ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পল্লীকবি জসীমউদ্্দীনের জীবন ও সাহিত্যকর্মের ওপর সেমিনার

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৫ মার্চ ২০১৮

পল্লীকবি জসীমউদ্্দীনের জীবন ও সাহিত্যকর্মের ওপর সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘পল্লীকবি জসীম উদ্দীন: জীবন ও সাহিত্যকর্ম’ শীর্ষক সেমিনার হয় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে। জাদুঘর আয়োজিত এ সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন কবিপুত্র খুরশীদ আনোয়ার জসীম উদ্দীন ও কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। মূল বক্তব্যে ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, কবি জসীম উদ্দীনের জন্মের পরে বাঙালী সাহিত্যের মানচিত্রে এক উত্তেজনা বিরাজ করত। তখন রাজনৈতিক ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে বাক বদল হয়। পঞ্চ কবিসহ অধিকাংশ কবির রচনায় পাশ্চাত্যের ছোঁয়া কিছুটা হলেও পড়েছিল। জসীম উদ্দীন এ সময় সাহিত্যে এক নতুন পথ দেখান, সেখানে পাশ্চাত্যের ভাবনা ছিল না। তিনি প্রায় ৫৫ বছর কবিতার মধ্যে ছিলেন। এ সময় তার কবিতায় বিবর্তন ঘটেছে। তিনি নাটক ও গান লিখেছেন বহু। তিনি পুরোপুরি রবীন্দ্রনাথের বাইরে গিয়ে আলাদা কাব্য তৈরি করেছেন। ছাত্র বয়সে তার লেখা ‘কবর’ কবিতা এক অসাধারণ সৃষ্টি। তার লেখার প্রেক্ষাপট ছিল পল্লীর কিন্তু উপস্থাপনায় ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। তিনি পল্লীর ঘরানা নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন। তিনি অত্যন্ত আধুনিক কবিতা লিখেছেন। কবিতায় এনেছেন নাটকীয় সংলাপ। আমাদের জসীম উদ্দীন পাঠে আরও মনোযোগী হওয়া উচিত। তাহলে আমাদের জাতীয় ঐহিত্যকে আমরা নিজেদের মধ্যে স্থান করে নিতে পারব। কবিপুত্র খুরশীদ আনোয়ার জসীম উদ্দীন বলেন, আমার বাবা মানুষ ও প্রকৃতি প্রেমিক ছিলেন। সব সময় দেশীয় ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিতেন এবং আধুনিকতার সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করতেন। আমার ছোটবেলায় দেখেছি, যখন বাবা অফিস সেরে বাড়িতে আসতের আমার মাকে আগে ডাকতেন। আমরা কাছে ছুটে গেলে, তিনি ঘরে না ঢুকেই গোয়ালঘরে যেতেন, গরুগুলো কেমন আছে দেখতে। আমরা অনেক সময় অবাক হতাম এসব দেখে। বড় হয়ে বুঝতে পারি কেন তিনি এসব করতেন। কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, আমি কবি জসীম উদ্দীনকে পল্লীকবি হিসেবে মানি না। তার লেখায় পল্লীর ঐতিহ্য উঠে এলেও তিনি ছিলেন আধুনিক এক কবি। ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ ও ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ তার অনবদ্য সৃষ্টি। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে তার কবিতা। পল্লীর মানুষের সংগ্রামী জীবন তিনি তুলে এনেছেন সাহিত্যের পাতায়। সভাপতির বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালে যখন অসহযোগ আন্দোলন চলছিল তখন জসীম উদ্দীন হাসপাতালে বসে প্রথম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা লেখেন। তিনি গ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখের কথা তার কবিতায় তুলে এনেছেন। তিনি আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা লেখেননি। তিনি একজন শিক্ষিত কবি। বাংলা কবিতার ইতিহাস তার সম্পূর্ণ জানা ছিল। বাঙালী কবিদের সম্পর্কেও তার অনেক জানাশোনা ছিল। ‘ওয়াহিদুল হক স্মারণিক মিলনোৎসব ২০১৮’ কাল ॥ লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সঙ্গীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হকের জন্মদিন আগামীকাল শুক্রবার। তিনি ১৯৩৩ সালের এই দিনে ঢাকা জেলার ভাওয়াল মনহরদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মদিনকে ঘিরে ‘ওয়াহিদুল হক স্মারণিক মিলনোৎসব-২০১৮’ আয়োজন করেছে কণ্ঠশীলন। শাহবাগের কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে এদিন সকাল ১০টায় দুই দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। বিশেষ অতিথি থাকবেন নাট্য ব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, শব্দসৈনিক আশরাফুল আলম ও কবি তারিক সুজাত। সংগঠনটির আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবে বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়। ভাবনগর সাধুসঙ্গে লালন গবেষক ক্যারোল সলোমনকে স্মরণ ॥ লালন সাঁইজির ভাব-দর্শন ও গানের গবেষক ও অনুবাদক ড. ক্যারোল সলোমন। আমেরিকান এই গবেষকের ১৩ মার্চ ছিল তিরোধান দিবস। তার এই তিরোধান দিবস উপলক্ষে গবেষকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার অনুষ্ঠিত হয় সাধুসঙ্গ ও স্মরণানুষ্ঠান। এদিন বিকেলে ভাবনগরের আয়োজনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীর ভাববৃত্তে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই আয়োজন। অনুষ্ঠানে সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস নিউইর্য়ক থেকে প্রকাশিত সিটি অব মিরোরস : সংস অব লালন সাঁই (আরশিনগর: লালন সাঁইয়ের গান) শীর্ষক গ্রন্থের প্রামাণ্যপাঠ ও আলোচনা হয়। এতে গ্রন্থটির প্রামাণ্যপাঠ ও আলোচনায় অংশ নেন গ্রন্থটির সম্পাদক গবেষক সাইমন জাকারিয়া। বক্তব্য দেন, কবি সালেহ মুজাহিদ, এমরানুর রেজা, মঞ্জুর দেওয়ান, কাজী বাবু প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসবের অষ্ঠম দিন ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কো স্বীকৃতি পাওয়ায় শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮’। উৎসবের অষ্ঠম দিন বুধবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে নাটকে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় লোকনাট্যদলের নাটক ‘মুজিব মানে মুক্তি’ ও এ্যাক্রোবেটি প্রদর্শনী। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন লিয়াকত আলী লাকী। ঢাকা পদাতিক নাট্যোৎসবে প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’ মঞ্চস্থ ॥ শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে নাট্যসংগঠন ঢাকা পদাতিকের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নাট্য প্রদর্শনী। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় প্রাচ্যনাটের ১৫তম প্রযোজনা ‘কিনু কাহারের থেটার’ নাটকের ৫০তম প্রদর্শনী হয়। মনোজ মিত্রের রচনায় এ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। এতে অভিনয় করেছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, মিতুল রহমান, নাসিফুল ওয়ালিদ অম্লান, রন্তিক বিপু, এবি এসজেম হীরা চৌধুরী, রিঙ্কন শিকদার, মোঃ রফিকুল ইসলাম, আবুল হাসনাত ভুঞা রিপন, বিলকিস জাহান জবা, সানজিদা আনোয়ার প্রীতি প্রমুখ।
×