ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের কথা বলতে বলতে ক্লান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের কথা বলতে বলতে ক্লান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই জাতীয় ঐক্যের কথা বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। আওয়ামী লীগ তো কখনও ঐক্যের কথা বিশ্বাস করে না। সরকারেরও এই বিষয়ে কোন আগ্রহ নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সহায়তা সংগ্রহ করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। নগর বিএনপির দক্ষিণের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ত্রাণ সহায়তা দুই লাখ টাকা দলের মহাসচিবেব হাতে তুলে দেন দায়িত্বশীলরা। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের বেলায় প্রযোজ্য একটি প্রবাদ আছে, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। তাই আমরা সব সময়ই বলে আসছি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ নেয়া উচিত। কারণ, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের ফিরিয়ে দিতে হলে বিশ্ব জনমত তৈরির জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের কথায় আওয়ামী লীগ কর্ণপাত করছে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার প্রথমদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাড়া না দিলেও পরে যখন বিশ্ববাসী সোচ্চার হয়েছে তখন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় সমগ্র বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ান এবং গণহত্যা বন্ধ করে বাংলাদেশ থেকে তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করুন। মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এবং তারা যথাসাধ্য সামর্থ্য নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নির্যাতন মানবতার ওপর নির্যাতন। এতে মানবতার অপমান হচ্ছে আজ। মানবতাকে টুটি চিপে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা দিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে দুই লাখ টাকা তুলে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার প্রমুখ। চালের দাম কেন বেড়েছে গভীরে না গিয়ে সঙ্কট মোকাবেলা সম্ভব নয়- নোমান বাজারে চালের দাম কেন বেড়েছে এ ঘটনার গভীরে না যাওয়া পর্যন্ত সঙ্কট মোকাবেলা কোনভাবে সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। নোমান বলেন, চালের দাম বাড়ার মূল কারণ হলো ডিমান্ডেড সাপ্লাই নিশ্চিত করতে না পারা। দেশ পরিচালনায় সরকার সামগ্রিকভাবে ব্যর্থ হওয়ায় তা করতে পারছে না। তিনি বলেন, মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও কামরুল ইসলাম চাল ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন কিভাবে দাম কমানো যায়, মজুদদারি রোধ করা যায়? এমন পরিস্থিতিতে মজুদদাররা বলল চালের সঙ্কট যাতে না হয় এ জন্য মজুদ করেছে। এমন হলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। নোমান বলেন, সরকারী খাদ্য গুদামগুলোতে যে পরিমাণ চাল মজুদ থাকার কথা ছিল সে পরিমাণ মজুদ নেই। আজকের দিনে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল মজুদ থাকার কথা সেখানে রয়েছে দুই লাখ মেট্রিক টন। সরকারী মজুদের কথা ব্যবসায়ীরা জেনে যান নানাভাবে এবং কোন বাজারে চালের চাহিদা বেশি হলে সেখানে সঙ্কট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। নোমান বলেন, চালের দাম কমাতে হলে ব্যবসায়ীদের শুল্ক ছাড়া চাল আমদানির সুযোগ দিতে হবে। এ ছাড়া মজুদদারি ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে চালের দাম কমবে। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন আরেকটি নির্বাচন দিতে চাচ্ছে বর্তমান সরকার। কিন্তু আমরা তা হতে দিতে পারি না। আমরা জয়ের মুখোমুখি। সেই পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আগামী দিনে আন্দোলনে আমাদের সাংগঠনিক কর্মদক্ষতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাজি মোঃ লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন সরদার প্রমুখ। চালের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকার দায়ী ॥ রিজভী চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকার দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, মন্ত্রীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকের পরও কমেনি চালের দাম। চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাগাড়ম্বর ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, এর প্রভাব বাজারে এখনও পড়েনি। ফলে চালের দাম নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্য ডাহা চাপাবাজিতে পরিণত হয়েছে। তাদের কথার সঙ্গে বাস্তবের কোন মিল নেই। এই সরকারের দম্ভ আর ধমক ছাড়া জনগণকে দেয়ার কিছুই নেই। রিজভী বলেন, বিভিন্ন স্থানে খোলাবাজারে কিনতে আসা নিম্নবিত্তদের ওএমএসের মোটা সেদ্ধ চালের পরিবর্তে আতপ চাল দেয়া হচ্ছে। আতপ চালের বিক্রি বাড়াতে ডিলাররা ক্রেতাদের জোরপূর্বক আটার সঙ্গে আতপ চাল নিতে বাধ্য করছেন। ক্রেতারা আটা চাইলে সঙ্গে আতপ চালও দিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং তা নিতেও বাধ্য করা হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাকে। আতপ চাল না কিনলে আটা মিলছে না। যা অত্যন্ত অমানবিক ও গরিব মানুষের সঙ্গে জোর জবরদস্তির শামিল। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলের নেতা আসাদুল হাবীব দুলু, মীর সরাফত আলী সফু, মুনির হোসেন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। রোহিঙ্গা ইস্যুতে গোলটেবিল বৈঠক করবে বিএনপি রোহিঙ্গা ইস্যুতে করণীয় ঠিক করতে দলের সিনিয়র নেতা ও কূটনীতিকদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক করবে বিএনপি। ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
×