ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত রেজওয়ান, শঙ্কামুক্ত নন

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ৩১ মার্চ ২০১৯

লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত রেজওয়ান, শঙ্কামুক্ত নন

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে লাশের সমস্যা বেড়েছে। শনিবার সকালে ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন আবু হেনা মোস্তফা কামাল (৪১) নামে ট্রাভেলস এজেন্সির এক কর্মকর্তা মারা গেছেন। এ নিয়ে এই ভয়াবহ অগ্নিকা-ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়াল। এদিকে ওই ভবন থেকে আতঙ্কে লাফিয়ে পড়ে কেউ মারা গেছেন, কেউ গুরুতর আহত হয়েছেন। কেউবা দগ্ধ হয়েছেন। ধোঁয়াচ্ছন্ন ভবনে আটকেপড়া অনেকে আহত হয়েছেন। এমন অবস্থায় হাসপাতালের বেডে কষ্ট ও যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। সূত্র জানায়, এখনও পর্যন্ত ৫৮ জন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এদের বেশিরভাগই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ জানান, শনিবার সকালে ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন আবু হেনা মোস্তফা কামাল নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি এফআর টাওয়ারের ১১ তলার ট্রাভেল এজেন্সি হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেসের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ছিলেন। তার বাবার নাম আবদুল মতিন। তিনি ভাষানটেক কচুক্ষেতের পুরান বাজারের ২৩৩ নম্বর বাড়িতে সপরিবারে থাকতেন। এ নিয়ে এফআর টাওয়ারের মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়াল। বনানী এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের সময় ২১তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত রেজওয়ান শঙ্কামুক্ত নন। তিনি ঢাকা মেডিক্যালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার সকালে আইসিইউর বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডাঃ মোজাফফর হোসেন এ তথ্য জানিয়ে বলেন, আহত রেজওয়ান ঘটনার দিন বিকেলে প্রথমে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে চিকিৎসকরা তাকে জেনারেল আইসিইউতে রেফার করেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। রেজওয়ানের পায়ে ও কাঁধে ফ্র্যাকচার রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত ও বার্ন রয়েছে। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা চলছে। রেজওয়ানের বাবা মনির হোসেন মিন্টু। বাড়ি বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায়। চার ভাইয়ের মধ্যে বড় রেজওয়ান। তিনি স্ত্রী শিথিল মনিকে নিয়ে মিরপুর ১ নম্বর উত্তর বিশিল এলাকায় থাকতেন। রেজওয়ানের বাবা মনির হোসেন জানান, এফআর টাওয়ারের ২১তলায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন রেজওয়ান। অগ্নিকাণ্ডের সময় জীবন বাঁচাতে ওই ভবনের ২১তলা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। শনিবার অর্থোপেডিক্সের বিভাগীয় প্রধান রেজওয়ানকে দেখেছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল হলে অস্ত্রোপচার করা হবে। রেজওয়ানের বাবা তার আহত ছেলের জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন। এদিকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডাঃ সামন্তলাল সেন জনকণ্ঠকে জানান, বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ৬ রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়েছে। তাদের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। বলব না, কেউ শঙ্কামুক্ত। সব মিলিয়ে বলা যায় একজন (রেজওয়ান) ছাড়া অন্যরা তুলনামূলক ভাল আছেন। সামন্তলাল বলেন, এর আগে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই আহত পাঁচজনকে গুরুতর অবস্থায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে দু’জন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে একজনকে এখানে আনা হয়েছে। আজ (শনিবার) সকালে সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল থেকে দু’জন এসেছে। এ নিয়ে বার্ন ইউনিটে ৬ জন ভর্তি আছেন। তাদের চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন হয়েছে। তিনি বলেন, এই রোগীদের মানসিক চাপ সামলে ওঠার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থেকে বেঁেচ যাওয়া তৌকির ইসলাম সেদিনের তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান। বলেন, এফআর টাওয়ারের ১২ তলার ইইউআর সার্ভিস বিডি লিমিটেডের কর্মকর্তা তিনি। তৌকির