ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কারও মুখাপেক্ষী নয় ॥ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৯ জুলাই ২০১৮

কারও মুখাপেক্ষী নয় ॥ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ রক্ষায় নিজেদেরই উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষায় নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হবে। সবাই নিজের দেশের কথা চিন্তা করে পরিবেশ রক্ষায় শামিল হবেন। নিজের যার যার জায়গায় গাছ লাগাবেন। সরকার সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের সব মানুষকে এ বারের বৃক্ষরোপণ অভিযানে শরিক হয়ে অন্তত তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০১৮ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা-২০১৮’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার বদল হলে, পরবর্তী সরকারের ভেতর যদি এই সচেতনতা না থাকে যে, কিভাবে দেশকে সুরক্ষিত করতে পারি বা দেশের পরিবেশ রক্ষা করতে পারি। তাহলে এই ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী শাসকরা সুন্দরবনের নদ-নদী, খাল ও চ্যানেলগুলো বন্ধ করে চিংড়ি চাষ প্রকল্প করায় এখানকার পানি লবণাক্ত হয়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকার এই নদী এবং খাল পুনর্খনন করে নাব্য বৃদ্ধির পাশাপাশি তা জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত করে তুলেছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ বীর শহীদের স্মরণে সারাদেশে একযোগে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীরও উদ্বোধন করেন। দেশে প্রথমবারের মতো এই ধরনের কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ বক্তৃতা করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ মহসিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ পদক ২০১৮ এর জন্য নির্বাচিত ব্যক্তি ও সংস্থা এবং বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন-২০১৮, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৭ ও সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশের চেক প্রাপ্তদের মাঝে পদক ও চেক বিতরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পশ্চিম পার্শ্বে একটি ছাতিম গাছের চারা রোপণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ মেলা এবং বৃক্ষ মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নে আমাদের তেমন ভূমিকা নেই। কিন্তু বাংলাদেশেকে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সরকারের ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমাদের এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তিনি শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদফতরে ‘মনিটরিং এ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট’ কার্যক্রম জোরদারকরণ এবং পরিবেশ অধিদফতরকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এর জনবল বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরেন। ১৯৭৪ সালে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান উপলক্ষে জাতির পিতা প্রদত্ত বাণীর অংশ বিশেষ উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী দেশকে সবুজে সবুজে ভরিয়ে তুলতে দেশবাসীকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। জাতির পিতা বলেছিলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য এই বৃক্ষরোপণ অভিযানের সময় এবং পরে অধিক বৃক্ষরোপণ করে সরকারের প্রচেষ্টাকে সাফল্যম-িত করে তোলা। এই বাণীর আলোকে প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে তিনি সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ তুলে ধরেন- ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যত নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক, অফিস-আদালত, সরকারী ভবন, পার্ক, নদীর তীর, লেক, খেলার মাঠ, কবরস্থানসহ পতিত, পরিত্যক্ত জমিতে, এমনকি বাড়ির ছাদে যথাযথ কৌশল অবলম্বন করে সবুজ এলাকার সংখ্যা বাড়ানো যায়। তিনি বৃক্ষরোপণ করে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন, আমরা প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ ও ভেষজ গাছের চারা রোপণ করি এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মাণে এগিয়ে যাই।’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার বনের দস্যুতা দূর করার জন্য আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের পুনর্বাসন এবং বনের অপরাধ দমনের উদ্যোগের পাশাপাশি সেখানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার জন্য সহ-ব্যবস্থাপনা এবং বিকল্প আয়েরও ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং আমাদের গর্ব রয়েলে বেঙ্গল টাইগারের ব্রিডিং পয়েন্ট উন্নত করা এবং এই রয়েল বেঙ্গল টাইগার যাতে সুরক্ষিত হয় তার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ১৯৯৬ সালে সরকারে এসেই ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পানি চুক্তি করার পর আমরা সুন্দরবনের গড়াই নদী খননের কাজ শুরু করি। গড়াই নদী খননের ফলে সুন্দরবন অঞ্চলের লবণাক্ততা দূর হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই লবণাক্ততা দূর করা একান্তভাবে প্রয়োজন ছিল। কারণ, এই গড়াই নদীর হোগলা বন এলাকাটিই বাঘের ব্রিডিং পয়েন্ট। গড়াই, সালনাসহ সুন্দরবনের