ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাকিদ হায়দার

প্রিয় রোকোনালী

প্রকাশিত: ১০:১৫, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

প্রিয় রোকোনালী

জনমের শতবর্ষ জন্ম সন,- পালন করবে পাড়ার সকলে, আনন্দ উচ্ছ্বাস সেই কথা শুনে মাতুল আমার হয়েছেন বিমর্ষ, এমনকি চক্ষুদ্বয় বন্ধ হয়ে সেদিন আমাকে ডাকলেন কাছে। কাছে গিয়ে দেখি চোখ দিয়ে ঝরছে অঝোরে তিতাসের পানি, মুছিয়ে দেবো কিনা ভাবছি যখন, তখন তিনি বজ্রকণ্ঠে বললেন, আজ রাতে টুঙ্গিপাড়া ভেঙ্গে দুই টুকরো করে দিতে হবে একটির নাম হবে আজম নগর, অপরটি তোর মাতুলের নামে। মধুমতী নদীটি’কে অচিরেই মাটি ফেলে বানাতে হবে আমার ভাষণের মাঠ, করতে হবে পানি শূন্য- যেন নৌকা, আর কোনদিন- ভরাট করতে হবে খাল বিল, টুঙ্গিপাড়া ভেঙ্গে দুই টুকরো করতে হবে আজকাল শনিবারে-রবি সোমে, অথবা যে কোন দিন, সাত পাঁচ ভেবে কিছ ুপরে বললেন টুঙ্গিপাড়ায় নাকি, গোপালগঞ্জে নাকি একটি ফুটবল খেলার বিশাল মাঠ আছে, সেখানে তোরা সবটাই ঘিরে বানিয়ে দিবি খুলনার চুকনগর, যে মাঠে আমরা বানিয়েছিলেম কবর খানা আমি চাই টুঙ্গিপাড়া গোপালগঞ্জের যত চুক্তিযোদ্ধা আজও বেঁচে আছে সব কয়টাকে নিয়ে গিয়ে... পুনরায় আসলেন মাতুল আমার। এমন সময় দরজায় কড়া নড়তেই মাতুলের চোখ ইশারায় খুলে দেখি, ওপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে দিলালপুরের সোবহান চাচা, তার সাথে হরিতলার নূরু কসাই-রাধানগরের ইসহাক মিয়া তিনজনেরই হাতে দেখি ত্রিবর্ণের পাকিস্তানী পতাকা আমার মাতুলকে কাছে পেয়ে দুজনই মুছালেন চোখ এবং জানালেন, যে করেই হোক আমরা এ পাড়াতে হতে দেব না টুঙ্গিপাড়ার সেই মাঝি মাল্লার নেতার জন্মশত বার্ষিকী- প্রয়োজনে পুড়িয়ে দেবো, যে ভাবে করেছি ছারখার টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ আপনারই মহান নির্দেশে ১৯৭১ সালে। মাতুল খুশী হয়েই বললেন, আর দেরি নয়- শুরু কর আজ রাত থেকে মাতুল আসার সেই রাতে, না ঘুমিয়ে বললেন- তুই ভাবিসনে কিছু শুধু আমাকে জানিয়ে দিবি সোবহান আর ইসহাক টুঙ্গিপাড়া ভেঙ্গে দুই টুকরো করেছে কিনা, কখনই জানাবি আমাকে এই আমি ঘুমিয়ে গেলাম। মাতুলের সেই ঘুম ভাঙেনি এখনো, ভাঙবে কিনা জানি না আমি ** মুজিববর্ষ ফারুক আহাম্মদ দশ জানুয়ারি, দুই হাজার বিশ খ্রিস্টাব্দ ক্ষণ গুনিয়ে, শুরু হবে মজিববর্ষ। উনিশশত বাহাত্তরের দশ জানুয়ারি, ঘরের ছেলে এসেছিল ফিরে, বীরবেশে; পাকিস্তানী স্বৈরশাসকের কারাগার ছাড়ি। সেই মাহেন্দ্র ক্ষণে পুরনো বিমান বন্দর মাতা ও মাতৃভূমির স্বাধীনতার নিশ্বাস ফেলে, স্বাধীনতার স্থপতিকে কোলে তুলে মায়ের আদরে করলো আলিঙ্গন। বাঙালি জাতির বন্ধ হৃৎপি- ফিরে পেল বাঁচার স্পন্দন।
×