ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিশুদের পাঠ গ্রহণে সহায়ক হবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী

ডিজিটালাইজড ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৬ বই, ডাউনলোড করা যাবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ডিজিটালাইজড ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৬ বই, ডাউনলোড করা যাবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডিজিটালাইজড হলো ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৬টি পাঠ্যপুস্তক। ফলে এ বইগুলো এখন ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে পড়া যাবে। পাঠ্যবইয়ে যেসব বিষয় বুঝতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হতো ডিজিটাল বইয়ে ছবি ও ভিডিও দেখে শিক্ষার্থীরা সেগুলো সহজেই বুঝতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বন্যাকবলিত পাঁচ জেলায় শিক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে’ প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব বিষয় তুলে ধরেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মোহাম্মদ পার্কাস। প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ইন্টারএকটিভ ডিজিটাল টেক্সটবুক শিশুদের পাঠ গ্রহণে সহায়ক হবে। সহজে বুঝতে ও শিখতে সহায়তা করবে। ডিজিটাল টেক্সটবুক শিক্ষকদের জন্যও সহায়ক হবে। প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে চাই। তারা যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের সহজপাঠের সুযোগ তৈরি করতে পাঠ্যপুস্তক ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। বর্তমানে ষষ্ঠ শ্রেণীর বই ডিজিটাল করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল পাঠ্যপুস্তক ডিজিটাল করা হবে। তিনি বলেন, শুধু আধুনিক প্রযুক্তি আর মোটা বই তুলে দিলে ভাল মানুষ হবে না, এ জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। শিক্ষকতা পেশার চাইতে সম্মানজনক আর কোন পেশা নেই। শিক্ষকরা ব্রত হিসেবে কাজ করছেন। শিক্ষকরাই আমাদের নিয়ামক শক্তি। তাদের প্রচেষ্টায় আমাদের সন্তানরা আধুনিক ও মানসম্মত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। মন্ত্রী জানান, ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৬টি ইন্টারএকটিভ পাঠ্যবই তৈরি করা হয়েছে। বইগুলোতে অডিও, ভিডিও, টেক্সট এবং এনিমেশন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক হবে। সহজে এসব বই থেকে তাদের কাক্সিক্ষত পাঠ গ্রহণ করতে পারবে। ফলে শিক্ষার্থীদের শিখন স্থায়ী হবে। এর আগে নবম-দশম শ্রেণীর ৬টি বইয়ের ই-লার্নিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করা হয়েছে। সেসিপ প্রকল্পের আওতায় সপ্তম শ্রেণীর ৬টি এবং অষ্টম শ্রেণীর ৬টি ইন্টারএকটিভ ডিজিটাল বই তৈরি প্রক্রিয়াধীন আছে। সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্বমানের শিক্ষা অর্জনের জন্য আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিকে ধারণ করতে হবে। প্রযুক্তির সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ভর্তি, ফলাফল প্রকাশসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক কার্যক্রম পেপারলেস করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে সকল পাঠ্যপুস্তক ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছি। তার আলোকে ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৬টি বই ডিজিটাল করা হয়েছে। তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে কিছু বিষয় পড়তে ও বুঝতে অনেকে কঠিন মনে করে, ডিজিটাল বইয়ে সেসব স্থানে বিভিন্ন ছবি, সমর্থক শব্দ, সাউন্ড ও ভিডিও দেয়া রয়েছে; যা দেখে সহজেই সেসব বিষয় বোঝা যাবে। এনটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, পাঠ্যপুস্তক ডিজিটাল করাটা কঠিন বিষয়। সকলের প্রচেষ্টা ও জ্ঞান দিয়ে তা করা সম্ভব হয়েছে। ধর্মীয় পাঠ্যপুস্তক ডিজিটালাইজড করাটা কঠিন বিষয়, ধর্মীয় বিষয়ে ছবি ও শব্দ যুক্ত করতে আমাদের অনেক সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়েছে। তারপরও যদি কোথাও কোন ভুল ধরা পড়ে তবে তা বিবেচনায় নিয়ে সংশোধন করা হবে বলে তিনি জানান। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থায় লেখাপড়া চালানোর নির্দেশ ॥ উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বন্যাকবলিত পাঁচ জেলায় শিক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী এ নির্দেশের কথা জানান। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বন্যাকবলিত পাঁচ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে বা তলিয়ে গেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের আশপাশে উঁচু স্থান বা বাড়িতে ক্লাস চালিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এ জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে পরামর্শ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দেশের পাঁচ জেলায় পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন নদীগুলোতে বাড়ছে পানি প্রবাহ। সম্প্রতি রাজশাহী, বগুড়া, শেরপুর, জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদী তীরবর্তী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা পুরোপুরি তলিয়ে গেছে।
×