ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৈশ্বিক সূচকে দেশে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি কমেছে

প্রকাশিত: ১১:২২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বৈশ্বিক সূচকে দেশে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি কমেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সে (বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের সূচক) ছয় ধাপ পিছিয়ে ৩১ নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এ সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৫-এ। ২০১৯ সালের সূচকে ৬ ধাপ পেছানোর অর্থ, দেশে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি আরও কমেছে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে এ তথ্য তুলে ধরেন ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়নে ‘উগ্রবাদ রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে সেন্টার ফর সোস্যাল এ্যাডভোকেসি এ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিসার্ফ)। সিটিটিসি প্রধান মনিরুল বলেন, গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্সে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি থেকে ছয় ধাপ কমে বাংলাদেশ ৩১ নম্বরে এসেছে। বাংলাদেশ জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় যে সফলতার পরিচয় দিচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো যে সক্ষমতা দেখিয়েছে সেটি বিশ্ব দরবারে প্রচারে জোরালো ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশের মিডিয়া। ভবিষ্যতে উগ্রবাদ বা জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় মিডিয়াকে এ সংক্রান্ত সংবাদ সতর্কতার সঙ্গে পরিবেশনেরও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সহিংস উগ্রবাদ দমনে সুনির্দিষ্ট জাতীয় কোন স্ট্র্যাটেজি নেই। এটা করতে সময় লাগে। তবে আমরা কাউন্টার ভায়োলেন্স এক্সট্রিমিজম (সিভিই) করতে যাচ্ছি। দুইভাবে আমরা কাজটা করছি। প্রথমত জেনারেল এ্যাপ্রোচ এবং দ্বিতীয়ত ভালনারেবল এ্যাপ্রোচ। সেজন্য আমরা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কথা বলছি। উগ্রবাদে জড়ানোর প্রবণতার বিষয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী ছেলেরা সবচেয়ে বেশি উগ্রবাদে জড়াচ্ছে। এসব ভালনারেবল গ্রুপকে মোটিভেট করতে তরুণ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করছি। একইসঙ্গে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত আলোচনা করছি। দেশের বাইরের লোক মনে করে বাংলাদেশের রাস্তায় বের হলে জঙ্গীরা চাপাতি দিয়ে কোপানো শুরু করে। বাস্তব অবস্থাটা গণমাধ্যমকেই প্রচার করতে হবে। যারা অভিযান চালাবে তাদের স্বচ্ছতা থাকতে হবে। মিডিয়া হাউজের সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি রয়েছে। এটা বাড়াতেই সিনিয়র সাংবাদিকদের নিয়ে আজকের এই আয়োজন। এক প্রশ্নের উত্তরে মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারের উদ্যোগে আমরা দেশীয় অবস্থার প্রেক্ষাপটে উগ্রবাদ প্রতিরোধে কাজ করছি। একাডেমিক রিসার্চ হচ্ছে। যে কাজ আমরা করি, সেটা আস্থা এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করি। তিনি জানান, ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর সন্ত্রাসবাদের মূল বৈশ্বিক প্রবণতা এবং নিদর্শনগুলোর সারসংক্ষেপ সরবরাহ করে আসছে সিডনির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস এ্যান্ড পিস (আইইপি)। তাদের ওই সার সংক্ষেপ প্রতিবেদন গোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স (জিটিআই) বলে পরিচিত। গত বছরের নবেম্বরে জিটিআই-২০১৯ প্রকাশিত হয়। ২৩টি গুণগত ও পরিমাণগত নির্দেশকের ভিত্তিতে বিশ্বের ১৬৩ দেশের পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয় সূচকটি। এসব দেশের জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৯৯ দশমিক ৭ শতাংশ। সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছয় ধাপ কমে ৩১তম দেখা যায়। এ অবস্থানের স্কোর ৫.২০৮। অর্থাৎ এ দেশে এখন সন্ত্রাসবাদের প্রভাব মাঝারি মাত্রার। ২০১৮ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৫তম।
×