ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অনুমতি ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও দিতে পারবে না পুলিশ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

অনুমতি ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও দিতে পারবে না পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রামপুরায় তরুণীকে হেনস্থা করার পর তা ফেসবুকে ছাড়ার কারণে পুলিশ সদস্যদের ফেসবুক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। অনুমতি ছাড়া কোন পুলিশ সদস্য ফেসবুকে কোন ভিডিও আপলোড করতে পারবে না। ফেসবুকে কোন ভিডিও আপলোড করতে হলে পুলিশ সদস্যদের তার উর্ধতন অফিসার অথবা ইউনিট প্রধানের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া কোন পুলিশ সদস্য ভিডিও বা অন্য কোন কিছু আপলোড করলে ওই সদস্যের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। শনিবার পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, কোন পুলিশ সদস্য তার ইউনিট প্রধানের অফিসিয়াল অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে ধারণকৃত কোন ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করতে পারবেন না। সব ধরনের ভিডিওয়ের ক্ষেত্রেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকি জনকল্যাণমূলক কিংবা অপারেশনাল কোন ভিডিও অনুমতি ছাড়া প্রচার করতে পারবে না। পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের ভিডিও আপলোড বা শেয়ার করার আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া এমন কর্মকা-ে কেউ জড়িত হলে, তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে পুলিশ সদস্যদের আগে থেকেই সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। স্বল্প সময়ের মধ্যেই আবারও নতুন করে অফিসিয়াল আদেশ দেয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত ২২ অক্টোবর মধ্যরাতে সিএনজিতে থাকা এক তরুণীকে হেনস্থা করার ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে রামপুরা থানার এএসআই ইকবাল হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের (পিওএম) চার কনস্টেবল রকিবুল, জিতু, তৌহিদুল ও মিজানুরকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। পাশাপাশি এ চারজনকে দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের ওপর নজরদারি চলছে। তাদের চলাফেরা ও যাতায়াত এবং যোগাযোগের ওপর বিশেষ নজরদারি অব্যাহত আছে। বিষয়টি সম্পর্কে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, যে ব্যক্তি ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে আপলোড করেছেন, তিনিও পুলিশ সদস্য। তিনি ভেবেছিলেন, ওই ভিডিওটা প্রকাশ করলে তার হয়ত সুনাম হবে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বরে স্কলাস্টিকা স্কুলের সামনে পুলিশের প্রতি সরকারদলীয় এমপির মেয়ে দাবি করা এক নারীর আগ্রাসী আচরণের ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট ঝুটন শিকদার। ভিডিওটি দেখে অনেকেই ওই নারীকে নিয়ে কটূক্তি করেন। যদিও ভিডিওটিতে নারীর অসদাচরণের আগের কোন চিত্র ছিল না। ঘটনার প্রেক্ষাপটটি ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়নি। এ নিয়ে সমালোচনা হয়। এ ছাড়া চলতি বছরের ৩ মার্চ প্রখ্যাত লেখক ও বুদ্ধিজীবী সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের ওপর মঞ্চে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই এক উগ্র যুবক হামলা চালায়। ঘটনার সময় পুলিশ জাফর ইকবালের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল না রেখে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছিল। এমন ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। ওই সময় দায়িত্বরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে পুলিশ সদর দফতর।
×