ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

ডিজিটাল বাংলাদেশের ২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রা

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

  ডিজিটাল বাংলাদেশের ২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রা

লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩ : ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসকে সামনে রেখে আমরা ২৩ সালে এর লক্ষ্যমাত্রা কি হতে পারে সেটি নিয়ে আলোচনা করছি। বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রণয়ন করার কাজ চলাকালীন আমাকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অতি জরুরী কিছু এজেন্ডা শনাক্ত করার জন্য বলা হয়েছিল। ধন্যবাদ মাননীয় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ভাইকে। আমি ২৩ সালে সম্পন্ন হতে পারে এমন যে কটি বিষয়ের কথা বলেছিলাম সেগুলোর অগ্রাধিকারপ্রাপ্তগুলো হচ্ছে ১) বাংলাদেশ ২৩ সাল নাগাদ ৭ বিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল পণ্য রফতানি করবে। ডিজিটাল পণ্য বলতে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও সেবা খাতকে বোঝাবে। ২) ২৩ সালের মাঝে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ উৎক্ষেপণ করবে। ৩) বাংলাদেশ ২৩ সালের মাঝে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হবে এবং ৪) ২৩ সালের মাঝে ৫জি চালু করা হবে। ইশতেহারে বিষয়গুলো যুক্ত হয় এবং ১৯ সালে দায়িত্ব পাওয়া নতুন সরকার উল্লিখিত এই বিষয়গুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। আমরা পর্যালোচনা করে দেখব বিষয়গুলোর অগ্রগতি এখন পর্যন্ত কতটা। স্মরণ করিয়ে দিতে পারি ২৩ সালটি হচ্ছে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বছর এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের মাত্র পরের দুই বছর। সঙ্গতকারণেই আমরা বলতে পারি যে, এই সময়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্তরে অবস্থান করব। আমি মনে করি ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী ঘোষণা করে প্রাথমিকভাবে যেসব লক্ষ্য অর্জনের প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলাম তা অর্জন করতে পারব। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে কেবল ২১ সালের কর্মসূচী বাস্তবায়ন নয় বরং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা। ২১ সালের মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে না। আমরা বরং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জ্ঞানভিত্তিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সময়কালকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ২.০ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। প্রথমেই বলে রাখি যে, ২৩ সালে জাতিগতভাবে সার্বিক অগ্রগতির পথে কতটা পথ চলবে তার বিবরণ এখানে তুলে ধরা দুরূহ হবে। তাই আমরা দেশটির ডিজিটাল রূপান্তরের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলব। আলোচিত প্রেক্ষিতের একদম সহজ স্বাভাবিক ও সরল লক্ষ্যমাত্রাটি বস্তুত সম্ভাব্য প্রযুক্তি পরিবর্তনের ব্যাপকতাকে বিবেচনায় তেমনভাবে নেয়া হয়নি। বরং ভাবা হচ্ছে যে, বিদ্যমান প্রযুক্তিকে ভিত্তি করে ২৩ সালে আমরা কোথায় পৌঁছাতে পারি। এটি নির্ধারণ করতে গিয়ে কোন উচ্চাভিলাষ বা অতি কল্পনা মাথায় রাখা হয়নি। