ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে স্ত্রীর গাল ও কান কেটে দিল পাষন্ড স্বামী

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৩০ জুলাই ২০১৮

  আমতলীতে স্ত্রীর গাল ও কান কেটে দিল পাষন্ড স্বামী

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৯ জুলাই ॥ টাকা না দেয়ায় কুপিয়ে তিন সন্তানের জননী স্ত্রী ছকিনা বেগমের গাল ও কান কেটে দিলেন পাষন্ড স্বামী হাবিব খান। অসহায় এ নারী আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অর্থাভাবে সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না তার। খেয়ে না খেয়ে হাসপাতালের বেডে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামে। জানা গেছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের হানিফ হাওলাদারের কন্যা ছকিনা বেগম। জন্মের দু’বছরের মাথায় পিতা-মাতাকে হারিয়ে এতিম হয় ছকিনা। আলীপুরের রাখাইন সম্প্রাদায়ের মইয়্যা নামের এক পরিবারে বেড়ে উঠে। ২০০৩ সালে আমতলী উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের হাবিব খানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ছকিনা দিনমজুরের কাজ করে স্বামীর সংসার পরিচালনা করে আসছে। তাদের দাম্পত্যে তিনটি সন্তানের জন্ম দেয় ছকিনা। এদিকে স্বামী হাবিব খান ২০০৬ সালে কক্সবাজারে দ্বিতীয় বিয়ে করে। দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা বেগমকে নিয়ে স্বামী হাবিব খান দিনযাপন করে। প্রথম স্ত্রী ছকিনাকে ভরণপোষণ দেয় না। প্রায়ই স্বামী হাবিব খান সকিনার কাছে টাকা দাবি করে আসছে। গত মঙ্গলবার রাতে হাবিব খান ছকিনার কাছে টাকা দাবি করে। সকিনা তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিব খান সকিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে ছকিনার বাম গাল ও কান কেটে যায়। সকিনার ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে পুলিশ হাবিব খানকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। রবিবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, গত পাঁচ দিন ধরে ছকিনা হাসপাতালে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। অর্থাভাবে তার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, ছকিনার মুখের বাম অংশ থেকে শুরু করে কান পর্যন্ত কেটে গেছে। আহত ছকিনা বেগম জানান, জন্মের পরেই মানে মোরে পালছে। মানের বাড়ি কাম হরে বড় অইছি। মানে মোরে বিয়ে দেছে। বিয়ের পর অইতে স্বামীর লগে দিনমজুরের কাম হইর‌্যা সোংসার চালাই। স্বামী দ্বিতীয় বিয়া হরছে। হেইয়্যার পর হইতেই মোরে স্বামী এ্যাকছের জালায়। প্রায়ই আইয়্যা টাকা চায়। টাহা না দিলে মারে। গত মঙ্গলবার টাকা চাইছে মুই টাহা দিতে রাজি না অওয়ায় মোরে মাইর‌্যা হালানোর জন্য ধাহান দিয়া কোপাইয়্যা গাল ও কান কাইট্টা দেছে। মুই এ্যাইয়্যার বিচার চাই।
×