ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনের ব্যর্থতা ঢাকতে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে জিয়া পরিবারকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নামে বিদেশে যে কল্পিত সম্পদের কথা বলা হয়েছে তা হাস্যকর। ফখরুল বলেন, জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিদেশে টাকা পাচারের তদন্ত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ ধরনের মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তারা মেগা প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে এখন জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। এ মিথ্যাচারের জবাব জনগণ দেবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের কাজই হচ্ছে প্রকৃত ইস্যুকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করা। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বশীল পদে থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে কার কত সম্পদ রয়েছে ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী মিডিয়াতে আসতে শুরু করেছে। কানাডায় কারা বেগম পল্লী, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, সিঙ্গাপুর ও ব্যাঙ্ককে বিশাল শপিংমল কিনেছেন, আমেরিকায় কারা নতুন বাড়ি কিনেছেন, কতগুলো বাড়ি কিনেছেন, তা এখন দেশবাসীর অজানা নয়। রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে বিএনপির প্রতিনিধি দলকে বাধা দেয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ত্রাণের নামে আওয়ামী লীগ বিশাল লুটপাটের সুযোগ সৃষ্টি করে। সেখানে অন্য কাউকে ত্রাণ দেয়ার সুযোগ না দেয়া মানবতার বিরুদ্ধে অবরাধ হিসেবে গণ্য হবে। মানুষের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করা আর তা বিতরণ করতে যাওয়া এক নয়। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বিএনপি লোক দেখানো কাজ করে না। লোক দেখানো কাজ আপনারা করেন। লোক দেখানো উন্নয়নের নামে লুটপাট আপনাদের স্বভাবজাত। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বুধবার জাতীয় সংসদে বিএনপি ও আমার নামে সম্পদের যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাল্পনিক গল্প জড়িয়ে বিএনপিকে নানাভাবে ঘায়েল করা হচ্ছে। এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও কানাডায় বিএনপি নেতাদের যে সেকেন্ড হোম আছে তার তালিকা প্রকাশ করুন। চ্যালেঞ্জ করছি, আমাদের এসব কল্পকাহিনীর সত্যতা গত ১০ বছরে প্রমাণ করতে পারেননি, এখনও পারবেন না। সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজ আমি আপনাদের সামনে প্রধান আসামি হিসেবে উপস্থিত হয়েছি। জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেছেনে, ‘সিঙ্গাপুরে মেরিনা বে নামে বিলাসবহুল হোটেলের শেয়ার রয়েছে বিএনপি সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফের। মেরিনা বে হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টের ১৩ হাজার শেয়ারের মালিক তিনি। এছাড়া খন্দকার মোশাররফের সিঙ্গাপুরে দুটি বিলাসবহুল এ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে এবং মালয়েশিয়ায় তিনটি এ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।’ সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় নিজের নামে কোন সম্পদ নেই দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, মালয়েশিয়ায় আমার কোন এ্যাপার্টমেন্ট নেই ও মেরিনা বে হোটেল এ্যান্ড রিসোর্টেও আমার শেয়ার নেই। দলের সিনিয়র নেতাদের নামে এসব তথ্য ছড়িয়ে সরকার বিএনপিকে ঘায়েল করতে চাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে তার কেরানীগঞ্জের বাড়িতে প্রস্তুতি সভায় পুলিশ দিয়ে বাধা দেয়া হয়েছে। হামলাকারী পুলিশ সদস্যরা ইটপাটকেল ছুড়ে আমার বাড়ির কাঁচের জানালা-দরজা ভাংচুর করে এবং বাড়ির আঙ্গিনা থেকে নেতাকর্মীদের তিনটি মোটরসাইকেল পুলিশভ্যানে উঠিয়ে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, আমার পুত্রবধূ নিপুণ রায়সহ সভাস্থলে আসা ব্যক্তিদের দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। শান্তিপূর্ণ ও পারিবারিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচীতে পুলিশী হামলার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো দেশে আইনের শাসনের ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই। তিনি বলেন, সরকার মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে সাম্প্রদায়িক কাজ করে। লড়াই করে হলেও আমরা পূজার আনন্দ জনগণের কাছে পৌঁছাব। নেতাকর্মীরা তাতে পিছপা হবে না। ভয়কে জয় করতেই হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডাঃ দেওয়ান মোঃ সালাহ উদ্দিন, বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবীব, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।
×