ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এবার টেস্ট সিরিজের পালা টাইগারদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

এবার টেস্ট সিরিজের পালা টাইগারদের

মিথুন আশরাফ ॥ ওয়ানডে সিরিজ শেষ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে নামার পালা। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে এবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩ নবেম্বর প্রথম ও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১১ নবেম্বর থেকে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে। অনভিজ্ঞ এক দল নিয়ে টেস্ট সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন আবার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। টেস্টের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নেই। ইনজুরির জন্য তিনি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও খেলতে পারেননি। টেস্ট সিরিজেও নেই। তাই মাহমুদুল্লাহর কাঁধেই টেস্ট সিরিজের নেতৃত্ব পড়েছে। টেস্ট সিরিজে শুধু সাকিবই নন, থাকছেন না তামিম ইকবালও। তাতে করে একঝাঁক নতুন ক্রিকেটার দলে ঢুকেছেন। পেসার খালেদ আহমেদ, অলরাউন্ডার আরিফুল হক, ব্যাটসম্যান-উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ মিঠুন ও স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু প্রথমবারের মতো টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন। এ ক্রিকেটারদের বাইরে মাহমুদুল্লাহ, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহীম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি, শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন। মাহমুদুল্লাহ, লিটন, ইমরুল, মুমিনুল, মুশফিক, মিরাজ, তাইজুল, টেস্ট দলে ফেরা মুস্তাফিজ পরীক্ষিত ক্রিকেটার। তবে শান্ত, রাহি এখনও পরীক্ষায় সেভাবে পড়েননি। আর শফিউলতো খেলারই সুযোগ পান না। প্রথমবার টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া আরিফুল, খালেদ, মিঠুন ও অপুতো এখনও চ্যালেঞ্জেই নামার সুযোগ পাননি। মাহমুদুল্লাহর জন্য কঠিনই হয়ে পড়েছে এ টেস্ট সিরিজটি। গত কয়েকটি টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশের অবস্থা ভাল ছিল না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত বছর আগস্টে টেস্ট জেতার পর থেকে সাতটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। একটি টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র করেছে। এছাড়া ছয়টিতেই হেরেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের অবস্থা বেহাল ছিল। ইনিংস ব্যবধানে প্রথম টেস্ট হারের পর দ্বিতীয় টেস্ট ১৬৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার সাকিব ও তামিমের মতো ক্রিকেটারকে ছাড়া জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্টটি হবে আবার সিলেটে। প্রথমবারের মতো সিলেটে টেস্ট খেলা হবে। জিম্বাবুইয়ের দলটিও এবার শক্তিশালী। ওয়ানডেতে মাশরাফি বিন মর্তুজা প্রেরণা হয়ে সবসময়ই ধরা দেন। বিপদে মূল্যবান বক্তব্যে ক্রিকেটারদের উদ্দীপ্ত করে তোলেন। কিন্তু টেস্টে তা দেখা যায় না। টেস্টে বিধ্বস্ত হয়ে গেলে একবার তা থেকে নিজেদের জাগিয়ে তোলা কঠিনই হয়ে পড়ে। যদিও বর্তমান দলের যে অবস্থা সাকিব, তামিমকে ছাড়াও যেভাবে খেলছে বাংলাদেশ দল; তাতে ক্রিকেটাররা উৎসাহ পেতে পারেন। এমনিতেই উদ্দীপ্ত হয়ে আছেন। এখন শুধু মাঠে তা প্রমাণ করার পালা। আবার প্রতিপক্ষ দলটি জিম্বাবুইয়ে। যে দলটির বিপক্ষে খেলতে নামার আগে এখন এগিয়েই থাকে বাংলাদেশ। খেলা যেখানেই হোক, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের মানসিকতা জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে সবসময়ই শক্ত থাকে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে অবশ্য টেস্টে জেতার দিক দিয়ে এখনও পিছিয়েই আছে বাংলাদেশ। ১৪ টেস্টে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে। ৫টি টেস্টে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ৬টি টেস্টে। তিনটি টেস্ট হয়েছে ড্র। জিম্বাবুইয়ে যে টেস্টগুলো বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে তার সবই ২০১৪ সালের আগে। বর্তমান সময়ে জিম্বাবুইয়ে পাত্তাই পায়নি। সর্বশেষ টানা চার টেস্টেই জিম্বাবুইয়ে হেরেছে। ২০১৪ সালে দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ খেলা হয়েছে। সেই সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ হয়েছে জিম্বাবুইয়ে। টানা তিন টেস্টেই হেরেছে। প্রায় চার বছর পর আবার দুই দল টেস্টে পরস্পরের বিপক্ষে খেলতে নামবে। এই সিরিজে কী হয় তা সময়ই বলে দেবে। তবে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের যে ধারাবাহিকতা মিলেছে তাতে টেস্ট সিরিজে খেলতে নামার আগে মানসিকভাবে চাঙ্গাই থাকছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। সেই চাঙ্গা ভাব নিয়ে এবার টেস্টেও জিম্বাবুইয়েকে উড়িয়ে দেয়া গেলেই হলো। দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ ২০১৫ সালে দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ হয়েছিল। সেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৪ সালের শেষদিকে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। যে সিরিজটি বাংলাদেশের নতুন পথ তৈরি করে দিয়েছিল। এরপর টানা জয়ের ধারাবাহিকতাতেই থাকে বাংলাদেশ। এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবার দুই বছর পর দেশের মাটিতে খেলতে নামে বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ১০টি সিরিজ জেতা হয়ে গেছে আগেই। জিম্বাবুইয়েকে তিনটি সিরিজে আগেই হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথমবার জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে। এরপর ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যথাক্রমে ৫ ও ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এবার চতুর্থবারের মতো জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এবার টেস্ট সিরিজেও জিম্বাবুইয়েকে উড়িয়ে দেয়ার পালা। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাতো টেস্ট অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের জন্য শুভকামনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘এখন দায়িত্বটা মাহমুদুল্লাহর। আশাকরি, আমাদের টেস্ট দল ভাল করবে।’ এই আশা শুধু মাশরাফিরই নয়, সবার। সেই আশা এখন বাংলাদেশ দল পূরণ করলেই হয়।
×