ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পল্টনে বহুতল ভবনে আগুন লাগার পর গুজবে আতঙ্ক

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পল্টনে বহুতল ভবনে আগুন লাগার পর গুজবে আতঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর পল্টনের ডি আর টাওয়ার নামের একটি বহুতল ভবনে বৃহস্পতিবার অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতার কারণে আগুন ভয়াবহ রূপ নিতে পারেনি। কোন হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। তবে অগ্নিকা- ভয়াবহ রূপ নিতে না পারলেও, অগ্নিকা- নিয়ে মারাত্মক গুজব ছড়ানো হয়েছিল। গুজব ঠেকাতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাইবার ক্রাইম ইউনিটগুলো। আর গুজবের কারণে ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষের ভিড় সামলাতে ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে একটি নতুন পৃথক ইউনিট গঠন করা হয়েছে। ক্রাউড কন্ট্রোল নামের ইউনিটটি স্বল্প পরিসরে গঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে ইউনিটটির আকার ও কার্যক্রম আরও বাড়ানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকার পল্টনের বক্সকালভার্ট এলাকায় অবস্থিত ডি আর টাওয়ার নামের ১৯ তলা ভবনে অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ভবনটির ১২ তলায় প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় পুরো ভবনে ভয়াবহ আগুন লেগেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও গুজব ছড়ানো হয়। এমন গুজবের পর স্বাভাবিক কারণেই ভবনটিতে থাকা লোকজনের মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের লোকজন যে যার যার মতো নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে নামতে থাকেন। অধিকাংশ লোকজন ভবনটির মূল সিঁড়ি, লিফট ও জরুরী সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে থাকেন। শত শত মানুষ ভবনটি থেকে নামার কারণে ভবনের আশপাশে থাকা ভবনগুলোতে থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের ভবনের বাসিন্দারাও আতঙ্কে ভবন ছেড়ে নিচে নামতে থাকেন। মুহূর্তেই ভবনটির নিচসহ আশপাশের এলাকায় শত শত মানুষে ভরে যায়। এমন ঘটনায় নিচে থাকা মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ভবনের নিচে ও আশপাশে থাকা গাড়িতে বসে ছিলেন। অনেককেই গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে চলে যেতে দেখা যায়। শুধু গাড়ির মালিক বা যাত্রী নয়, গাড়ির চালকদেরও অনেকেই গাড়ি ফেলে চলে যান। এমন ঘটনায় মুহূর্তেই কালভার্ট রোড বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র যানজটে নাকাল হয়ে পড়েন সেখানে থাকা মানুষজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু জনতার ভিড়ে আর রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের যানবাহনকে অনেক কষ্টে ঘটনাস্থলে যেতে হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের টিটিএল দিয়ে চার দিক থেকে ভবনটির ১২ তলায় পানি দেয়া হয়। মাত্র ২০ থেকে ২২ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। এজন্য আগুন আর ভয়াবহ রূপ নিতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আক্ষেপ করে জানান, কোথাও আগুন লাগলে উৎসুক মানুষের কারণে অগ্নি নির্বাপণ কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। যেভাবে ভবনটিতে আগুন লেগেছিল, সময়মত পৌঁছতে না পারলে আর আগুন যদি ১৯ তলা পর্যন্ত পৌঁছে যেত, তাহলে অনেক মানুষ হতাহতের ঘটনা বিচিত্র ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জনকণ্ঠকে জানান, ভবনটিতে ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়সহ বেশ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে। ঘটনার সময় ভবনটিতে কয়েক শ’ মানুষ কর্মরত ছিলেন। আগুন লাগার খবরে তারা আতঙ্কে নিচে নেমে যান। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তবে চেষ্টা চলছে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
×