ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কন্যা শিশুদের শিক্ষা সহযোগিতা কার্যক্রম অনুষ্ঠান

সঠিকভাবে কন্যা শিশুকেগড়ে তোলার দায়িত্ব অভিভাবকের

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৭ অক্টোবর ২০১৭

সঠিকভাবে কন্যা শিশুকেগড়ে তোলার দায়িত্ব অভিভাবকের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘কন্যাশিশুর জাগরণ আনবে দেশে উন্নয়ন’। সঠিকভাবে কন্যাশিশুকে গড়ে তোলার দায়িত্ব অভিভাবকের ওপর। সরকার কন্যাশিশুর শিক্ষায় অবৈতনিক ও উপবৃত্তি দিচ্ছে। এ টাকা যাচ্ছে তাদের মায়ের মোবাইলে, যাতে মা তার মেয়ের পড়ালেখা ও বেড়ে ওঠায় সাহায্য করতে পারেন। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলে মেয়েরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে এগিয়ে থাকলেও উচ্চ শিক্ষায় তারা পিছিয়ে। এর কারণ বাল্যবিয়ে। এটা বন্ধের জন্য সরকার কঠোর আইন ও শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের ব্যবস্থা করছে বলে জানান মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি। জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ২০১৭ উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে রুম টু রিড কন্যাশিশুর শিক্ষা সহযোগিতা কার্যক্রমের আওতায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাসিমা বেগম এনডিসি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২ অক্টোবর বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়। প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘কন্যাশিশুর জাগরণ আনবে দেশের উন্নয়ন’। তিনি বলেন, রুম টু রিড ভাল কাজ করছে মেয়েদের জীবন পরিবর্তনের জন্য। ২০৪১ সালের মধ্যে যদি আমরা উন্নত বিশ্বে পরিণত হতে চাই তাহলে অবশ্যই মেয়েশিশুকে যোগ্য করে তুলতে হবে। কন্যাশিশুর জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। অভিভাবকদের অবশ্যই কন্যাশিশুকে পড়ালেখা শেখাতে হবে। শুধু পড়ালেখা শিখে চাকরি করার মনোভাব পাল্টে ফেলতে হবে। এখন নারী বড় বড় উদ্যোক্তা হচ্ছেন। হাতের পাঁচ আঙ্গুল সমান হলে যেমন আমরা মুষ্টিবদ্ধ করতে পারতাম না ঠিক তেমনভাবেই একটি রাষ্ট্রে নারী-পুরুষ উভয়ই বিভিন্ন ধরনের পেশায় নিয়োজিত না থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। কৈশোর থেকেই মেয়েশিশুদের ক্ষমতায়ন ও সহিংসতা রোধের প্রতি সব মহলের সচেতনতা জরুরী। ক্ষমতায়নের ধারণা সৃষ্টির মাধ্যমে মেয়েশিশুর মধ্যে সকল প্রকার বৈষম্য ও সহিংসতা দূর করার শক্তি যোগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি বলে জানান বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, মেয়েশিশুর শিক্ষার অগ্রগতির জন্য রুম টু রিড অনেক ভাল কাজ করছে। রুম টু রিড শিশুর উপযোগী আকষর্ণীয় গল্পের বই স্কুলে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মেয়েদের স্বাবলস্বী করার জন্য শিক্ষার দরকার এবং এটা করার জন্য সবার একসঙ্গে কাজ উচিত। ‘রুম টু রিড’র কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উদযাপন করা হয় এবং দেখানো হয় যে মেয়েরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাদের সকল অধিকার পূরণ করতে হবে। রুম টু রিড মনে করছে যে, মেয়েশিশু যদি তাদের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারে তাহলে তাদের জীবন পরিবর্তন করতে পারবে এবং তাদের নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবে। বিখ্যাত নৃত্যশিল্লী মুনমুন আহমেদ মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, মেয়ে হিসেবে নয় মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রকাশ কর। অতিথিদের বক্তব্যের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকবৃন্দ নিজেদের অভিজ্ঞতা ও মতবিনিময় করেন। আলোচনার পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক আয়োজনের অংশ হিসেবে গান ও নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি, কুইজ ও নাটক প্রদর্শিত হয়। সবশেষে, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দকে কৃতী স্মারক প্রদান ও সকলের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। ‘রুম টু রিড’ একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০টি দেশে শিশুর শিক্ষা সহায়তায় কাজ করে আসছে।
×