ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেসিহীন বার্সিলোনার কাছে হেরে ইন্টারের বিদায়

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

মেসিহীন বার্সিলোনার কাছে হেরে ইন্টারের বিদায়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লক্ষ্য পূরণ হল না ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের নকআউট রাউন্ডে খেলতে হলে শেষ গ্রুপ ম্যাচে জয় প্রয়োজন ছিল দলটির। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে জয় দূরে থাক হারতে হয়েছে এ্যান্টোনিও কন্টের দলকে। অর্থাৎ ঘরের মাঠ মিলানের সানসিরোতে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সিলোনার কাছে ২-১ গোলে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায়ঘণ্টা বেজেছে ইন্টারের। এর ফলে ২০১১-১২ মৌসুমের পর এই প্রথমবারের মতো গ্রুপপর্বের গ-ি পেরুতে ব্যর্থ হলো ইতালিয়ান জায়ান্টরা। এই হারে এ্যান্টোনিও কন্টের দল এখন খেলবে দ্বিতীয় সারির উয়েফা ইউরোপা লীগে। গ্রুপের আরেক ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্লাব স্লাভিয়া প্রাগেকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট কেটেছে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ছয় ম্যাচে চার জয় ও দুই ড্রয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছে বার্সা। ১০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা বরুশিয়া। আর ৭ পয়েন্ট নিয়ে ছিটকে পড়েছে ইন্টার। আগের রাউন্ডেই শেষ ষোলোতে খেলা নিশ্চিত হয়েছিল কাতালানদের। যে কারণে এই ম্যাচে দলের অধিনায়ক ও সেরা তারকা লিওনেল মেসিকে ছাড়াই খেলে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। কিন্তু এই সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি ইন্টার। যে কারণে তল্পিতল্পা গোছাতে হয়েছে কন্টের শিষ্যদের। মেসির অনুপস্থিতিতে ম্যাচে বার্সার আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দেন ফরাসী ফরোয়ার্ড এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান ও তরুণ স্প্যানিশ কার্লোস পেরেজ। যে কারণে উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ ছিলেন বদলি বেঞ্চে। পরের রাউন্ডে যেতে জয়ের বিকল্প ছিল না ইন্টারের। যে কারণে ম্যাচের শুরু থেকেই বার্সার দুর্গে চড়াও হয়ে খেলতে থাকে তারা। কিন্তু উপর্যুপরি গোল মিসের মহড়া করায় শেষ পর্যন্ত স্বপ্নপূরণ হয়নি তাদের। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে ডানিলো ডি আমব্রোসিও ইন্টারের হয়ে অল্পের জন্য গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। পরের মিনিটেই রোমেলু লুকাকুর গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে গেলে হতাশ হতে হয় স্বাগতিকদের। খেলার ধারার বিপরীতে ম্যাচের ২৩ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় সফরকারী বার্সিলোনা। চিলিয়ান মিডফিল্ডার আর্টুরো ভিডালের পাস থেকে ২১ বছর বয়সী পেরেজ লক্ষ্যভেদ করেন। বিরতির ঠিক আগে (৪৪ মিনিট) বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাকু গোল করে ইন্টারকে সমতায় ফেরান। ম্যাচে ইনজুরির কারণে অনুপস্থিত স্টিফানো সেনসি, নিকোলো বারেলা, এ্যালেক্সি সানচেজ ও রবার্তো গাগলিয়ারডিনির অনুপস্থিতি অনুভব করে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। ম্যাচে জয় পেতে হন্যে হয়ে আক্রমণ শানাতে থাকা ইন্টার উল্টো ৮৬ মিনিটে আরেক গোল হজম করে। এবার বার্সার হয়ে গোলটি করেন আনসু ফাতি। এর মধ্য দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গোল করে অনন্য নজির গড়েছেন গিনি বংশোদ্ভূত স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকার। মাত্র ১৭ বছর ৪০ দিন বয়সেই এমন মাইলফলকে পা রেখেছেন ফাতি। এই গোল হজমের আগে ৮০ মিনিটে ইন্টারের আরেকটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল করা হয়। মার্টিনেজ গোল করলেও অফসাইডে ছিলেন লুকাকু। মূলত ইন্টারের দু’টি গোল বাতিল হয়ে যাওয়াতেই তাদের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছে। সদ্যই ১৭ বছর পেরোনো ফাতি বদলি বেঞ্চ থেকে মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যেই ইতিহাস গড়া গোল করেন। নিজের তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ম্যাচে এটা ফাতির প্রথম গোল। গোলটি করেই রেকর্ডবুকে নিজের নাম লিখেছেন। রেকর্ড গড়তে ফাতি পেছনে ফেলেছেন অলিম্পিয়াকোসের সাবেক স্ট্রাইকার পিটার ওফোরি-কোয়াইকে। ঘানার এই তারকা তার ক্লাবের হয়ে ১৯৯৭ সালে ১৭ বছর ১৯৪ দিনে গোল করেছিলেন। ম্যাচ শেষে বার্সিলোনা কোচ আর্নেস্টে ভালভার্ডে বলেন, আমাদের খেলায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা পদ্ধতিগত অনেক পরিবর্তন এনেছি। শুরুতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। তবে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। সময় যত গড়িয়েছে আমরা ততই নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে নিয়েছি। গোলদাতা দু’জনই তরুণ, এর মধ্যে আনসুর বয়স অনেক কম। তাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। অন্যদের মতোই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগটা আমরাই জিততে চাই। অন্যদিকে হতাশ ইন্টার কোচ এ্যান্টোনিও কন্টে বলেন, আনসু ফাতির গোল আমাকে হতাশ করেছে। এই গোলটি আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। তবে খেলোয়াড়রা শতভাগ উজাড় করে খেলেছে। তাদের খেলায় আমি সন্তুষ্ট।
×