ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই শুরু

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই শুরু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশের সর্ব উত্তরের পঞ্চগড় জেলা থেকে দলীয় এমপি প্রার্থী বাছাই শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রক্রিয়া শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। বৈঠকে থাকা মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে জানান, সরকারী-বেসরকারী একাধিক সংস্থার জরিপ এবং আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। এর মধ্যে সুশীল সমাজের কাছ থেকে পাওয়া প্রার্থী তালিকাও ছিল বলে জানান একজন। জানা গেছে, প্রথমেই রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলা নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে রাজশাহী ও সিলেটের কিছু আসন নিয়ে কথা হয়। বৈঠকটি সংক্ষিপ্ত হওয়াতে আলোচনা খুব বেশিদূর এগোয়নি। সূত্রটি জানায়, পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে অনানুুষ্ঠিকভাবে মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক বৈঠক হবে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনার পর একাদশ সংসদ নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। প্রথমে ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। এরপর নির্বাচনী জোটের মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ৪ হাজার ২৩ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আরও বেশকিছু অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময় অনুযায়ী মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ সময়ের আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ। যদিও বৈঠক শেষে বেরিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আশা করছি হয়ত দু’য়েক দিন পরেই আমরা আনুষ্ঠানিক আলোচনা করে মনোনয়ন চূড়ান্ত করব। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়ায় আমরাও সময় একটু বেশি পেয়েছি, তাই চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। জনমতের প্রতিফলন থাকবে প্রার্থী মনোনয়নে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে কাদের বলেন, এটা ৬৫ থেকে ৭০ হতে পারে আবার কম-বেশিও হতে পারে। সেটা নির্ভর করবে ‘জয়ের যোগ্য’ প্রার্থীর ওপর। বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। শরিকদের ৬৫-৭০টি আসন দেয়া হবে- কাদের ॥ এদিকে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জোটের শরিক আনুমানিক ৬৫-৭০ আসন দেয়া হবে। এর সংখ্যা কমতেও পারে, আবার বাড়তে পারে। এটা নির্ভর করবে উইনেবল (বিজয়ী হতে পারে) প্রার্থীর ওপর। তিনি বলেন, আমাদের শরিক দলগুলো কয়জন ‘ইলেকটেবল ক্যান্ডিডেট’ দিতে চান। আওয়ামী লীগেও যারা ‘ইলেকটেবল ক্যান্ডিডেট’ তারা মনোনীত হবেন। যুক্তফ্রন্ট কোন প্রার্থী তালিকা পাঠায়নি বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি যদি বড় ধরনের এ্যালাইয়েন্সের সমীকরণে যায়, আমরাও করব। অনেকেই আছে, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে চান, তাদের কোন প্রার্থীর লিস্ট নাই। গণতান্ত্রিক জোট, যেখানে ৩৯টি দল আছে। তিনি আরও বলেন, ইশতেহার প্রায় চূড়ান্ত। সম্ভবপর সময়ের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, সংসদীয় মনোনয়ন বৈঠকে দেশী-বিদেশী ৫-৬টি সার্ভে জনমত রিপোর্টগুলো উপস্থাপন করা হয়। এই রিপোর্টগুলো আমরা স্টাডি করব। এখন আমরা আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পর্ব শুরু করিনি। দুই-এক দিন পরেই আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু করব। যেহেতু নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে। সেজন্য আমরা রিপোর্টগুলো ধরে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছি। যাতে আমাদের মনোনয়নে জনমতের প্রতিফলন হয় সেজন্য বোর্ডের সকল সদস্যরা পর্যালোচনা করছি। হয়ত দুই একদিন পরেই আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু করব। তিনি বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে অবশ্যই থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এ কে এম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, পারভীন জামান কল্পনা প্রমুখ।
×