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২০ সালের মুজিব বর্ষ, ২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ করা হবে। আপাতত এর বাইরে কল্পনাও করতে পারছি না। তবে এটি আমরা উপলব্ধি করি যে বিশ্বের অন্য দেশের জন্য যাই হোক আমাদের লক্ষ্যমাত্রা একটু ভিন্ন হতে বাধ্য। ৪১ সালে আমরা আমাদের স্বাধীনতার ৭০ বছর পার করব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুব সঙ্গতকারণেই এই সময়টাকে উন্নত-সমৃদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। ৭১ সাল আমাদের স্বাধীনতার শতবর্ষপূর্তি। ২১০০ সালে আমরা বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব। এই সময়ের পরিধিতে ২৩ সালের জন্য ঘোষিত বিষয়গুলোর সঙ্গে সময় সময় নতুন কিছু সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে। সময় সময় কিছু কিছু কথা সম্ভবত কাজের মাত্রাটিকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে পারছে না। কারণ সামনের সময়টাকে বলতে হবে একদিকে ভয়ঙ্কর এবং অকল্পনীয়। এখন আমরা ভাবতেই পারি না ৩০, ৪১ সালের দুনিয়ার কথা। ৭১ বা ২১০০ সালের কথা তো ভাবাই অবান্তর। আপাতত এই রূপান্তরের মহাসড়কটির নাম ৫জি মোবাইল প্রযুক্তি ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। আমরাই মোবাইল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় বিপ্লবের সূচনা করতে চাই ২০২১-২৩ সালের মাঝে ফাইভ-জি চালু করে। ১৯ সালের নবেম্বরে যে পথনকশা আমরা তৈরি করতে পেরেছি তাতে ২১ সালে ৫জি চালু হবার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। একদম প্রথম কাজটি হলো ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৫জির খসড়া গাইডলাইন প্রণয়ন। পথনকশার পরের লক্ষ্য হলো দ্বিতীয় প্রান্তিকে মন্ত্রণালয় কর্তৃক গাইডলাইন অনুমোদন। এরপর ২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে তরঙ্গ বরাদ্দ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্য রেখে ২০ সালের শেষ প্রান্তিকে ৫জি উদ্বোধন। ২১ সালে বিভাগীয় শহরে ৫জির সম্প্রসারণ। ২২ সালের মাঝে অর্ধেক জেলা শহরে ৫জির প্রসার। ২৩ সালের মাঝে সকল জেলাশহরে ৫জি প্রচলন। ২৬ সালের মাঝে উপজেলা ও সকল সড়ক মহাসড়কে ৫জি প্রচলন। ২০১৯ সালের শেষ প্রান্তে বিটিআরসি এই পথনকশা প্রবর্তন করে। এই পথনকশা দেখে আমার নিজের মনে হয়েছে যে ৫জিকেও ৩জি/৪জির মতোই কেবল মোবাইল প্রযুক্তি বিবেচনা করে এই পথনকশা তৈরি করা হয়েছে। এর পরিবর্তন হবে-কারণ ৫জির চাহিদা কথা বলা বা ফেসবুক-ইউটিউব ব্রাউজ করার হাতিয়ার হিসেবে না দেখে চতুর্থ বা পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের মহাসড়ক হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। আমরা যেন ভুলে না যাই যে এটি প্রথম খসড়া। পথনকশা চূড়ান্ত করার সময়েই এর আমূল পরিবর্তন হবে। দিনে দিনে এর নবায়ন হবে এবং বাস্তবায়ন স্তরে হয়তো এর টাইমলাইনে আরও পরিবর্তন হতে পারে। তবে ৫জি চালুর পাশাপাশি এর সঙ্গে সংযুক্ত বা সম্পৃক্ত প্রযুক্তিসমূহের বিকাশের বিষয়টি খুবই জরুরী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, বিগ ডাটা, ব্লক চেইন, আইওটিসহ ভবিষ্যত প্রযুক্তির কোনটাতেই আমরা তেমনভাবে এগিয়ে নেই। আমি যেটুকু বুঝি, সেটি হচ্ছে ৫জি-এর সঙ্গে যুক্ত প্রযুক্তিগুলোর সঙ্গে আমাদের পরিচয়ও তেমনভাবে ঘটেনি। এটিও আমি বহুবার বলেছি যে ৫জি কেবল কথা বলার বা ফেসবুক চালানোর প্রযুক্তি নয়। এটি যেহেতু শিল্প বিপ্লবের হাতিয়ার সেহেতু শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্য-কৃষি-স্বাস্থ্য ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করা অপরিহার্য। এই কাজটির জন্য সরকারের উদ্যোগের চাইতে অনেক বেশি প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট খাতের নিজেদের সচেতনতা। শিল্প খাত যদি তাদের উৎপাদন ব্যবস্থাকে ৫জির উপযোগী না করে তবে আবারও যে তিমিরে থাকার আমরা সেই তিমিরেই থেকে যাব। ব্যবসা-বাণিজ্য খাত যদি উপলব্ধি না করে যে প্রচলিত ব্যবসার ধারাটি কেবল ডিজিটাল হচ্ছে না ৫জিনির্ভর হচ্ছে এবং ৫জির জন্য প্রস্তুতি নেয়া ছাড়া টিকে থাকা যাবে না। অনেকেই বিস্মিত হতে পারেন যে কৃষি-স্বাস্থ্য খাতের জন্যও ৫জি এক অসাধারণ সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। কৃষিতে আইওটির ব্যবহার বিপ্লব এনে দিতে পারে। ৫জি স্বাস্থ্য সেবায় এমন সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। দুর্গম-প্রত্যন্ত-গ্রামাঞ্চলে ৫জি কেবল বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসা