ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ার্কার্স পার্টি বর্তমান সরকারকে রেখেই নির্বাচন চায়

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১২ অক্টোবর ২০১৭

ওয়ার্কার্স পার্টি বর্তমান সরকারকে রেখেই নির্বাচন চায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারকে রেখেই নির্বাচন চায় ১৪ দলীয় জোটের শরীক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধানের আলোকে বর্তমান সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার পর সরকার দৈনন্দিন কার্যাবলী ছাড়া নীতিগত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশনের অধীনস্ত থাকবে। এছাড়াও একান্ত প্রয়োজনে নির্বাচনে প্রতিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। তবে তাদের বিচারিক ক্ষমতা না দেয়ার প্রস্তাব করছে দলটি। এছাড়াও দলটির পক্ষ থেকে ধর্মীয় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল চাওয়া হয়েছে। বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সকাল ১১টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে দলের সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে ১৪ দফা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। দলের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনের পূর্বে ও পরে একটি নির্দিষ্ট সময়কালে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। এই সময়ে তাদের করা কোন অপরাধ ও কর্তব্যে অবহেলার জন্য নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে যেকোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। ইসির গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সরকার বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। সংলাপ শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। এ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই। নির্বাচনের সময়ে সরকার কেবল দৈনন্দিন কার্যক্রম করবে। বর্তমান সরকারের অধীনেই বিএনপি নির্বাচনে আসবে। যদি তারা আত্মঘাতী না হয় তাহলে নির্বাচনে আসাই যুক্তিযুক্ত উল্লেখ করেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনের কোন অবকাশ নেই। এ বিষয়ে অতীতের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। কমিশন চাইলে ক্ষেত্রবিশেষ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করতে পারে। যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেন তিনি। বলেন, ব্যালট পেপারের পাশাপাশি প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার এক বা দুইটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ভবিষ্যতে ইভিএম ব্যবহারের পথ উন্মুক্ত হবে। তিনি বলেন, সংলাপে ওয়ার্কার্স পার্টি ধর্মীয় ও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে ইতোপূর্বে কোন দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়ে থাকলে তা বাতিলের দাবিও জানায়। স্বতন্ত্র প্রার্থিতার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকা দাখিলের বিধানটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে তা বাতিল চেয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই বিদেশী দূতাবাস ও সাহায্য সংস্থাগুলো দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দেয়। আমরা মনে করি আমাদের নির্বাচনে বিদেশীদের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। আশা করি নির্বাচন কমিশন বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন। নির্বাচন নিয়ে দলটির অন্যান্য প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে আগামী নির্বাচনের আগে সীমানা পুনঃনির্ধারণ না করা, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা, নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করা, নির্বাচনকে সন্ত্রাস ও পেশিশক্তি মুক্ত করা, নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার বন্ধ করা, নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্ত না করা।
×