ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড হাইভোল্টেজ দ্বৈরথ

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড হাইভোল্টেজ দ্বৈরথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে এক সময় ভারত-পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের সঙ্গে ‘হাইভোল্টেজ’ শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হতো। কিন্তু সময় বদলেছে। দলগুলোর মধ্যে শক্তির ব্যবধান এখন অনেক কম। বিশ্বকাপেই যেমন স্মরণকালের সেরা ফাইনালে ইংলিশদের প্রতিপক্ষ ছিল কিউইরা। নিউজিল্যান্ড আসলে এমন এক দল অনেকেই যাদের ‘অবধারিত’ সেরাদের কাতারে রাখতে চান না, তবে কখনই হিসেবের বাইরে রাখার উপায় নেই। সদ্য ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতে কেন উইলিয়ামসনের দল এবার প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়ায়। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে টগবগ করে ফুটছে টিম পেইন এ্যান্ড কোং। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে নিউজিল্যান্ডের রেটিং পয়েন্ট ১১২, অস্ট্রেলিয়া পাঁচে, কিন্তু তিন ও চারে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের সমান ১০২ রেটিং তাদেরও। সে অর্থে একেবারে পিঠেপিঠি অবস্থানে দু’দল। একদিকে স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়র্নার, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স অন্যদিকে উইলিয়ামসন, রস টেইলর, হেনরি নিকোলস, নেইল ওয়েগনার। জমবে লড়াই বেশ। পার্থে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল এগারোটায় ডে-নাইট টেস্ট দিয়ে শুরু তিন ম্যাচের সিরিজ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৩০ বছরের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রথম ডে-নাইট টেস্টে যে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে সেটি ভাল করেই জানেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়ামসন। কোন প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলেই মাঠে নামতে হচ্ছে সফরকারীদের। তার ওপর পার্থের তাপমাত্র এখন ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সদ্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে তারা কিছুটা ফুরফুরে মেজাকে থাকলেও সেটি ছিল নিজ মাঠের মন্থর ও চেনা পরিবেশে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ফ্লাড লাইটে গোলাপি বলের জন্য আরও বেশি পেস সহায়ক উইকেট থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সর্বশেষ দুই বছর আগে ডে-নাইট টেস্ট খেলেছে নিউজিল্যান্ড। অকল্যান্ডের ওই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। অপরদিকে এ্যাডিলেডে গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ডে-নাইট টেস্টের তরতাজা অভিজ্ঞতা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। টিম পেইনের দল সেখানে জিতেছিল ইনিংস ও ৪৮ রানে। উইলিয়ামসন বলেন, ‘ডে-নাইট টেস্টটি আকর্ষণীয় হবে। আমার মনে হয় এটি শুধু মানিয়ে নেয়ার বিষয়। এখানে শুধু এইটুকুই ব্যতিক্রম, অনুশীলন ছাড়াই আমরা এ ম্যাচে মাঠে নামছি। আর সঠিক অনুশীলন? এটির সঠিক পরিমাপ করাটা সবসময় কঠিন।’ নিউজিল্যান্ড দলের জন্য সুখবর হলো, অলরাউন্ডার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ইংল্যান্ড সিরিজে ইনজুরিতে পড়া ট্রেন্ট বোল্টও দলের সঙ্গী হয়েছেন, তবে তারা আজই মাঠে নামতে পারবেন কি না নিশ্চিত নয়। অস্ট্রেলিয়ার ভয়ঙ্কর পেস বোলিংত্রয়ী মিশেল স্টার্ক, জস হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স এই ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে কিউই ওপেনার টম লাথাম জানিয়েছেন, স্বাগতিকদের সেরা বোলিং মোকাবেলায় ভীত নয় তার দল, ‘আমি এটি বলব না যে তাদের দমন করব। কিন্তু এটি আমাদের জন্য হতে পারে একটি রোমঞ্চকর সুযোগ। আমরা ভাগ্যবান এই কারণে যে, এর আগেও তাদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই জানি তারা কি করতে চায়।’ আবহাওয়ার পর্বাভাস অনুযায়ী পার্থ টেস্টের প্রথম তিনদিন খুবই উষ্ণ থাকবে। তারপরও পার্থে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশই বহাল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে পেইনের দল অনেক বেশি ধারাবাহিকতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বকাপের পর ইংল্যান্ড সফরে ২-২এ সিরিজ ড্র করে ঐতিহ্যের এ্যাশেজ ট্রফি ধরে রাখে অসিরা। সদ্য পাকিস্তানকে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে ২-০ ব্যবধানে। এ্যাশেজে ব্যাট হাতে রানের বন্যা বইয়ে দেন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা স্টিভেন স্মিথ, পাকিস্তান সিরিজে ক্যারিয়ারসেরা অপরাজিত ৩৩৫ রানের ইনিংস খেলে জ্বলে উঠেছেন ডেভিড ওয়ার্নারও। পরিসংখ্যানেও এগিয়ে স্বাগতিকরা। ১৯৪৬ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মুখোমুখি ৫৭ টেস্টের ৩১টিতে জয় অস্ট্রেলিয়ার, নিউজিল্যান্ড ৮। ড্র হয় ১৮টি টেস্ট।
×