ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে আয়োডিনের ডোজ মাত্র ৩০০ টাকা

প্রকাশিত: ০৩:০৯, ২৫ মে ২০১৮

দেশে আয়োডিনের ডোজ মাত্র ৩০০ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ কোটি থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগী রয়েছে। আর প্রায় তিন কোটি রোগীই জানে না তাদের এই সমস্যা রয়েছে। এই রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। দেশে আয়োডিনের ডোজ মাত্র ৩০০ টাকা। আর সিঙ্গাপুরে এ খরচ ৫০ হাজার টাকা। আর অন্যান্য দেশে আরও বেশি। এই রোগের পরীক্ষা করাতে দেশের সরকারি হাসপাতালে খরচ মাত্র ২৫০ টাকা আর বেসরকারিতে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়া দেশের সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালে হরমোন বিষয়ক চিকিৎসক রয়েছেন। পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের ডাক্তাররা চিকিৎসা সম্পন্ন করতে পারেন। তবে আমাদের দেশের চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের অভাবে তারাও সঠিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে পারেন না। এক্ষেত্রে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে চিকিৎসকদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিইএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহজাদা সেলিম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা বলেন, তাই এই রোগ প্রতিরোধ কিংবা চিকিৎসার ক্ষেত্রে জনসচেতনতাই মুখ্য। থাইরয়েড হরমোন কম বা বেশি নিঃসৃত হওয়া উভয়ই রোগের সৃষ্টি করে। তাই বিয়ের আগে কিংবা গর্ভধারণের আগে নারীদের অবশ্যই থাইরয়েড পরীক্ষা করে নেয়া উচিৎ। এ রোগের সম্ভাবনা থাকলে যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে তারপর গর্ভধারণ করা উচিৎ। নাইলে বাচ্চাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এ হরমোনের তারতম্যের ফলে শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, হঠাৎ করে শরীর মোটা ও চিকন হওয়া, মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা, চোখ ভয়ংকর আকারে বড় হয়ে যাওয়া , বন্ধ্যাত্ব, এমনকি ক্যান্সারের সৃষ্টি হতে পারে। সাধারণত একজন পুরুষর বিপরীতে ১০ জন নারী থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সব বয়সের মানুষের স্ক্রিনিং, আয়োডিনের অভাব, ভেজাল খাদ্য ও আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করা এ রোগের প্রধান প্রতিরোধক। এছাড়া সরকার খুব সহজে থাইরয়েডের বাধ্যতামুলক স্ক্রিনিং চালু করতে পারে। পাশাপাশি বাজারের লবণগুলোর আয়োডিনের মান নিশ্চিত করতে পারে। আমাদের গবেষণা অনুসারে বাজারের লবণে সঠিক আয়োডিনের মাত্রা নেই। এছাড়া প্রতিটি বাচ্চার জন্মগ্রহণের পর বাধ্যতামুলকভাবে থাইরয়েড পরীক্ষা নিশ্চিত করা উচিৎ। কেননা বিকলাঙ্গ বাচ্চা আমাদের কারও কাম্য নয়। আর বাবার এ সমস্যা থাকলে কোনো ঝুঁকি নেই বরং মা'দের ক্ষেত্রে রয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে শহরের ২০ থেকে ৩০ ভাগ গর্ভবতী থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত । আর গ্রামের পরিস্থিতির কোনো রেকর্ড নেই। তাই ধারণা করা যায়, সেখানকার অবস্থা আরও করুণ।
×