারও সন্দেহজনক দুটি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করেও করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।
×