মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহে এসে অবশেষে ভারি বর্ষণ হয়েছে রাজশাহী অঞ্চলে। আষাঢ়ের শুরু থেকেই এক রকম রুক্ষ মেজাজেই এ বছর রাজশাহীতে আগমন ঘটে বর্ষার। বৃষ্টির গতিপ্রকৃতি দেখে বোঝার উপায় ছিল না আষাঢ় চলছে। মাঝেমধ্যে ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে এ অঞ্চলের মানুষকে। সময় পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টিনির্ভর আমন চাষাবাদ শুরুই করার সাহসই পাচ্ছিলেন না এ অঞ্চলের কৃষক। তবে আষাঢ়ের বিদায় বেলায় দেখা মিলেছে ভারি বর্ষণের। এতে কৃষকের স্বস্তি ফিরলেও এক রাতের রেকর্ড বৃষ্টিপাতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহী নগরজুড়ে।
মঙ্গলবার রাত ১টা ২০ মিনিট থেকে রাজশাহীতে ভারি বর্ষণ শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও তা থামার নাম নেই। ফলে রেকর্ড বৃষ্টিতে দীর্ঘদিন পর যেন বর্ষার চিরচেনা রূপে দেখা মিলেছে আষাঢ়ে। আষাঢ় শেষের ভারি বর্ষণে কষ্টেরও শেষ নেই। টানা বর্ষণের কারণে এরই মধ্যে রাজশাহী শহরের নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে কাকভেজা হয়েই সকাল থেকে কাজকর্ম করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষদের। অনেক এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনের পানি উপচে একাকার হয়ে গেছে।
রাজশাহী নগরীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে অনেক স্কুলের পরীক্ষা হয়নি। নগরীর সাহেববাজার, ঘোড়ামারা, উপশহর, ভদ্রা, লক্ষ্মীপুর, বহরমপুর, ডিঙ্গাডোবা, মহিষবাথান, তেরখাদিয়া, শালবাগান, গুড়িপাড়া, ষষ্টিতলা ও বর্ণালী এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা ডুবে বাড়ির মধ্যে পানি জমেছে। এতে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন রাজশাহী নগরবাসী। অপরিকল্পিত ডেনেজ ব্যবস্থার কারণে সর্বত্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত চার বছর পর একটানা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে রাজশাহীতে। এমন বর্ষণ আর এই কয়েক বছরের মধ্যে হয়নি। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। এখনও বৃষ্টি চলছে। দিন শেষে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, একটানা বৃষ্টির হিসাবে চার বছর পর এটিই রেকর্ড বৃষ্টিপাত। এর আগে ২০১৩ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ৯৯ মিলিমিটার। এরপর ২০১৪ সালের ২৭ মে রেকর্ড করা হয়েছিল ৯৮ মিলিমিটার, ২০১৫ সালের ২৬ জুন রেকর্ড করা হয়েছিল ১০০ মিলিমিটার। এছাড়া গত বছরের ১৩ এপ্রিল রাজশাহীতেই বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ১০২ মিলিমিটিার। তাই চার বছর পর এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আর মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত তো বটেই।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: