ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলছি- বললেন তিন উইকেট শিকারি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, এ্যাগারের দাবি যে কোন লক্ষ্য তাড়া করার সামর্থ্য অস্ট্রেলিয়ার রয়েছে

মিরাজের মনের কথা’

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৯ আগস্ট ২০১৭

মিরাজের মনের কথা’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমদিন শেষেই মিরপুর টেস্টে দুঃশ্চিন্তার কারণ ছিলেন তখনও উইকেটে থাকা অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান আবার উপমহাদেশের উইকেটেও বেশ সফল। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে পরিকল্পনা করে দ্বিতীয়দিনের শুরুতেই তাকে বোল্ড করে সফল হয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। নির্ভরতার প্রতীক এ স্পিন বিস্ময় নির্ভার করেছেন দলকে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করে। মিরাজের দাবি যে কোন লক্ষ্য অসিদের বেঁধে দিলেই লড়াই করবে বাংলাদেশ। তবে ৩০০’র অধিক রান দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারলে দলের বোলারদের জন্য সুবিধাজনক হবে বলে মনে করেন তিনি। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার অফস্পিন অলরাউন্ডার এ্যাশটন এ্যাগার দাবি করেছেন বাংলাদেশের দেয়া যে কোন লক্ষ্য তাড়া করার সামর্থ্য আছে অসিদের। এজন্য তৃতীয়দিন ঠিক জায়গায় ভালভাবে বল ফেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেয়ার প্রত্যয় জানালেন তিনি। প্রথমদিন পর স্বাগতিকরা ড্রাইভিং সিটে আছে এমনটাই দাবি করেছিলেন সাকিব আল হাসান। তিনিই শেষ পর্যন্ত নায়ক হয়ে গেছেন দ্বিতীয়দিনে সবমিলিয়ে ৫ উইকেট শিকার করে। ৯ টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিরুদ্ধেই ৫ উইকেট শিকার করা ইতিহাসের মাত্র চতুর্থ বোলার হয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন দ্রুততম সময়ে। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘সাকিব ভাই তো তিন সংস্করণেই অলরাউন্ডার হিসেবে দাপট দেখাচ্ছেন। আমরা সবাই জানি সাকিব ভাই অনলি ওয়ান। আমার কাছে খুব ভাল লাগছে যে উনি এত রেকর্ড গড়ছেন আর আমি তার সঙ্গে খেলছি। তিনি অসাধারণ বোলিং করেছেন এই ইনিংসে।’ গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাটিতে টেস্ট অভিষেকেই সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন মিরাজ। প্রায় এক বছর হয়ে গেছে। জাতীয় দলের সঙ্গে আরও নতুন কিছু অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা হয়েছে মিরাজের। সে কথা জানালেন তিনিই, ‘আসলে আমি যেটি মনে করি যে প্রতিদিনই অনেক উন্নতি করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। আমার কাছে মনে হয় আমার ছোট ছোট অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোন ম্যাচে কিভাবে এগোতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে বল করতে হবে, এগুলো বুঝছি। সামনা সামনি অনেক কিছু দেখছি, সিনিয়ররা পরামর্শ দিচ্ছেন।’ এই অভিজ্ঞতারই ফলাফল হিসেবে ৩ উইকেট পেয়েছেন। তারচেয়ে বড় কথা অসি ব্যাটসম্যানরা দারুণ সমীহ করেছেন মিরাজের স্পিন এবং অনেকটাই কোণঠাসা ছিলেন তারা। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘অবশ্যই ভাল লেগেছে। বিশ্বের সেরা কয়েকজন ব্যাটসম্যানের মধ্যে তাদের ধরা যাবে। তাদের উইকেট পেয়েছি। মাত্র একটা ইনিংস শেষ হয়েছে। আমার লক্ষ্য থাকবে ভাল জায়গায় বোলিং করার। উইকেট যেমনই হোক আউট করার জন্য এটা খুবই জরুরী। তাহলে আরও উইকেট পাওয়া যাবে।’ অসি অধিনায়ক স্মিথকে নিয়ে একটা মাথাব্যথা ছিল। কারণ তিনি একাই ম্যাচের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু তাকে পরিকল্পনা করেই বোল্ড করতে পেরেছিলেন মিরাজ দ্বিতীয়দিনের একেবারে শুরুতে। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘আগের দিন যখন একটা বল করেছিলাম, তখন মুশফিক ভাই বলেছিলেন, স্মিথকে যদি রাউন্ড দ্য উইকেটে ভাল জায়গায় বল করতে পারিস তাহলে সে আটকে যাবে। সেভাবে খেলতে পারে না, পায়ের ব্যবহার করতে পারে না। সামনে গিয়ে খেলে। সেক্ষেত্রে অনেক সময় বল টার্ন করে স্ট্যাম্প হওয়ার সুযোগ থাকবে, ক্যাচ আউট হওয়ার সুযোগ আসবে। আমি মুশফিক ভাইয়ের কথামতোই করার চেষ্টা করেছি।’ মিরাজ মনে করছেন এখনও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে আছে ম্যাচ। যে কোন লক্ষ্যই দিতে পারুক ব্যাটসম্যানরা তিনি জানালেন লড়াইয়ের প্রত্যয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত আমাদের পক্ষেই আছে ম্যাচ। কালকের দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ব্যাটসম্যানরা সবাই দায়িত্ব নিয়ে ভাল খেলতে পারি এবং একটা বড় লক্ষ্য দিতে পারি, তাহলে ওদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে। যে কোন লক্ষ্যই হোক না কেন আমরা লড়াই করব। তবে ৩০০’র বেশি করতে পারলে বোলারদের জন্য সুবিধা হবে।’ অপরদিকে অসিরা ব্যাকফুটে গেলেও হাল ছাড়ছে না। এ বিষয়ে এ্যাশটন বলেন, ‘আমাদের জায়গা মতো বল করতে হবে। এটা খুব জরুরী। উইকেট অনেক কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। রান করা বেশ কঠিন এখানে, অনেক স্পিন হচ্ছে। আমরা দ্রুত তাদের ইনিংস শেষ করার চেষ্টায় থাকব। তবে যে কোন টার্গেট তাড়া করার সামর্থ্য আমাদের ব্যাটসম্যানদের আছে।’ কিন্তু দিনের শেষভাগে বাংলাদেশী ওপেনারের আত্মঘাতী শটে সাজঘরে ফেরার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুটা বিস্মিত হয়েছি। কারণ তারা বেশ ভাল খেলছিলেন। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ একটি শট খেলেছেন তিনি।’
×