ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

আমতলীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মজনু মৃধা চুরি হওয়া গরু ফেরত দিতে ১০ হাজার টাকা ঘূষ দাবী করেছেন। এ ঘুষের টাকা না দেয়ায় ইউপি সদস্য গরু ফেরত দেয়নি। গরু ফেরত পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগী দরিদ্র মাকসুদা বেগম। এ ঘটনার বিচার ও গরু ফেরত পেতে বুধবার সকালে আমতলী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মাকসুদা বেগম। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন আমতলী পৌর কাউন্সিলর মোঃ জান্নাতুল ফেরদাউস মিয়া। জানাগেছে, গত বছর অক্টোবর মাসে উপজেলার নাচনাপাড়া গ্রামের দরিদ্র মাকসুদা বেগমের একটি গরু চুরি হয়। ওই গরুটি গত ২১ জানুয়ারী হলদিয়া ইউনিয়নের আলমগীর বেপারীর বাড়ীতে সন্ধান পায়। ওই গরুটি উদ্ধারের জন্য আমতলী থানার ওসি মোঃ শহিদ উল্যাহকে জানান মাকসুদা বেগম। আমতলী থানার ওসি এস আই রাসেলকে পাঠিয়ে স্থানীয় চৌকিদার সুখদেবে সহযোগীতায় ২৪ জানুয়ারী গরু উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে ওই গরুর প্রকৃত মালিক মাকসুদা বেগমের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ওসি শহীদ উল্যাহ তাকে দিয়ে দেয়। এদিকে মাকসুদা বেগম গরু নিয়ে বাড়ী যাওয়ার পরে আমতলী সদর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মজনু মৃধা তার (মাকসুদা) বাড়ীতে গিয়ে চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা দোহাই দিয়ে বলেন, ওসি শহীদ উল্যাহ ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেছেন। এ টাকা দিতে হবে, না দিলে চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা গরু নিয়ে থানায় যেতে বলেছে। কিন্তু মাকসুদা বেগম ইউপি সদস্যের কথায় কোন কর্নপাত করেনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৫ জানুুয়ারী সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য মজনু মৃধাসহ ১০/১২ জন সহযোগী ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিনের দোহাই দিয়ে মাকসুদার বাড়ী থেকে জোরপূর্বক গরু ছিনিয়ে টমটমে তুলে নিয়ে আসে। এ ঘটনা মাকসুদা বেগম তাৎক্ষনিক আমতলী থানার ওসিকে জানান। গত ৩০ জানুয়ারী আমতলী থানার ওসি মোঃ শহিদ উল্যাহ ও ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা দরিদ্র মাকসুদার গরুটি ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে। কিন্তু ইউপি সদস্য মজনু মৃধাকে ঘুষ না দেয়ায় গরুটি ফেরত দেয়নি। নিরুপায় হয়ে বুধবার সকালে দরিদ্র মাকসুদা বেগম আমতলী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গরুটি ফেরত পাওয়ার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার ছোট ভগ্নিপতি আমতলী পৌর কাউন্সিলর মোঃ জান্নাতুল ফেরদাউস মিয়া। মাকসুদা বেগম সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, সিডরের সময় বেসরকারী সংস্থা আহশানিয়া মিশন থেকে একটি গাভী গরু ত্রাণ হিসেবে পাই। ওই গরুটি ৫ টি বাচ্চা দিয়েছে। ওই ত্রাণের গরুর পঞ্চম বাচ্চাটি গত বছর অক্টোবর মাসে চুরি হয়। আমি গবির মানুষ অনেক খোঁজাখুজির পরে গরুটির খোঁজ পেয়ে আমতলী থানার ওসি মোঃ শহিদ উল্যাহ স্যারকে জানাই। ওসি স্যার আমার গরুটি উদ্ধার করে দিলেন কিন্তু ইউটি সদস্য মজনু মৃধা ইউপি চেয়ারম্যান ও ওসিকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার কথা বলে নিয়ে আসেন। আমি ইউপি সদস্যকে ঘুষ না দেয়ায় আমার গরুটিকে সে (ইউপি সদস্য) ফেরত দিচ্ছে না। আমি আমার গরুটি ফেরত চাই। ইউপি সদস্য মোঃ মজনু মৃধা ঘূষ চাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই বাড়ীতে যাইনি এবং গরু ও আনিনি। আমতলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, আমি এ ঘটনা জানিনা। আমার নামে একটি মহল অপবাদ উঠিয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। আমতলী থানার ওসি মোঃ শহিদ উল্যাহ বলেন, গরু উদ্ধার করে প্রকৃত মালিক মাকসুদা বেগমের কাছে ফেরত দিয়েছি। আমার নামে যদি কেউ ঘুষ দাবী করে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×