ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ দেশকে আরও বহুদূর এগিয়ে নিতে চায়

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ২৪ জুন ২০১৮

আওয়ামী লীগ দেশকে আরও বহুদূর এগিয়ে নিতে চায়

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা-বিশ্বাস রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, তার দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলার জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছে, স্বাধীনতা অর্জন করেছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছে, আমরা মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। তাই সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আমরা প্রতিটি গ্রামকে নগরে পরিণত করতে সক্ষম হব, গ্রামের মানুষকে নাগরিক সুবিধা দিতে পারব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা আরও অনেকদূর যেতে চাই। আওয়ামী লীগ জাতির সেবা করছে, করে যাচ্ছে। মানুষ আওয়ামী লীগের ওপর যে আস্থা রেখেছে তার সম্মান দিচ্ছে, সম্মান দিয়ে যাবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শনিবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন সবই বাঙালী জাতিকে দিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকার আরও অনেকদূর যেতে চায়। আমরা এই দেশকে সেই জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছি, যে স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেখতেন। বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। দিনবদলের সনদ দিয়েছিলাম। সত্যিই আজ মানুষের দিনবদল হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলের শোষিত, বঞ্চিত ও দারিদ্র্যপীড়িত জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে মুসলিম কথাটি বাদ দেয়া হয়। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই যাতে এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে পারে তার জন্য এটি করা হয়। দল গঠনের পর এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তির জন্য আওয়ামী লীগ সংগ্রাম শুরু করে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই একমাত্র সংগঠন যার নীতি আছে, আদর্শ আছে। একটি দর্শনও রয়েছে। স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখানো স্বাধীনতার চেতনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে এখন যেখানেই হাত দেই দেখি তা বঙ্গবন্ধু করে গেছেন। যে রাজনৈতিক দল মাটি ও মানুষের মধ্যে থেকে গড়ে ওঠে সেই দলই পারে মানুষকে কিছু দিতে। আমরা তা প্রমাণ করেছি। বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন, এদেশের জনগণ যা পেয়েছে তার সবই এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত উন্নত ও শক্তিশালী। শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থা আমরা সৃষ্টি করতে পেরেছি। আমাদের উন্নয়ন মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর জন্য নয়। আমাদের উন্নয়ন দেশের সকল মানুষের উন্নয়ন। গ্রামের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম বলেই দেশের মানুষ তার সুফল এখন পাচ্ছেন। বাংলাদেশ সাহায্যের জন্য হাত পেতে চলে; এই কথা কেউ আর এখন বলে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এদেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছে। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রেখেছে, বিশ্বাস রেখেছে। মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতি যে আস্থা-বিশ্বাস রেখেছে, তার সম্মান আমরা দিচ্ছি, সম্মান দিয়ে যাব। আগে বিশ্ব বাংলাদেশ মানেই বুঝত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলোচ্ছ্বাস বা সাহায্যের জন্য হাত পাতার দেশ। এখন বাংলাদেশকে কেউ আর সে চোখে দেখে না। বরং স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের এত উন্নয়ন-অগ্রগতি দেখে বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশ্ন করে, কীভাবে এটা সম্ভব হয়েছে। এতটুকু দেশে ১৬ কোটি জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা আমরা কীভাবে নিশ্চিত করছি? তিনি বলেন, আমরা এখন কারো কাছে হাত পেতে চলি না। বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোলমডেল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ মন্ত্রিত্বের জন্য দল ছাড়ে। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমরা জাতির পিতার সেই আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নেই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনেকদূর এগিয়ে গেছি। বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ইনশাল্লাহ! আমরা বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবই। সংসদ মুলতবীর আগে সভাপতির আসনে থাকা স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
×