ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পৃথিবীর ব্যস্ততম মানুষ ছিলাম ॥ সৌরভ

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

 পৃথিবীর ব্যস্ততম মানুষ ছিলাম ॥ সৌরভ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এতদিনে বোধহয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী। দিন-রাতের টেস্ট শুরুর আগে থেকেই প্রবল ব্যস্ত ছিলেন তিনি। ইডেন টেস্ট সফল হতেই প্রশান্তি খেলা করছিল তার চোখ-মুখে। ম্যাচ শেষের পর মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি মনে করি পৃথিবীর ব্যস্ততম মানুষ ছিলাম। এতদিন দম ফেলারও ফুরসত পাইনি। ইডেনে খেলা দেখার জন্য প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। এতেই আমি খুশি। খেলা তৃতীয়দিনে শেষ হয়ে গেল ঠিকই, তবে চতুর্থ ও পঞ্চমদিনের টিকেটও বিক্রি হয়ে গিয়েছিল আগেই। ইডেন টেস্ট সুপার-ডুপার হিট। এই ইডেনেই ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়াকে মহাকাব্যিক টেস্টে হারায় ভারত। সেই সময়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে সৌরভ বলেন, ২০০১ সালের ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্টে টানা পাঁচদিন ইডেন ভর্তি ছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শুধু কলকাতা নয়, মুম্বাই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, যেখানেই ভারত খেলবে, সেখানেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলা দেখার জন্য মানুষ আসবেন। আর কেনই বা আসবেন না। এই দলে রয়েছে বিরাট কোহলি, অজিঙ্ক রাহানে, শামি, চেতেশ্বর পুজারার মতো ক্রিকেটার। খেলোয়াড়রাই আসল। তারা খেলে বলেই স্পোর্টস জনপ্রিয় হয়। প্রশাসকরা খেলোয়াড়দের কাজটা সহজ করে দিতে পারেন। সৌরভের পাশে দাঁড়ানো ভিভিএস লক্ষ্ণ ও সঞ্জয় বাঙ্গার তখন সম্মতিসূচক মাথা নাড়ছেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি কলকাতার দর্শকদের প্রশংসা করে যান। তিনি বলেন, প্রথমদিনের থেকেও শনিবার বেশি মানুষ খেলা দেখতে এসেছিলেন বলে মনে হয়েছিল আমার। আর রবিবার ছুটির দিনও অনেক মানুষ খেলা দেখতে এসেছেন। ওরা জানতেন আমরা যে কোন সময় ম্যাচ জিততে পারি। তবুও খেলা দেখার জন্য মাঠে এসেছেন। মাঠে দর্শকদের টেনে আনতে পেরেছেন সৌরভ। এখানেই তার সাফল্য। সীমিত ওভারের দাপটে টেস্ট ক্রিকেট জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। দর্শক আসছে না মাঠে। সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচের ওপরে জোর দেন। লক্ষ্মণও এদিন বলেন, দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য কোহলিকে সৌরভের জোর করতে হয়নি। সৌরভ বলেন, কোহলিকে বলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দিন-রাতের টেস্ট খেলতে রাজি হয়ে যায়। ইডেন টেস্টের আগে থেকে গোলাপি বল নিয়ে প্রবল চর্চা শুরু হয়েছিল। সৌরভ বলেন, প্রথমদিকে গোলাপি বল নিয়ে আমারও একটু চিন্তা হচ্ছিল। কিন্তু খেলা শুরু হতে দেখলাম, লাল বলের সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য নেই। লাল বলের থেকে গোলাপি বলের দৃশ্যমানতা বেশি। গোলাপি বল রিভার্স সুইং কম করে। এটা সবে শুরু। টেস্ট ক্রিকেট জনপ্রিয় করার জন্য একটা পদক্ষেপের দরকার ছিল। সেই উদ্যোগটাই সৌরভ নিয়েছেন ইডেনে। এ সময় বাঙ্গার পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে, ‘দাদা, টেস্টের প্রথমদিন সমস্ত খেলার ক্রীড়াবিদদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলে কেন? সৌরভ এক মুহূর্ত না ভেবে বলেন, এ্যাথলেটদের প্রতি শ্রদ্ধার জন্যই ওদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, খেলোয়াড়রাই খেলাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। চিরকাল কেউ খেলবে না। একদিন সবাইকে সরে যেতে হয়। কিন্তু তার যে অবদান, সেটাকে শ্রদ্ধা করা উচিত। মেরি কমকে দেখ। ছ’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। খেলার প্রতি ভালবাসা, হার না মানা মনোভাব ক্রিকেটার-অধিনায়ক হিসেবে সাফল্য এনে দিয়েছিল প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে।
×