ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল, শেখ জামাল ধানমন্ডি ১-১ সাইফ স্পোর্টিং

শীর্ষে ওঠার সুযোগ হারাল শেখ জামাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

শীর্ষে ওঠার সুযোগ হারাল শেখ জামাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঢাকা আবাহনীকে টপকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ওঠার দারুণ সুযোগ ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডির। কিন্তু নবাগত সাইফ স্পোটিং ক্লাবের সঙ্গে কোনরকমে ড্র করে সেই সুযোগ হারিয়েছে মাহবুব হোসেন রক্সির দল। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হয় দল দু’টি। ১৯তম রাউন্ডের এ ম্যাচে এগিয়ে যেয়েও শেখ জামালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে সাইফ। দু’দলের প্রথম লেগের ম্যাচও ড্র হয়েছিল গোলশূন্যভাবে। জিতলে শীর্ষে ওঠার হাতছানি। কিন্তু শেখ জামালের খেলা মন ভরাতে পারেনি সমর্থকদের। প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়ার পর দলটির খেলায় কিছুটা গতি ছিল। কিন্তু সমতাসূচক গোলের পর বাকি সময়ে মনে হয়েছে যেন ড্র করতেই খেলছে তারা! বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময় সাইফের আক্রমণ রুখতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের। জামালের সৌভাগ্য যে সাইফ বেশ কয়েকটি সহজ গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছে। তা না হলে হয়ত হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হতো শিরোপাপ্রত্যাশী জামালকে। এই ড্রয়ে ১৯ ম্যাচ শেষে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে আগের দ্বিতীয় স্থানেই থাকল শেখ জামাল। ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে অবস্থান সাইফের। আর ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী। ম্যাচের প্রথম সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকেই গোল করে এগিয়ে যায় এবার প্রথমবারের মতো পেশাদার লীগে খেলা সাইফ স্পোর্টিং। ষষ্ঠ মিনিটে গোলটি পায় রায়ান নর্থমোরের দল। বামপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে আসেন ডিফেন্ডার রহমত মিয়া। তার দেয়া দারুণ ক্রসে হেডে লক্ষ্যভেদ করে সাইফকে এগিয়ে নেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড চার্লেস এ্যাডওয়ার্ড (১-০)। অস্টম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রিকিক পায় শেখ জামাল। কিন্তু সলোমন কিংয়ের নেয়া শট বারপোস্টের অনেক উপর দিয়ে যায়। ১৪ মিনিটে আবারও এগিয়ে যেতে পারত সাইফ। দারুণ আক্রমণে ডি বক্সের মধ্যে কলম্বিয়ার হাম্বার ভ্যালেন্সিয়ার শট কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন জামালের ডিফেন্ডার। ১৮ মিনিটে সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি শেখ জামাল। ডি বক্সের ভেতর থেকে ফরোয়ার্ড নুরুল আবসারের শট বারপোস্ট উঁচিয়ে যায়। ২১ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ আসে জামালের। মাঝমাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে যেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন ফরোয়ার্ড জাবেদ খান। কিন্তু তার শটটি বারপোস্ট উঁচিয়ে গেলে সমতা ফেরানো হয়নি হলুদ জার্সিধারীদের। তবে পরের মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি মাহবুব হোসেন রক্সির দলকে। ডি বক্সের বাইরে আবারও ফ্রিকিক পায় শেখ জামাল ধানম-ি। আর তা থেকে বা পায়ের দর্শনীয় শটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সলোমন কিং (১-১)। ২৮ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ হাতাছাড়া করে শেখ জামাল। মাঝমাঠ থেকে আসা বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আগুয়ান গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে তুলে দেন নুরুল আবসার। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, বারপোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে যায় বল। ৪১ মিনিটে গোলের ভাল সুযোগ হাতাছাড়া হয় সাইফের। বক্সের মধ্যে ফাঁকায় পেয়েও জামাল গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি সাইফের ভ্যালেন্সিয়া। প্রথমার্ধে সমানতালে খেলা হলেও বিরতির পর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে সাইফ। একের পর এক আক্রমণে জামালের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন ভ্যালেন্সিয়া, হেমন্তরা। ৫৬ মিনিটে ডিফেন্ডার তপু বর্মণ সহজ সুযোগও পান। কিন্তু তার দুর্বল শট জামাল গোলরক্ষক মিতুল হোসেন লুফে নেন। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে নিশ্চিত গোল হাতছাড়া হয় সাইফের। বামপ্রান্ত দিয়ে ভ্যালেন্সিয়া জামালের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। এরপর পাস দেন কবিরুল ইসলামকে। চলতি বলে তার নেয়া শট জামাল গোলরক্ষক কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন। বিরতির পর ৬৭ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় শেখ জামাল। ডি বক্সের বাইরে থেকে নুরুল আবছার আচমকা শট নেন। কিন্তু তা বারপোস্ট উঁচিয়ে বাইরে যায়। এই অর্ধে বলার মতো এই একটি সুযোগই পায় জামাল। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে ওয়েডসন আনসেলমি গোল করার দারুণ সুযোগ পান। কিন্তু বদলি হিসেবে নামা এই ফরোয়ার্ডের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ফলে জয়সূচক গোল পাওয়া হয়নি সাইফের। শেষ পর্যন্ত প্রথম লেগের মতো দ্বিতীয় লেগেও দু’দলের ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়।
×