ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কারের অভাব

মহেশখালীতে ৩৩ সাইক্লোন শেল্টার ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

মহেশখালীতে ৩৩ সাইক্লোন শেল্টার ঝুঁকিপূর্ণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মহেশখালী, কক্সবাজার, ২৩ এপ্রিল ॥ ’৯১ এর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে দেশের সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারায় কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় দ্বীপ মহেশখালীতে। বর্তমানে মহেশখালী দ্বীপ রক্ষার বেড়িবাঁধ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। অনেক স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় দুর্গত মানুষের জরুরী আশ্রয়ণের জন্য নির্মাণ হওয়া সাইক্লোন শেল্টারগুলো দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বসবাস অনুপযোগী ও চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে দ্বীপটিতে প্রায় ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অরক্ষিত আছে। সূত্র জানায়, মহেশখালীতে মোট সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে ৮৪টি, যা এখানকার ঝুঁকিপূর্ণ অধিবাসীর তুলনায় নগণ্য। অপরদিকে ৮৪টি সাইক্লোন শেল্টারের মধ্যে ৩৩টি শেল্টার সংস্কারের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে মহেশখালীর উপকূলীয় এলাকায় সাধারণ লোকজনকে নিয়মিত আতঙ্কে থাকতে হয়। এ আতঙ্ক যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। সরজমিনে জানা যায়, ধলঘাট ইউনিয়নটি বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থান হওয়ায় পূর্ণিমার জোয়ার হলেই লোকালয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ে। আর এই অবস্থায় কোন বড় ধরনের ঝড় উপকূলে আঘাত হানলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বাড়তে পারে বলে অভিজ্ঞদের অভিমত। সাইক্লোন শেল্টার আর বেড়িবাঁধগুলো দায়সারাভাবে অরক্ষিত হয়ে পড়ায় অনেক স্থানে অবৈধ দখলেও চলে গেছে। এগুলো পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের তৎপরতা নেই। দূর্যোগকালে ব্যবহারের জন্য গড়া সাইক্লোন শেল্টারগুলোর অধিকাংশ এখন ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করছে স্থানীয় জনগণ। সাইক্লোন শেল্টারের চাহিদাপূর্ণ এলাকার মধ্যে সরইতলা, নতুন ঘোনা, সাপমারার ডেইল ও রাজাখালী এলাকায় বেড়িবাঁধের অবস্থা করুণ বলে জানান ধলঘাটর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান। তিনি জানান, এখানে আরও কমপক্ষে চারটি সাইক্লোন শেল্টার ও সাপমারার ডেইল ঘাটে একটি জেটি নির্মাণ প্রয়োজন। অপরদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্রের অভিযোগ বিগত সময়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বড় ধরনের লুটপাটের কারণে এখানে সরকারী কোটি কোটি টাকা বরাদ্দের পরেও একটি টেকসই বাঁধ গড়ে উঠছে না। অপরদিকে কুতুবজোম ইউনিয়নে এক কিলোমিটারের বেশি বেড়িবাঁধ অরক্ষিত অবস্থায় আছে। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে শাপলাপুর, হোয়ানক, বড় মহেশখালী, কালারমার ছড়া ও মাতারবাড়ির দ্বীপ রক্ষাবাঁধ। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, মূলত যথাযথ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেড়িবাঁধের এই ক্ষতিটা হয়েছে। চেয়ারম্যানরা আগামী বর্ষার আগে জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ সংস্কারের দাবি জানান।
×