ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তা বিপদসীমার ২৫ সে.মি.ওপরে

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

তিস্তা বিপদসীমার ২৫ সে.মি.ওপরে

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা হতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। হু-হু করে পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা অববাহিকার বসতবাড়ি ও আবাদী জমি প্লাবিত হয়। ফলে পরিবারগুলো বসতঘর ছেড়ে উঁচুস্থানে আশ্রয় নেয়। উজানের ঢলে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীতে পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। মঙ্গলবার সকাল হতে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও সন্ধ্যা ৬টার পর হতে বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হয়। বুধবার সকাল হতে উজানের ঢল বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে চলে যায়। ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর, টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দোলাপাড়া, তিস্তাবাজার, চরখড়িবাড়ি, পূর্বখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী ইউনিয়নের বানপাড়া ছোটখাতা ও ঝুনাগাছচাঁপানী ইউনিয়নের সোনাখুলী, ফরেস্টের চর গ্রামগুলোর বসতঘরে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। বসতঘরগুলো হাঁটুসমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেকে তিস্তা নদীর ডানতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে বলে এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা জানায়। সূত্রমতে, এলাকায় ৫ হাজার পরিবার তিস্তার হঠাৎ ঢলের পানির বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামের পরিবারের বসতঘরে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, তার এলাকার দোলাপাড়া, তিস্তাবাজার, চরখড়িবাড়ি, পূর্বখড়িবাড়ি গ্রামগুলোর বাড়িঘর হাঁটু সমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ছোটখাতা ও বানপাড়া গ্রামের মানুষজন ডানতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট। এলাকা থেকে পরিবারগুলোকে উঁচুস্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। তবে বুধবার বিকেলে উজানের ঢল কমে এলে নদীর পানি বিপদসীমার তিন সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। লালমনিরহাটে ভেঙ্গে গেছে সড়ক নিজস্ব সংবাদদাতা লালমনিরহাট থেকে জানান, ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দেয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার সকালে হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২৫ সেঃমিঃ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সকাল ৯টায় তা কমে ১৮ সেঃ মিঃ দাঁড়িয়েছে। তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাতীবান্ধার ধূবনিতে ৫০ মিটার রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। ফলে তিস্তা নদীর পানি লোকালয়ে এসে পড়েছে। এছাড়াও জেলার ৪টি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নিম্নœাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না, গড্ডিমারী, সিংগীমারী, ডাউয়াবাড়ি, পাটিকাপাড়া। এছাড়াও আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, তুষভা-ার ও কাকিনাসহ জেলার ১১ ইউনিয়নের নিম্নœাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন আগাম শীতকালীন সবজি ও ফসলি জমি। রোপা আমন ক্ষেত এবং পুকুর জলাশয় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
×