ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মোল্লারহাট

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ॥ ভয়ে বিচার চায় না পরিবার

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১১ জুন ২০১৭

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ॥ ভয়ে বিচার চায় না পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোল্লারহাটে হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের মেয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধরে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করেছে প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে যুবক। কুলিয়া বড়ঘাট এলাকায় গত বুধবার রাতের এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলেও স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ধর্ষকের পক্ষের লোকদের ভয়ে বিচার চায় না ভিকটিমের পরিবার। তবে শনিবার দুপুরে পুলিশী তত্ত্বাবধানে ভিকটিমের পিতাকে এসপি অফিসে আনা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ সুপর পংকজ চন্দ্র রায় মেয়েটির ভীত-সন্ত্রস্থ বাবাকে আইনী সহায়তা প্রদানের জন্য পুলিশ অফিসে ডেকে আনান। ভিকটিমের মা, বাবা, দাদি, ফুফু, ছোট কাকা, নানি ও মামাসহ অন্যন্য আত্মীয়রা জানান, ঘটনার রাতে বাড়ির অদূরে বাজার থেকে ছোট ভাইকেসহ বাড়ি ফেরার পথে কয়েক ছেলের সহযোগিতায় ভিকটিমকে ধরে নিয়ে এক দোকানঘরে আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণ করে। ভিকটিম জানায়, কুলিয়া বড়ঘাট এলাকার রহু শেখের ছেলে জামাল শেখ তার ওপর বর্বরতা চালায়। ওই ঘটনার পর ধর্ষকের আপন মামা স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইসমাইল শেখ ওরফে পেরাগের নেতৃত্বে ভিকটিম পরিবারকে অঘোষিত গৃহবন্দী করে, এছাড়া আইনী আশ্রয় নিলে স্বপরিবারে হাড়গোড় ভেঙ্গে গ্রামছাড়া এবং মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন। ভিকটিম পরিবার আরও বলেন, ‘আমরা আল্লার কাছে বিচার দিছি, আমরা দুনিয়ার বিচার পাব না, আমাদের টাকা নাই-শক্তিও নাই।’ এ প্রতিবেদকসহ কয়েক সংবাদকর্মী ভুক্তভোগী পরিবারের লোকদের সঙ্গে আলাপকালে ওই বাড়িতে মোটরসাইকেলযোগে উপস্থিত হয় অভিযুক্তে মামা স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল ওরফে পেরাগ। তিনি বলেন, ‘যে ভাবেই হোক ঘটনা ঘটেছে, যদি ওই ছেলে এ মেয়েকে বিয়ে করতে চায় তাহলে বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে। তাছাড়া মেয়েরও দোষ।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, ভিকটিমের পরিবার অত্যন্ত গরিব, অপরদিকে অভিযুক্তের পরিবার খুবই প্রভাবশালী এবং ধর্নাঢ্য। তাছাড়া ওই কিশোরীর বাবা একাধিকবার মাদকের ঘটনায় জেল খেটেছে। এ অবস্থায় বেপরোয়া হুমকিতে তারা আতঙ্কিত, সন্ত্রস্ত হয়ে বিচার চাইতে পারছে না। তবে বিভিন্ন সূত্রে খবর শুনে শনিবার দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ভিকটিমের বাবাকে উদ্ধার করে তার অফিসে নিয়ে আসেন এবং অভয় দিয়ে সত্য অভিযোগ দায়ের জন্য বলেন। এ রিপোর্ট লেখ পর্যন্ত ভিকটিমের পিতা বাগেরহাট পুলিশ অফিসে রয়েছেন বলে এসপি জানান। এদিকে অপর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের তত্ত্বাবধানে ভিকটিমের বাবাকে এসপি অফিসে আনার খবর পেয়ে অভিযুক্ত যুবক গা-ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জনকণ্ঠকে জানান, সত্য উদঘাটন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সম্ভব সবকিছুই করা হচ্ছে।
×