ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় ঝড়ের তান্ডব

বিদ্যুত বিপর্যয় ॥ পানির জন্য হাহাকার

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৩ মে ২০১৮

বিদ্যুত বিপর্যয় ॥ পানির  জন্য হাহাকার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ১২ মে ॥ কালবৈশাখী ঝড়ে লাইন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় নেত্রকোনা শহরে ভয়াবহ বিদ্যুত বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। প্রায় অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিদ্যুত না থাকায় মারাত্মক আকার ধারণ করেছে পানি সঙ্কট। শহরের বাসাবাড়িতে পানির জন্য রীতিমতো হাহাকার দেখা দিয়েছে। বালতি, কলসি নিয়ে দিগি¦দিক ছুটছে মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগ। কখন পুনরায় বিদ্যুত চালু করা সম্ভব হবে- তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না স্থানীয় বিদ্যুত বিভাগ। জানা গেছে, শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে নেত্রকোনা সদর, পূর্বধলা, খালিয়াজুরি, আটপাড়া, মদন এবং বারহাট্টা ও মোহনগঞ্জ উপজেলার আংশিক এলাকার ওপর দিয়ে প্রচন্ড বেগে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে জেলা শহরের সমস্ত বিদ্যুত লাইন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উপড়ে যায় সঞ্চালন লাইনের বেশ কিছু বৈদ্যুতিক খুঁটি। কয়েকটি ট্রান্সফরমারও বিকল হয়ে যায়। এ কারণে ঝড়ের পর থেকে সারা শহরে পিডিবির বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুত না থাকায় পানির মোটর চালু করতে না পারায় শহরজুড়ে দেখা দিয়েছে পানির সঙ্কট। শহরে চালু থাকা গোটা কয়েকটি হস্তচালিত টিওবওয়েল থেকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাইন ধরে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এছাড়া শৌচাগারের পানি সংগ্রহ করা হচ্ছে নদী এবং মজা কয়েকটি পুকুর থেকে। কেউ কেউ জেনারেটর ভাড়া করে এনে মোটর চালু করে ট্যাঙ্কে পানি তুলছেন। ৫শ’ লিটারের একেকটি পানির ট্যাঙ্ক ভরতে জেনারেটর ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৫শ’ টাকা। তাও চাহিদামতো সিডিউল মিলছে না। শহরের দোকানগুলোতে বোতলজাত পানি বেচার হিড়িক পড়ে গেছে। প্রায় শেষ হয়ে এসেছে মোমবাতির স্টক। ১০ টাকা দামের মোমবাতি কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। সন্ধ্যার পর ভুতুড়ে অন্ধকার বিরাজ করছে সারা শহরে। যারা ইলেক্ট্রিক হিটার ব্যবহার করে রান্না করেন- তাদের রান্নাবান্নাও বন্ধ হয়ে গেছে। পানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে হোটেল-রেস্তরাঁর বেচা-কেনাও। এদিকে চার্জ দিতে না পারায় ব্যাটারিচালিত রিক্সা এবং ইজিবাইক চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে কমে গেছে সাধারণ মানুষের চলাচল। অনেকের ফ্রিজে রাখা কাঁচা জিনিসপত্র পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চার্জের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে সব মোবাইল ফোন। কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। এদিকে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও অচল হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ইন্টারনেট যোগাযোগ। এক কথায় বিদ্যুতের অভাবে ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে গোটা জেলা শহরটিতে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সর্বস্তরের মানুষ। এমন পরিস্থিতি গত কয়েক বছরে দেখেনি কেউ। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পিডিবির স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিক সংগ্রহ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কিছু কিছু এলাকার বিদ্যুত সরবরাহ চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাও কখন সম্ভব হবে বলা যাচ্ছে না। তবে শহরের সব লাইন চালু করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
×