ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাগেরহাটে বৃষ্টিতে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় দিশেহারা চাষী

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

বাগেরহাটে বৃষ্টিতে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় দিশেহারা চাষী

বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ অধিকাংশ মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শত শত মৎস্যচাষী অপূরণীয় ক্ষতিতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। ঋণ ও দাদনগ্রস্ত এসব চাষী হাপিত্যেশ করছেন। গত আমাবস্যার গোনে অস্বাভাবিক জোয়ার, নিম্নচাপ ও তিন দিনের প্রবল বৃষ্টিতে চিংড়ি ও মৎস্য চাষপ্রধান এ জেলার অধিকাংশ মাছের খামার ভেসে যায়। জেলা মৎস্য দফতরের হিসাবমতে, তিন হাজার পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির আহ্বায়ক ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন জানান, নিম্নচাপ, ভারি বর্ষণ ও জোয়ারে জেলার অধিকাংশ মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। মৎস্যচাষীরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তারা মাছ চাষ করে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। চিতলমারী, ফকিরহাট, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, মোল্লাহাট, কচুয়া ও সদর উপজেলার শত শত মৎস্যচাষী জানান, লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা জীবিকার সঙ্কটে পড়েছেন। মৎস্যচাষী রুস্তুম হলদারের ভাষায়, এখন বেঁচে থাকাই মুশকিল। সরেজমিন ফকিরহাটের নলধা-মৌভোগ, বাহিরদিয়া, শুভদিয়া, চিতলমারীর রায়গ্রাম, খড়িয়া, মোল্লাহাটের কোদালিয়া-কেন্দুয়া, কচুয়ার বাধাল, মসনিসহ বহু ইউনিয়নের গ্রামের পর গ্রাম গত ছয় দিনেও জলাবদ্ধ হয়ে অছে। সøুইসগেটগুলো দিয়ে ঠিকমতো পানি ওঠা-নামা না করা, সরকারী খালগুলো ভরাট ও দখল হওয়া এবং পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি সরতে পরছে না। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া হয়দার জানান, দেশের অন্যতম প্রধান চিংড়ি উৎপাদনকারী জেলা বাগেরহাট। নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ার এবং তিন দিনের টানা প্রবল বর্ষণে এ জেলার রামপাল উপজেলায় ৪০ ভাগ, মোল্লাহাটে ৬০ ভাগ, কচুয়ায় ৫০ ভাগ, ফকিরহাটে ৫০ ভাগ, চিতলমারীতে ৬০ ভাগ, মোরেলগঞ্জে ৫৫ ভাগ, মংলায় ৪০ ভাগ ও সদর উপজেলায় ৪০ ভাগ মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। পানিতে ভেসে সাদা সোনাখ্যাত গলদা ও বাগদা চিংড়ি এবং বিপুল পরিমাণ সাদা মাছ নদ-নদীতে বেরিয়ে গেছে। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, টানা বৃষ্টি, নিম্নচাপ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের ফলে জেলার নয়টি উপজেলার ৫০ থেকে ৬০ ভাগ মাছের ঘের ভেসে গেছে। পানবরজ ও সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষি, মৎস্য বিভাগসহ সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
×