নদীগুলো খননের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মিঠা পানির স্রোত যত বেশি হবে জলের লবণাক্ততা ততই কমে আসবে। সেজন্যই এই পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে জাতির পিতার ঘাসিয়ার খাল খননের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই চ্যানেলটি বন্ধ করে পরবর্তীকালে ক্ষমতায় আসা শাসকগণ সেখানে চিংড়ি চাষের প্রকল্প গ্রহণ করে। ফলে জীববৈচিত্র্যের জন্য সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ এবং ডলফিনের আবাসস্থল সালনা নদীতে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। তিনি বলেন, ঘাসিয়ার খালের সঙ্গে সংযুক্ত প্রায় আড়াইশ’ ছোট ছোট খাল বন্ধ করে শুরু করা চিংড়ি চাষ বন্ধ করে চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারে তার সরকারকে বেগ পেতে হয়। তিনি বলেন, একে একে প্রায় সব খালের মুখ আমরা খুলে দিয়েছি। যেগুলোর মধ্যে ৮০টা এখনও বাকি আছে এবং ঘাসিয়ার খাল পুনঃখনন করে সেখান দিয়েই জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। তাতে জাহাজ চলাচলের সময়ও বেঁচে যাচ্ছে। তা না হলে জাহাজগুলোকে অতিরিক্ত ১৪/১৫ কিলোমিটার ঘুরে সালনা নদী দিয়ে আসতে হতো। এখন খুব সহজেই জাহাজগুলো মংলা বন্দরে চলে আসতে পারছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পঁচাত্তরের পরে ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কাছে চিংড়ি চাষ করে পয়সা বানানোটাই সব থেকে বড় ছিল। কিন্তু পরিবেশ বিনষ্ট হবে, জীব বৈচিত্র্যের সমস্যা হবে সেটা তারা কোনদিনও ভাবেননি। তাদের এ ব্যাপারে কোন সচেতনতা ছিল বলেও মনে হয় না বা তারা দেশটাকেই হয়তো তারা ভালভাবে চেনে না। আওয়ামী লীগকে এদেশের মাটি ও মানুষের সংগঠন আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দলটি যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের পরিবেশ, দেশের মানুষের উন্নয়ন, দেশের অর্থনৈতিক এবং সার্বিক উন্নয়নের দিকেই দৃষ্টি দেয়া হয়। যে কারণেই সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় এই কাজগুলো করা হয়েছে এবং আমাদের পরিবেশের সুরক্ষা কার্যক্রমও এখন যথেষ্ট অগ্রগামী। তিনি বলেন, তার সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশের ৪০টি বনজসম্পদ ও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা এবং জলাভূমি, হাওর, নদী, উপকূলীয় দ্বীপসহ ১৩টি এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করেছে। ১৯টি উপকূলীয় এলাকায় জেগে উঠা চরসমূহে সরকার উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী তৈরির জন্য ব্যাপক বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্যপ্রাণির অভয়াশ্রম ও মাছের প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি করেছি। বনায়নের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূমি দেশের মূল ভূ-খ-ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। উপকূলীয় চরাঞ্চলে এ যাবত ২ লাখ ১০ হাজার হেক্টর বাগান করা হয়েছে, যা উপকূলবাসীকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে রক্ষা করছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সাল নাগাদ দেশের বনভূমির পরিমাণ ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও তার সরকারের সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ফলে বিগত সাড়ে ৯ বছরে দেশের বনভূমির পরিমাণ ২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, গাজীপুর জেলার শালবনে প্রায় ৪ হাজার একর ভূমিতে ২০১৩ সালে স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক। চিত্ত বিনোদনের পাশাপাশি বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণার দ্বার উন্মোচন করেছে এই পার্ক। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শেখ রাসেল এভিয়ারী ইকো-পার্ক। কক্সবাজার জেলায় ২০০১ সালে ৯০০ হেক্টর এলাকায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক ডুলাহাজরা, কক্সবাজার যা এখন দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। পলিথিন ও প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সকলকে দেশীয় বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত পাটের পলিমার হতে প্রস্তুত পচনশীল সোনালি ব্যাগ ব্যবহারের আহ্বান জানান এবং সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় এবং সংস্থাসমূহকে প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যাগ উৎপাদনে এবং প্রচলনে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পরিবেশ পদক ২০১৮ এর জন্য নির্বাচিত ব্যক্তি ও সংস্থা এবং বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন-২০১৮, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৭ ও সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশের চেক গ্রহিতাদের অভিনন্দন জানান। শিল্প দূষণ রোধ করে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করে পরিবেশবান্ধব একটি সবুজ অর্থনীতির দেশ গড়ে তোলার এখনই উপযুক্ত সময় বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০১৮ এর প্রতিপাদ্য ‘সবুজে বাঁচি, সবুজ বাঁচাই, নগর-প্রাণ-প্রকৃতি সাজাই’-এর এর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে শেখ হাসিনা আহ্বান জানান, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে সবুজে-সবুজে দেশটা ভরিয়ে তুলি।’
×