ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

রবীন্দ্রসরোবরে শুরু হলো একুশে অনুষ্ঠানমালা

প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 রবীন্দ্রসরোবরে শুরু হলো  একুশে অনুষ্ঠানমালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঞ্চ থেকে মাইকে ভেসে আসছে দেশের গান ‘এই মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুজিব সেনা’। গানের সঙ্গে লাল-সবুজ রংয়ে সজ্জিত হয়ে মঞ্চ কাঁপিয়ে নেচে চলেছে একদল তরুণ-তরুণী। মঞ্চের তিন দিক দিয়ে দর্শকের সরব উপস্থিতি অন্যরকম এক পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজধানীর ধানম-ির রবীন্দ্রসরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চে মঙ্গলবার বিকেলে। এদিন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত একুশের অনুষ্ঠানমালার ১১তম আসর ছিল নাচ, গান, কবিতা আর পথনাটকের শৈল্পিক দ্যোতনায় মুখরিত। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন একুশে অনুষ্ঠানমালা উদ্যাপন উপ-কমিটির আহ্বায়ক নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার আজ ১১তম দিন। ১৪ দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার। একুশে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে গোটা জাতি। এজন্য সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং রং দিয়ে সাজানো হবে। তাই আমরা অনুষ্ঠানমালার বাকি অংশটুকু রবীন্দ্রসরোবরেই প্রতিবছর করে থাকি। সে জন্যই আজ থেকে এখানেই অনুষ্ঠান চলবে। ঝুনা চৌধুরী বলেন, ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, স্বাধীনতার পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে যারা জীবন দিয়েছেন এবং দেশের জন্য যেসব মা-বোন জীবন ও সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাই। এবারের একুশের আয়োজন একটু ভিন্ন মাত্রা নিয়ে এসেছে। এবার মুজিববর্ষে দেশব্যাপী সারাবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলবে। এবারের আয়োজন তারই একটি অংশ বলা যায়। দেশপ্রেম ও মানবতার শত্রুরা এখনও আমাদের চারপাশে রয়েছে। যাদের প্ররোচনায় আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বার বার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। সাবধান হয়ে যান। শিল্পী সমাজ এটি কিছুতেই মেনে নেবে না। স্বাগত বক্তব্যের পর শুরু হয় অনুষ্ঠান। শুরুতে দলীয় নৃত্য দিয়ে মঞ্চে আসে ফাল্গুনী নৃত্য সংগঠন। তারা ‘এ মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুজিব সেনা’ গানের সঙ্গে বর্ণিল নৃত্য পরিবেশন করে। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ইমন। পরে গানে গানে দর্শক মুগ্ধ করে মিরপুর সাংস্কৃতিক একাডেমির শিল্পীরা। শুরুতে তাদের দলীয় পরিবেশনায় ছিল দেশের গান ‘এক বুক শহীদের রক্ত দিয়ে রেখেছ যারা মান মায়ের ভাষার’। সংগঠনের শিল্পীদের পরের পরিবেশনায় ছিল গান ‘মুক্তির মন্দির সোপানো তলে’। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি প্রযোজনা নিয়ে মঞ্চে আসে স্বরচিত্র। ‘আর কত রক্তের দরকার’ শীর্ষক এ প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মাহিদুল ইসলাম। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন উজান। দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে সন্ধানী লিটল থিয়েটারের শিশুরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পী মিজানুর রহমান, শাহনাজ আক্তার, নাহিয়ান মুর্চ্ছনা সূচী, জিনাত আফরোজ সূচী, বিপ্লবী কর্মকার প্রমুখ। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পী অনন্যা লাবনী পুতুল, লায়লা আফরোজ, মাহিদুল ইসলাম, জালালউদ্দিন হীরা ও মনিরুল ইসলাম প্রিন্স। সবশেষে ছিল পথনাটক পরিবেশনা। নাট্যসংগঠন পদাতিক বাংলাদেশের পরিবেশনায় ছিল পথনাটক ‘নুরু মিয়ার কিচ্ছা’। নাটকটি রচনা করেছেন ইকরামুল হাসান শাকিল। এছাড়া সুবচন নাট্যসংসদের পরিবেশনায় ছিল নাটক ‘বোধদয়’। সাইদ আহমেদের রচনায় নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন আহমেদ গিয়াস। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন একুশে অনুষ্ঠানমালা উদ্যাপন উপ-কমিটির সদস্য সচিব মানজার চৌধুরী সুইট।
×