ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীগোষ্ঠী ও ৪ দলীয় জোট এক ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে হামলা চালায়

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

জঙ্গীগোষ্ঠী ও ৪ দলীয় জোট এক ও অভিন্ন উদ্দেশ্যে হামলা চালায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্পর্শকাতর ও বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলার তৃতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বুধবার মামলার চীফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, জঙ্গীগোষ্ঠী ও চার দলীয় ঐক্য জোট এক ও অভিন্ন উদ্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায়। সাবেক দুই আইজিপি শহিদুল হক, আশরাফুল হুদা ও ডিএমপি’র তৎকালীন দুই ডেপুটি কমিশনার (পূর্ব) (দক্ষিণ) মোঃ ওবায়দুর রহমান ও খান সৈয়দ হাসান এই চারজন সঠিকভাবে দায়িত্বপালন করেনি। তাদের অবহেলার কারণেই এই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তারা আসামিদের নিরাপদে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের পরবর্তী যুক্তিতর্কের জন্য সোমবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। নাজিম উদ্দিন রোডে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে ঢাকার-১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে। এ মামলা চীফ প্রসিকিউটকে সহায়তা করেন এ্যাডভোকেট মোঃ আকরাম উদ্দিন শ্যামল ও এ্যাডভোকেট ফারজানা রেজা। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট সবুজ, এ্যাডভোকেট রশীদ মোল্লা, এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম তারা মিয়া। চীফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান আরও বলেন, ঘটনার সময় চাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়। পাশাপাশি তারা লাঠিচার্জেই ব্যস্ত ছিল ঘটনাস্থলে যারা আহত হয়েছিল তাদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। অরাজকতার সৃষ্টিতে ভিক্টিমদের চিকিৎসাকাজেও বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের রুহুল আমিন, আব্দুর রশিদসহ তিনজন মিলে জজমিয়া নাটক সৃষ্টি করেছেন। তাকে (জজমিয়া) দিয়ে মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জবানবন্দী রেকর্ড করিয়ে আসামিদের বাঁচানোর জন্য তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছে। আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আর এ মামলায় ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)। ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলা তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আব্দুল কাহ্হার আখন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন। মামলায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গী নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ায় তাদের নাম বাদ দেয়ায় এখন আসামির সংখ্যা ৪৯। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পালাতক রয়েছেন। এ ছাড়া জামিনে আট এবং কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন।
×