ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিকল পরা ছাত্রী উদ্ধার ॥ শিক্ষক আটক

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ২২ এপ্রিল ২০১৮

শিকল পরা ছাত্রী উদ্ধার ॥ শিক্ষক আটক

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ২১ এপ্রিল ॥ শুক্রবার রাত তিনটার দিকে গুরুদাসপুর চাচকৈড় বাজার পাড়ায় একটি দোকানের শেডের নিচ থেকে শোনা যাচ্ছিল শিশু কান্নার শব্দ। কান্নার শব্দ শুনে আশপাশের বাসিন্দারা খোঁজ নিতেই বেরিয়ে আসে পায়ে লম্বা লোহার শিকল পরা ১০ বছর বয়সী এক শিশু কন্যা। নাম তার জিম। তার কেন এ অবস্থা জানতে চাইলে আরও জোরে কান্না। শুধু বলছিল, ‘পালাইয়া আইছি, আর যামু না। আমারে বাঁচান। আমারে আবার পাঠাইলে মইর‌্যা যামু’। জিম আক্তার (১০) নামে এই শিশু কন্যাটি উপজেলার একটি মাদ্রাসা থেকে এভাবেই পা’তে শিকল পরা অবস্থায় পালিয়ে আসে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জিমকে উদ্ধার করে তার অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হুজুর ইয়ারুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। শিশু কন্যা জিম আক্তার উপজেলার কাছিকাটা দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত আয়নুল হকের মেয়ে। জানা যায়, জিম আক্তারের মা মিনিয়ারা বেগম তাকে পাশর্^বর্তী চলনালী গ্রামে একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনার জন্য ভর্তি করলে সে মাঝে-মধ্যে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসত। সে যাতে আর মাদ্রাসা থেকে পালাতে না পারে সেজন্য ওই মাদ্রাসার হুজুর ইয়ারুল ইসলাম শিশুটিকে লোহার শিকল পরিয়ে রাখত। শিকল পরানোর যন্ত্রণায় সইতে না পেরে শুক্রবার রাত তিনটার দিকে সে টয়লেটে যাওয়ার অজুহাতে পা’য়ে শিকল লাগানো অবস্থায় পালিয়ে যায়। পরে সে গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাচকৈড় বাজার পাড়ার রাস্তার পাশে দোকান ঘরের শেডের নিচে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় তার কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে একটি বাড়িতে আশ্রয় দেয়া হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার সকালে ওই শিশু কন্যাটিকে উদ্ধার করে। মেয়েটির মা মিনিয়ারা বেগম জানান, তার মেয়ে পড়াশুনা অমনোযোগী। পড়তেই চায় না। তার জন্য মাদ্রাসার হুজুরকে বলেছিলাম শাসন করার জন্য। কিন্তু হুজুর যে এমন করবে বুঝতে পারিনি।
×