জানান, আগুন লাগার পর প্রচণ্ড ধোঁয়ায় চারপাশ আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সবাই বের হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। এদিক সেদিক দৌড়াদৌড়ি করে কোন কূলকিনারা পাচ্ছিলাম না। সিঁড়িতে গিয়ে দেখি আরও বেশি ধোঁয়া। দেয়াল ও ফ্লোর প্রচ- গরম হয়ে যাচ্ছিল। দাঁড়িয়ে থাকাটাই ছিল কষ্টসাধ্য। যেখানেই হাত-পা লাগছিল, পুড়ে যাচ্ছিল। তখন বাঁচার আশাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। পরে ফায়ার সার্ভিসের ক্রেন দিয়ে আমাকে নিচে নামিয়ে আনা হয়। তৌকির জানান, আমাদের কক্ষে আগুন ছিল না। তারপরও আগুনের তাপে দেয়াল প্রচ- গরম হচ্ছিল। নামার সময় ক্রেনে উঠতে গিয়ে দেয়ালের যেখানে হাত-পা লেগেছে সেখানেই পুড়ে গেছে। তার মতো সেদিনের অগ্নিকা- থেকে রক্ষা পাওয়া ইইউআরের আরেক কর্মকর্তা স্বপন শর্মাও বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। জানান, কিভাবে বেঁচে ফিরেছি, জানি না। বেঁচে আসছি এটাই ভগবানের অশেষ কৃপা। মারা যাব নিশ্চিত ছিলাম। এক সময় দেখলাম ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা ক্রেন দিয়ে তাদের নিচে নামিয়ে আনলেন। না আনলে হয়ত আর বাঁচতে পারতাম না। একইভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন ১১ তলায় ইইউআর সার্ভিস বিডি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে সবুর খান। এখনও আতঙ্ক কাটেনি তার। ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে চিকিৎসাধীন তিনি। বৃহস্পতিবার অগ্নিকা-ের সময় অর্ধশতাধিক সহকর্মীর সঙ্গে তিনিও অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। একটার দিকে আগুন লাগার খবর পান। তখন কমপক্ষে ২০ সহকর্মীসহ অফিস কক্ষে আটকা পড়েন সবুর। ভয়ার্ত কণ্ঠে সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন সবুর। তিনি জানান, আগুন লাগার পর মুহূর্তেই ধ্ােয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চারপাশ। লিফটও বন্ধ। সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করেছেন অনেকে। কিন্তু ধ্ােয়ার তীব্রতায় সবার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মাথা কাজ করছিল না। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। স্ত্রীকে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর জানান সবুর। এরপর সহকর্মীদের নিয়ে অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন ধোঁয়া থেকে রক্ষা পেতে। এরপর বন্ধ কক্ষের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে হাত নেড়ে বাইরে উদ্ধারকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালান। কাঁচ ভাঙ্গতে গিয়ে তার (সবুর) হাত কেটে যায়। আহত হয়েছেন তার অন্য সহকর্মীরাও। এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের নিক্ষেপ করা পানির ওপর শুয়ে পড়েন সবাই। সবুর জানান, দেড়টা থেকে সোয়া চারটা পর্যন্ত প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ভবন থেকে বের হন তিনি ও তার কয়েক সহকর্মী। বাকিদের খবর এখনও জানা নেই তার। আল্লাহর রহমত না থাকলে কোনভাবেই বাঁচতে পারতাম না। হাসপাতালে সবুর খানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রাবেয়া অনি। তিনি জানান, চিকিৎসকরা বলেছেন, ধোঁয়ায় সবুরের শ্বাসনালী মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। হাতেও ক্ষত রয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে অক্সিজেন থেরাপি দেয়া হয়েছে, শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে অক্সিজেন মাস্ক পরানো হয়েছে। এ ছাড়া সাব্বির আলী মৃধা ও অনুপম দেবনাথও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে দুপুর আড়াইটার দিকে অনুপম নামে একজনকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়। তার শরীরের প্রায় ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তিনি এফআর টাওয়ারের ১১ তলার ইরো সার্ভিস বিডিতে কাজ করেন। অনুপম জানান, একটার দিকে আগুনের খবর পেয়ে সবার সঙ্গে হুড়মুড় করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়েও নামতে পারেননি তিনি। আতঙ্কে সবাই দিশেহারা তখন। মুহূর্তে ধোঁয়ায় ভরে যায় পুরো ফ্লোর। অন্ধকারে কাউকে দেখা যাচ্ছিল না। শুধু বাঁচার আকুতি শোনা যাচ্ছিল চারপাশে। আড়াইটার দিকে ফের সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করেন অনুপম। কিন্তু আগুনের উত্তাপে সিঁড়ির স্টিল তখন এতটাই তপ্ত যে, হাত রাখতেই ঝলসে গেছে। পরে ১৩ তলায় গিয়ে আশ্রয় নেন অনুপম। