নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৯ আগস্ট ॥ অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের ঐতিহ্যবাহী বিল ও তার আশপাশের বসতি এবং মাছের অভয়ারণ্য। নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের শুনসীর বিলটি ঐতিহ্যবাহী বিল। যা স্থানীয়ভাবে শুনসীর রাখ নামে পরিচিত। গত এক মাস ধরে সেখানে দুইটি অবৈধ ড্রেজার চললেও স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার।
জানা গেছে, সেখানে আরও একটি অর্থাৎ তৃতীয় ড্রেজার বসানোর প্রস্তুতিও প্রায় শেষ। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অবৈধ ড্রেজার বন্ধের কার্যকরী কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। অবৈধ ড্রেজার মালিকরা খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় বিলের পাশে বসবাসকারী মানুষ ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। বিলের পাশেই ৬৭নং শুনসী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। আর অবৈধ ড্রেজার দুটি বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৪০০ গজ দূরে স্থাপন করা হয়েছে। ফলে যেকোন সময় মারাত্মক হুমকির মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়টি। তাছাড়া নাগরপুর উপজেলার অন্যতম মাছের অভয়ারণ্য এই বিল। সারা বছর এ বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে এ অঞ্চলের জেলেরা। স্থানীয় প্রশাসন যদি দ্রুত ড্রেজার বন্ধ না করে, তাহলে মাছের উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে জানান জেলেরা। এছাড়া ড্রেজার চালানোর কারণে এখনই ভাঙ্গতে শুরু করেছে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। অবৈধ ড্রেজার মালিক উপজেলার পংবাইজোড়া গ্রামের হাবিব বলেন, স্থানীয় মাতাব্বর, মেম্বার, চেয়ারম্যান, প্রশাসন, মিডিয়াসহ সর্বস্তরের সবাইকে ম্যানেজ করেই এ ড্রেজার চালাচ্ছি। যেখানে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই, আপনাদের সমস্যা কেন। বিল পাড়ের বাসিন্দা সিরাজ, আলমগীর, শরিফসহ অন্যরা জানায়, অবৈধ ড্রেজার চালানোসহ তারা রাস্তার পাশের শত শত গাছও কেটে ফেলেছে। কিন্তু ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না। অবৈধ ড্রেজার মালিক হাবিব ও শহীদ যেভাবে দাপটের সঙ্গে ড্রেজার চালাচ্ছে তাতে স্থানীয় প্রশাসন জড়িত না থাকলে সম্ভব নয় বলে এলাকাবাসী জানান।
এ বিষয়ে মামুদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ড্রেজার ব্যবসার সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এখানে ড্রেজার চলছে, সে কথা সকলেই জানে। কিন্তু কেউ কিছুই বলছে না।
তিনি ড্রেজার মালিকদের পক্ষ নিয়ে আরও বলেন, ওরা ভাল কাজ করছে রাস্তা-ঘাট, স্কুল, মাদরাসা, ঘরবাড়ি, ডোবা-নালা, মসজিদের জায়গা ভরাট করছে। এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা শাহীন জানান, অবৈধ ড্রেজার সম্পর্কিত কোন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে যদি কেউ অবৈধ ড্রেজার মেশিন চালায় তবে তার বিরুদ্ধে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: