ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুরনো ঢাকা সেন্ট্রাল জেলকে শীঘ্রই ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

পুরনো ঢাকা সেন্ট্রাল জেলকে শীঘ্রই ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ঐতিহ্য ঠিক রেখে পরিকল্পিত ডিজাইন অনুযায়ী অতিদ্রুত স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অতিদ্রুত কারাগারটিকে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির ৫ নং গ্যালারিতে কারাগারটির ঐতিহ্য ঠিক রেখে তৈরি করা ডিজাইন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও নক্সা প্রদর্শনী উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডিজাইন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করায় স্থপতি আবদুর রশীদ ও তার দলকে ৭ লাখ টাকা পুরস্কার, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করায় স্থপতি আমিনুল এহসান ও তার দলকে ৫ লাখ টাকা ও বিশেষ সম্মাননা হিসেবে স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম ও তার দল, কাশিফ হাসনাইন ও তার দল এবং আবুল ফজল মাহমুদুন নবী ও তার দলকে একলাখ টাকা ও প্রত্যেককে সনদপত্র প্রদান করা হয়। প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা এবং আগামী শনিবার পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে। ডিজাইনের প্রথম পর্বের কাজ ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হবে বলে জানানো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নাজিমউদ্দীন রোডের এ কারাগারে বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতাসহ ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে দেশ স্বাধীনে আন্দোলনকারী অসংখ্য দেশপ্রেমিক কারাবরণ করেছেন ও তাদের স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঐতিহাসিক এসব স্থান ঠিক রেখে স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র সচিব রাখাল চন্দ্র বর্মন, অতিরিক্ত সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মহিবুল হক, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রফেসর আবু সাঈদ এম আহমেদ, উপসচিব (কারা) শিরিন রুবী, উপকারা মহাপরিদর্শক বজলুর রশিদ (সদর দফতর), তৌহদুল ইসলাম (ঢাকা), পার্থ গোপাল বণিক (চট্টগ্রাম) দেশখ্যাত স্থপতিসহ উর্ধতন কারা কর্মকর্তারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডিজাইন অনুযায়ী নির্মাণের পর আমাদের পুরনো কারাগারটি হবে নান্দনিক সৌন্দর্যম-িত ঐতিহাসিক স্থাপনা। আমরা পুরান ঢাকার পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে দর্শনীয় করে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে রেখে যেতে চাই। মানুষ যাতে জানতে পারে স্মৃতিবিজড়িত এই কারাগারে আমাদের নেতারা ছিলেন। শুধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতারাও এখানে ছিলেন। এই জেলখানার একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ আমলের আগে এটি একটি ফোর্ট ছিল। তাছাড়া পুরান ঢাকার এই অংশের আলাদা সৌন্দর্য ছিল। সেই আদলেই জাদুঘর করা হবে। শীঘ্রই সব স্থাপনা ও স্মৃতিবিজড়িত স্থানের সংস্কার কাজ শুরু হবে। পুরান ঢাকাবাসী তথা সারাদেশের মানুষের জন্য এখানে সেবাকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে, বিনোদন কেন্দ্র থাকবে, থাকবে মুক্ত জলাশয়। এর সবই হবে ডিজাইন অনুযায়ী। অনুষ্ঠানে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পুরান ঢাকার এই কারাগারের জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য আমরা তিনটি ওপেন আর্কিটেকচারাল ডিজাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। এতে ২৮ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। গত ৫ অক্টোবর এর ডিজাইন জমা নেয়া হয়। এতে ৩৪ ডিজাইন জমা পড়ে। জুরি বোর্ড তাদের মধ্য থেকে সার্বিক বিবেচনায় পুরস্কার ঘোষণা করেন। প্রস্তাবিত এলাকায় নক্সা অনুযায়ী তিনটি জোন করা হবে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে জোন ‘সি’ অর্থাৎ পুরাতন মূল কারাগারের ১৭ একর জমির মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এর কাজ অতিদ্রুত শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন। জোন ‘এ’ তে মাল্টিপারপাস হল, কনভেনশন সেন্টার, সিনেপ্লেক্স, খাবার ঘর, সুইমিং পুল এবং অন্য সুবিধাসহ গাড়ি পার্কিং, ওয়েটার বডি ও ব্যাংক থাকবে। জোন ‘বি’ তে বুক স্টোর, ফুলের দোকান, ভূগর্ভে গাড়ির পার্কিং, বিদ্যমান ও ওয়েটার বডি। এছাড়া জোন ‘সি’ তে থাকবে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, চার নেতার কারাস্মৃতি জাদুঘর, কনফাইন্ড হেরিটেজ ও উদ্যান।
×