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় মৃত্যুকূপ থেকে উদ্ধার পান। অগ্নিকাণ্ডে আহতদের মধ্যে এফআর টাওয়ারের ১২ তলার ডার্ড গ্রুপের কর্মী আবু হোসাইন। চিকিৎসা শেষে শুক্রবার দুপুরে বার্ন ইউনিট ছাড়ার আগে তিনি জানান, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ‘ফায়ার এলার্ম’ বাজলে প্রাণহানি কম হতে পারত। এলার্ম নষ্ট থাকায় আগুনের খবর সবাই দেরিতে পান। ততক্ষণে ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট শুরুর পর ১৩ তলায় ছুটে যান আবু হোসাইন। কয়েকজন চেষ্টা করে জানালার গ্লাস ভাঙ্গেন। নইলে অক্সিজেনের অভাবেই সবার মৃত্যু ঘটত ওখানেই। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১৩ তলায় আটকেপড়াদের উদ্ধার করেন। তিনিও তাদের মধ্যে একজন সৌভাগ্যমান। কুর্মিটোলা হাসপাতালের বেডে কষ্ট ও যন্ত্রণায় অস্থির মাজহারুল জানান, তিনি ভবনের সিএনএফ ট্রেডে চাকরি করেন। ভবনে তাদের তিনটি অফিস। তিনি কাজ করেন নয় তলার অফিসে। আগুনের বিষয়ে জানতে পেরে সালাউদ্দিনের হাত ধরে বলেন চলুন তাড়াতাড়ি। এরপর ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে দ্রুত ভবনের ছাদে উঠি। কিন্তু আশপাশে সালাউদ্দিনকে দেখতে পাইনি। পাশের ছাদ ডিঙিয়ে পাশের ভবন আহমেদ টাওয়ার দিয়ে বের হয়ে আসেন মাজহারুলসহ অনেকে। অগ্নিকাণ্ডে সালাউদ্দিন ছাড়াও আহমেদ জাফর ও আসিফ ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম রাজুসহ মাজহারুলের তিন সহকর্মী নিহত হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত ৪৯ জনকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে ২৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ছেড়ে দেয়া হয়। শুক্রবার সেখানে রোগী ছিলেন আট। সোহান নামে একজন ছাড়া অন্যদের রিলিজ দেয়া হয়েছে। ইউনাইটেড হাসপাতালে ২৯ জনকে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ১৫ জন এখনও চিকিৎসাধীন, অন্যদের রিলিজ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ বোরহান উদ্দিন জানান, বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যালে ৭, বার্ন ইউনিটে ৬, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১১, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৫, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালে ৩, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১৫, এ্যাপোলো হাসপাতালে ৬, শাহাবুদ্দিনে ৫ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের কারোর অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয়। বেশিরভাগই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঢামেক হাসপাতালে নাসিম ॥ শনিবার দুপুরে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে ঢামেক হাসপাতালে যান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, কোড না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণ করা উচিত নয়। ১৮তলার অনুমোদন নিয়ে ২৩তলা করা হয়েছে। কোন দুর্ঘটনা এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা না করে মুনাফা লাভের জন্য আইন অমান্য করে ভবন করার বিষয়ে প্রথমে ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, এদের গ্রেফতার করলে অন্য ভবনের মালিকরা দ্রুত সতর্ক হয়ে যাবেন। বনানীর অগ্নিকাণ্ডে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। বেলা সোয়া বারোটার দিকে বার্ন ইউনিটে আসেন মোহাম্মদ নাসিম। পরে দোতলায় পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে আহত রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। সাংবাদিকদের নাসিম জানান, ৬ রোগী ছাড়াও একজন জরুরী বিভাগের জেনারেল আইসিইউতে আছেন। তার অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল, তবে শঙ্কামুক্ত নয়। আহতদের গত দু’দিন ধরে উন্নতমানের চিকিৎসা দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। আইনজীবীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ রকম আইন অমান্যকারীরা যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানান মোহাম্মদ নাসিম। রাজউকের এই অব্যবস্থাপনা অনেক আগে থেকেই আছে। তারাও এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না। আহতদের দেখতে এসে শুরুতেই সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অনেকে বেঁচে আছেন। তাদের সমবেদনা জানাই। অনেকেই ছটফট করতে করতে মারা গেছেন। তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। বনানী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাই। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াসহ অন্যরা।
×