ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘খাশোগি হত্যাকাণ্ড ॥ সৌদি যুবরাজের পক্ষে দায় এড়ানো কঠিন’

অডিও টেপ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

অডিও টেপ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার প্রমাণ স্বরূপ ‘অডিও থেকে থাকলে’ যুক্তরাষ্ট্র তা চেয়েছে। খাশোগিকে ইস্তানবুলে সৌদি কনসুলেটে হত্যা করা হয়েছে বলে তুরস্ক দাবি করেছে। তুরস্ক এই দাবির সপক্ষে অডিও থাকার কথা বলেছে। সেটি থেকে থাকলে তা যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় বলে ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন। তিনি এটিও বলেছেন যে, কৌশলগত অংশীদার হিসেবে সৌদি আরবের ভূমিকাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ওপর বিষয়টি নিয়ে চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে। গার্ডিয়ান ও ওয়াশিংটন পোস্ট। হোয়াইট হাউসে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সেগুলো চেয়ে পাঠিয়েছি, যদি সেগুলো থেকে থাকে’। সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক খাশোগি কিছু দরকারি কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ২ অক্টোবর ইস্তানম্বুলের সৌদি কনসুলেটে যান। তারপর থেকে তার আর কোন খোঁজ নেই। তুরস্কের দাবি ১৫ জনের একটি ঘাতক দল তাকে হত্যা করেছে সৌদি আরব। তবে রিয়াদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ওয়াশিংটনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র রিয়াদ। তাই খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ট্রাম্প প্রশাসনকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। তুরস্কের কর্মকর্তারা বলেছেন, অডিও টেপ যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবকে দেয়া হয়েছে। তবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এর কোন অস্তিত্ব আছে কিনা আমি নিশ্চিত নই, সম্ভবত আছে।’ সদ্য সৌদি আরব ও তুরস্ক সফর করে আসা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছ থেকে একটি প্রতিবেদন আশা করছেন বলে ট্রাম্প জানান। এর আগে তিনি বলেছিলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকার যে দাবি সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ করে এসেছেন তাকে তিনি গ্রহণযোগ্য করেন। তিনি এ বিষয় দ্রুত কোন সিদ্ধান্তে না পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন, খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার পেছনে ‘দুর্বৃত্ত ঘাতকরা’ জড়িত থাকতে পারে। গত কয়েকদিন ধরে ট্রাম্প এমন সম্ভাবনার কথা বলে আসছিলেন। এ ঘটনায় আগেভাগেই সৌদি আরবকে দোষারোপ করতে তিনি রাজি হননি। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দেশটিকে এক্ষেত্রে নির্দোষ বলতে চেয়েছেন। জানা গেছে, ঘটনার একটি বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যাা দাঁড় করানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসন ও সৌদি রাজ পরিবার একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যেন খাশোগি হত্যার নেপথ্যে যুবরাজ বিন সালমানের হাত আছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা থেকে তার রেহাই পাওয়ার একটা উপায় বের করা যায়। কারণ তিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়া খুব সহজ হবে না। কারণ বিভিন্ন ঘটনা থেকে ধারণা করা হচ্ছে সৌদি সরকার শুধু নয়, বিন সালমান নিজেই জানেন খাশোগির ভাগ্যে কি ঘটেছে। খাশোগির বন্ধু, তার পাসপোর্ট রেকর্ড, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন তথ্য থেকে এটি পরিষ্কার যে খাশোগি এক সময় রাজ পরিবরের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে তিনি তাদের বিশেষ করে যুবরাজের সমালোচক হয়ে ওঠেন। এ কারণে খাশোগিকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দিতে যুবরাজ বদ্ধ পরিকর ছিলেন। ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা রুডি জুলিয়ানিসহ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা এক সপ্তাহেরও আগে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে খাশোগিকে সৌদিরাই হত্যা করেছে। তবে ট্রাম্প এ বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছেন যে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে তাদের এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। ইরানের প্রভাব প্রতিরোধ করার জন্য এই সম্পর্ক খুবই গুরত্বপূর্ণ।
×