ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীকে হারিয়ে শিরোপা রংপুরের

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

  রাজশাহীকে হারিয়ে শিরোপা রংপুরের

রুমেল খান ॥ রবিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের (অনুর্ধ-১৭) ফাইনাল খেলা। দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠিত প্রথম আসরের এই ফাইনালে রাজশাহী বিভাগীয় দলকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রংপুর বিভাগীয় দল। ফাইনাল ম্যাচটি হয়েছে রোমাঞ্চকর। একবারে শেষ মুহূর্তের গোলে জয়ের হাসি রংপুরের। খেলা শেষের পরই দলবেঁধে উচ্ছ্বাস করে রংপুরের খেলোয়াড়রা। পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ করে রংপুরের কিশোররা। বিপরীতে হতাশা নেমে আসে রাজশাহী শিবিরে। বিজয়ী দলের হয়ে গোল করে আপন চন্দ্র রায় (৪৪ মিনিটে) এবং শামীম ইসলাম (৮০+৬ মিনিটে)। বিজিত দলের একমাত্র গোলদাতা আহাদ (৫৭ মিনিটে)। আপন হয় টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পায় শামীম ইসলাম (৪ গোল)। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে খেলা উপভোগ করেন এবং বিজয়ী ও বিজিত দলের মাঝে ট্রফি ও মেডেল বিতরণ করেন। এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে ট্রফি ছাড়াও যথাক্রমে একলাখ ও পঞ্চাশ হাজার টাকার প্রাইজমানি দেয়া হয়। চ্যাম্পিয়ন দলকে খেলা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে গোল্ডকাপ প্রদানপূর্বক ফেরত নিয়ে গোল্ডকাপের রেপ্লিকা দেয়া হয়। রানার্সআপ দলকেও একইভাবে সিলভার কাপের রেপ্লিকা দেয়া হয়। কোন দল পরপর তিনবার চ্যাম্পিয়ন/রানার্সআপ হলে ওই দলকে যথাক্রমে গোল্ডকাপ/সিলভার কাপ দেয়া হবে। এর আগে টুর্নামেন্টের প্রতিটি পর্যায়েই শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার দেয়া হয়েছে। টুর্নামেন্ট কমিটি প্রতিটি পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের সব খেলোয়াড়কে ব্যক্তিগত পদক প্রদান করা হয়। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে যেসব প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় পাওয়া যাবে (৪৩ জন) তাদের মধ্যে থেকে যারা বিকেএসপিতে ভর্তির যোগ্য তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিকেএসপিতে ভর্তির ব্যবস্থা এবং অন্যান্য খেলোয়াড়ের বাফুফের ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ এবং এদের সব প্রতিশ্রুতিশীলদের মধ্যে সেরা চারজনকে ব্রাজিলে নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। নেত্রকোনার বারহাট্টা থেকে যে মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছিল (নেত্রকোনার বারহাট্টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ওলিভেইরা জুনিয়র। তিনিই প্রতিশ্রুতি দেন ব্রাজিলে চার ফুটবলারের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য), তার চূড়ান্ত রূপ পায় রবিবার। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ফুটবলার বাছাইয়ের এই মহতী উদ্যোগ শেষ হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী পাঁচ হাজার পাঁচশ’ দলের প্রায় ২৫ হাজার প্রতিভাবান ফুটবলারদের অংশগ্রহণে শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (অনুর্ধ-১৭) টুর্নামেন্ট। উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের জন্য ট্রফি ও আর্থিক পুরস্কারসহ পদক দেয়া হয়েছে। এবার ফাইনাল খেলার পালা। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় চাচ্ছে দেশের ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে। তারা চায় ফুটবলের মানকে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে নিয়ে যেতে। তাই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে। ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী ও বিজিতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরিতে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, ‘জনপ্রিয়তার দিক থেকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ফুটবল। ফুটবলের উন্মাদনায় শামিল হয় তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্করাও। লেখাপড়ার পাশাপাশি কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ, সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সহিঞ্চুতা অর্জন, মাদকাসক্তিও জঙ্গীবাদসহ সকল অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। ফুটবলকে আরও জনপ্রিয় করে তোলার পাশাপাশি এ টুর্নামেন্ট নতুন নতুন প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরিতেও সহায়তা করবে। আশাকরি তৃনমূল থেকে ওঠে আসা এসব প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা আগামী দিনে বাংলাদেশের জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করবে এবং সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে।’
×