ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসছে

প্রকাশিত: ১০:৪০, ২৭ অক্টোবর ২০১৯

 দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে  আসছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ওপর অব্যাহত থাকা বৃষ্টিপাত আজ থেকে কমে আসবে। স্বাভাবিক হয়ে আসবে আবহাওয়া পরিস্থিতি। রোদের দেখাও মিলবে আজ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চারদিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কেটে যাচ্ছে আজ থেকে। শনিবার সারাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বৃষ্টিপাত হয়েছে কম। আজ বৃষ্টিপাত একেবারে কমে আসবে। তবে এদিন চট্টগ্রাম এবং বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাত হতে পারে। সোমবার থেকে সারাদেশে আবহাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে আকাশে বিচ্ছিন্নভাবে মেঘ থাকবে বলে তারা জানিয়েছে। গত বুধবার থেকে লঘুচাপের প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। দেশে কোন অঞ্চলে অঞ্চলে তা একনাগাড়ে বইছে। রাজধানী ঢাকায় ভারী বৃষ্টিপাত না হলেও এই কয়দিনের সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আজ রাজধানীতে বৃষ্টিপাত থাকবে না। দেশে অন্যত্রও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ইতোমধ্যে শহরের শীত শীত ভাব বিরাজ করছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কমে গিয়ে বাতাসে শীতল অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আজ রবিবার থেকে তাপমাত্রা আবার বেড়ে যাবে। ফলে শীত ভাব দু’একদিনের মধ্যে কেটে যাবে। তারা জানায়, শীতের জন্য এক মাসের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে শীত নামবে। মধ্য ডিসেম্বরে থেকে তা জাকিয়ে বসতে পারে। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দেশের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। জৈষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, কয়দিন ধরে চলা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি আজ থেকে কেটে যেতে পারে। তিনি জানান, আজ রবিবার চট্টগ্রাম এবং বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশের অন্যত্র বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। তবে সোমবার থেকে আবহাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলেও বিচ্ছিন্নভাবে আকাশ মেঘলা থাকবে। তিনি জানান, আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আজ রবিবার থেকে সূর্যের দেখা মিলতে পারে। বেড়ে যাবে তাপমাত্রা। ফলে প্রকৃতিতে যে শীত শীত ভাব রয়েছে তাও কেটে যাবে। তবে সাগরে আরও একাধিক লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রভাবে নবেম্বরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের আগমনী হাওয়া প্রকৃতিতে বইতে শুরু করবে। নবেম্বর-ডিসেম্বরের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়, নবেম্বরে দিন-রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। বঙ্গোপসাগরে দুয়েকটি নিম্নচাপও সৃষ্টি হবে, যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ডিসেম্বরের শেষার্ধে উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি ধরনের (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে ইতোমধ্যে বাজারে শতিকালীন সবজির ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শীত না আসলেও শীতের সবজি বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে উঠেছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় শীতের সবজির দাম বেড়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির কালে শীতের সবজি উৎপাদনের বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে চাষীরা। তারা জানিয়েছে, এই মুহূর্তে যারা বোরো ধান রোপণ করছে বৃষ্টিতে কেবল তাদের উপকার হবে। বাকি ফসলের জন্য এই বৃষ্টি খুব একটা কল্যাণ বয়ে আনবে না। তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ একেবারেই কমে আসবে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উড়িষ্যা এবং তার আশপাশে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে দেশের উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। এই অবস্থায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা খুলনা বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের উত্তর পূর্বাংশে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এদিকে দেশের নদী বন্দরগুলোর সতর্কতায় বলা হয়েছে খুলনা, ঢাকা, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে অস্থয়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
×