ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে দুই নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে ৩ দোকানে ডাকাতি

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২২ জুলাই ২০১৮

নারায়ণগঞ্জে দুই নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে ৩ দোকানে ডাকাতি

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ বন্দর উপজেলার উত্তর লক্ষণখোলা এলাকায় তিনটি ব্যাটারির দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা রায়হান উদ্দিন (৬৫) ও মোতালেব মিয়া (৫৫) নামে দুই নৈশপ্রহরীকে হত্যা করে তিন দোকান থেকে ২৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। নিহত দুই নৈশপ্রহরীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক ও নিহতদের পরিবারসহ এলাকাবাসী এ ঘটনার জন্য পুলিশের কর্তব্যে অবহেলাকে দায়ী করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার গভীর রাতে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাতে মদনগঞ্জ-ঢাকা সড়কের উত্তর লক্ষণখোলা বাজারে প্রতিদিনের মতো রাতে দায়িত্ব পালন করছিলেন নৈশপ্রহরী রায়হান উদ্দিন ও মোতালেব মিয়া। রাতের কোন এক সময় একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নৈশপ্রহরীদের ওপর হামলা চালায়। ভোরে বাজারের পরিচ্ছন্ন এক নারী কর্মী বাজার ঝাড়ু দিতে এসে দুজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীকে খবর দেন। পরে আশেপাশের লোকজন এসে অচেতন অবস্থায় রায়হান উদ্দিন ও মোতালেব মিয়াকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন। মোতালেবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মোতালেব মিয়াকে ডাক্তারা মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে ডাকাতরা বিসমিল্লাহ ব্যাটারি স্টোর, সততা মেলা ব্যাটারি ও সততা ব্যাটারি সার্ভিসিং সেন্টারের তালা ভেঙ্গে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। দোকানগুলোর মালিকপক্ষের দাবি, ডাকাতরা তাদের দোকানের ২৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়েছে। দোকান মালিকরা তাদের লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। শনিবার সকালে ডাকাতির খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মনিরুল ইসলাম, খ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলমসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে নিহত নৈশপ্রহরী রায়হান উদ্দিন ও মোতালেব মিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তারা দুজনই হতদ্ররিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদের আয় দিয়েই সংসার চলত। নিহত রায়হান উদ্দিনের ভাই রওশন আলী মৃধা জানান, তার আয়ের ওপর নির্ভর করে চলত সংসার । এখন কিভাবে চলবে তাদের সংসার, কে দেখবে ছেলে মেয়েদের। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহীন ম-ল জানান, এলাকার বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ডাকাতদের শনাক্ত করাসহ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহত রায়হান উদ্দিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
×