সেবাই দিতে পারে না নতুন এমন সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে যা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না। অন্যদিকে ৪১ সালের মাঝেই যখন কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কম্পিউটিং এর মূল ধারায় দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করবে তখন ডিজিটালসহ সকল স্তরের গবেষণা ও উদ্ভাবন এমন এক স্তরে পৌঁছাবে যা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না। কোন সন্দেহ নেই সেইসব প্রযুক্তি আমাদের জীবনধারায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ২১ সালের মাঝে সরকারের অবশিষ্ট ডিজিটাল রূপান্তর সম্পূর্ণ করতে হবে। এটুআই-এর মতে, ইতোমধ্যে সরকারের ২৭৬০টি সেবাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাঝে ২৩ সালের মাঝে সরকারকে তার সকল সেবা ডিজিটাল করতে হবে এবং জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। আমরা জানি বর্তমান হিসেবেই চিহ্নিত ১৯৬০টি সেবার ডিজিটাল রূপান্তর বাকি আছে। এই সেবাসমূহের সবগুলো ডিজিটাল করতে হবে। এই সেবাগুলোর মাঝে ৯০০ সেবা আছে যা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো উচিত। সরকারের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এবং ডিজিটাল পোস্ট অফিসগুলোকে এই সেবা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এসবের বাইরে জনগণ যাতে সরাসরি এসব সেবা পেতে পারে এবং বেসরকারী উদ্যোগেও সেবাকেন্দ্র স্থাপন করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ও ডিজিটাল ডাক কেন্দ্রগুলো যে অবস্থায় আছে তার তুলনায় এগুলোকে ডিজিটাল যুগের জন্য সক্ষম করতে হবে। একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে এসব সেবা কেন্দ্রে ৫জি সংযুক্তি বা দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছানো। ২৩ সালের মাঝে শিক্ষার সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর করতে হবে। শিক্ষার সকল কনটেন্ট ডিজিটাল করতে হবে, ডিজিটাল ক্লাসরুম, ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা ছাড়াও প্রাথমিক স্তরসহ সকল স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রাথমিক স্তরসহ সকল স্তরে প্রোগ্রামিং ও তথ্যপ্রযুক্তি অবশ্যপাঠ্য করতে হবে। আজকের অবস্থাটি মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। বস্তুত এই খাতে ১১ বছরে যে অগ্রগতি হবার কথা তা ততটা হয়নি। কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়ে থাকলেও একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত ডিজিটাল মানবসম্পদ তৈরির প্রক্রিয়াটি আমরা তেমনভাবে চালু করতে পারিনি। ২৩ সালের মাঝে আমাদের যেমন করে শিশু শ্রেণী থেকে ডিজিটাল শিক্ষা দিতে হবে তেমনি বিদ্যমান শিক্ষাকে ৫জি যুগের উপযোগী করতে হবে। আমরা ৫জির সঙ্গে যুক্ত যেসব প্রযুক্তিকে চিহ্নিত করেছি সেগুলোর প্রতি প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষা স্তরের তেমন নজর আছে সেটি দৃশ্যমান নয়। ২৩ সালের মাঝে আর্থিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ডিজিটাল করতে হবে। সেই সময়ে সৃজনশীল-জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল অর্থনীতির প্রাথমিক বিকাশ ঘটাতে হবে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং উচ্চ শিক্ষার পাঠক্রম-পাঠদানসহ পুরো শিক্ষাব্যবস্থাটিকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করতে হবে। ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ রফতানি করার ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে হবে। ভূমিব্যবস্থাকে করতে হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল। স্বাস্থ্য সেবাকে ডিজিটাল করতে হবে। উৎপাদন ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগ করে এর দক্ষতা ও গুণগতমান বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ডিজিটাল দক্ষতা ও সেবা প্রদানের সক্ষমতাসহ ডিজিটাল পণ্য ও শিল্প পণ্য রফতানির বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। মেধাসম্পদ সংরক্ষণ, মেধাশ্রম আইন প্রণয়ন ও মেধাভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি বাড়ি ও প্রতিটি মানুষকে সংযুক্তির আওতায় আনতে হবে। দ্বীপ, ছিটমহল, হাওড়, পাহাড় ও পার্বত্য অঞ্চলসহ সর্বত্র সকল মানুষের জন্য ডিজিটাল সংযোগ প্রদান করতে হবে। টেলিকম আইন, আইএলটিডিএস নীতিমালাসহ সকল নীতিমালা আপডেট ও প্রয়োজনীয় আইন, নীতিমালা গাইডলাইন প্রণয়ন করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির সফটওয়্যার, সেবা ও ডিজিটাল যন্ত্রের রফতানি ৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হবে। দেশে ডিজিটাল পণ্যসহ সকল উচ্চপ্রযুক্তির পণ্য উৎপাদনের জন্য সকল সহায়ক ব্যবস্থা নিতে হবে। এখনকার অবস্থা অনুসারে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ নির্মাণ ও উৎক্ষেপণ করার প্রক্রিয়াটি অনেকটাই এগিয়েছে। আমরা এখন নিশ্চিত করতে পারছি যে কি ধরনের স্যাটেলাইট কোন দেশ নির্মাণ করবে বা উৎক্ষেপণ করবে। বর্তমানে যে পথনকশা তৈরি হয়েছে তাতে ২৩ সালের মাঝেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ২ মহাকাশে থাকবেই। আমরা সাবমেরিন ক্যাবল ৩ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছি। বস্তুত সি-মি-উই ৬ এ যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। আমরা এরই মাঝে এজন্য সম্মতি প্রদান করেছি। ১৯ এর ডিসেম্বরে কনসোর্টিয়ামের চুক্তি হয়ে গেছে ২০ সালের মার্চে এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে এবং মার্চ ২৩ সময়কালে এটি চালু হবে। ১৯ সালে মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের রফতানির বাস্তবতায় ২৩ সালে ৭ বিলিয়ন ডলারের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে। তবে সফটওয্যার, তথ্য সেবা এবং ডিজিটাল ডিভাইস রফতানির সামগ্রিক বিষয়াদি বিবেচনা করলে সরকারের প্রদত্ত বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করেই ৭ বিলিয়ন এর চাইতে বেশি রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে। এসব ইশতেহার ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার বাইরে আরও কিছু সাধারণ বিষয়ে আমাদের নজর রাখতে হবে। একটি পরিচিতি নাম্বারের আওতায় প্রতিটি নাগরিকের পরিচিতি নিশ্চিত করাসহ সরকারের সকল সেবা জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। সামরিক বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সকলকে ডিজিটাল সক্ষমতা প্রদান করতে হবে এবং জাতীয় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও ডিজিটাল যুদ্ধ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। নগর ও গ্রামগুলোকে ডিজিটাল নগর ও ডিজিটাল গ্রামে পরিণত করতে হবে। এমনকি দ্বীপ ও হাওড়কেও ডিজিটাল করতে হবে। কৃষি-শিল্প, স্বাস্থ্যসহ জীবনের সকল খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল শিল্প-বাণিজ্য গড়ে তোলার জন্য সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে। ডিজিটাল-কমার্স নীতিমালা, জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা ১৮ এবং টেলিকম নীতিমালা ১৮ নবায়ন ও নবায়িত নীতিমালাসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব কাজ সম্পন্ন করতে অবশ্যই ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপরই নির্ভর করতে হবে। অন্যদিকে একবার ভাবুন তো এই কাজগুলো শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ কি করতে পারবেন? আসুন তাই শেখ হাসিনার হাতটাকেই আরও শক্তিশালী করি। জয় হোক শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের। একই সঙ্গে আসুন ভাবতে থাকি ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী ২.০ কি রূপে আসবে আমাদের সামনে। ঢাকা, সর্বশেষ আপডেট ৬ ডিসেম্বর ১৯ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার-এর জনক
×