ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিবিহীন নির্বাচন হবে না ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৩ মার্চ ২০১৮

বিএনপিবিহীন নির্বাচন হবে না ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রেখে দেশে ৫ জানুয়ারির মতো বিএনপিবিহীন কোন নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। একই সময়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া আর কারও উন্নয়ন হয়নি। রিজভী বলেন, জনগণের সম্মিলিত শক্তির অভিযাত্রায় একদলীয় নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। এর মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ আর সুশাসন আওয়ামী লীগের চাকায় পিষ্ট। গণতন্ত্রহীন দেশে লুটপাটের নামে জনগণের টাকা আত্মসাতকে তারা উন্নয়ন বলছে। উন্নয়নের নামে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে আওয়ামী লীগের যে কোন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে জিয়া শিশুপার্কের নাম থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলা হচ্ছে। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় খরচে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছেন, নৌকায় ভোট চাচ্ছেন। সভা-সমাবেশে সরকারী কর্মচারীদের যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে তা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লংঘন। নির্বাচন কমিশন এসব দেখেও না দেখার ভান করে সরকারকে সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন উপলক্ষে সরকারের বৃহস্পতিবারের কর্মসূচী এক তামাশা। গোটা ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট অচল করা হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ রাস্তায় আটকা পড়ে দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। অথচ আমরা কর্মসূচী পালন করতে গেলে সরকার বলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কোন কর্মসূচী করতে দেয়া হবে না। সত্যিই আমরা আজব দেশে বাস করছি। রিজভী বলেন, সরকারের একটা নির্বাচনী বৈতরণী পার করার কৌশল হিসেবে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশের কথা বলা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণভাবে মশকারি, জনগণের সঙ্গে বিদ্রুপ। তিনি বলেন, দেশে লুটপাট, ঘুষ ও দুর্নীতি ব্যাপক হারে বেড়েছে। এক টাকার কাজ একশ টাকায় করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেকার বেশি বাংলাদেশে, এটা কি উন্নয়নের নমুনা? তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এশিয়ায় সবচাইতে বেশি বৈষম্য বাংলাদেশে অর্থাৎ গরিব ভয়ঙ্করভাবে গরিব হচ্ছে, বড় লোক আরও বড় হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া আর কারও উন্নয়ন হয়নি- খসরু ॥ দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া আর কারও উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। খসরু বলেন, দেশে এখন উন্নয়নের মিছিল হচ্ছে। এটা কিসের মিছিল? এমন মিছিল অতীতে কেউ কখনও দেখেনি। তিনি বলেন, দেশের মানুষের জীবনমান কমেছে। কর্মসংস্থান নেই। ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে যায় কোন বিচার নেই। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। অর্থনীতি ধ্বংস করা হয়েছে। এই সরকার মানুষের মৌলিক মানবাধিকার, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এটা কী উন্নয়ন? কিসের উন্নয়ন হয়েছে? আসলে আবারও জনগণকে নির্বাচনের বাইরে রেখে এবং রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহর করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্যই উন্নয়নের মিছিল করছে সরকার। খসরু বলেন, এ সরকার আবারও ক্ষমতা দখল করার জন্যই বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করেছে। এর মাধ্যমে দেশের মানুষের মালিকানা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানুষের বাক স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা সবকিছুই একাকার। দেশের মালিকানা ঠিক রাখার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতেই হবে। খসরু বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন এক সঙ্গে চলতে হয়। কিন্তু দেশে সেটা নেই। তাহলে কীসের উন্নয়নের কথা বলছে সরকার? ৯ বছরে এই সরকার কি উন্নয়ন করল? স্বৈরাচার এরশাদ সরকারও ৯ বছরে উন্নয়নের কথা বলেছিল। কিন্তু তার উন্নয়ন মানুষ গ্রহণ করেনি। তিনি বলেন, আগামী দিনে বিএনপি সকল গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে দেশের পরিবর্তন করবে। আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম হাসান তালুকদার, আয়োজক সংগঠনের নেতা অধ্যাপক ডাঃ আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন প্রমুখ।
×