ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ বাংলাদেশের ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৫ জুন ২০১৭

আজ বাংলাদেশের ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া

লন্ডন ব্রিজ হামলায় সব যেন ওলট-পালট হয়ে গেছে। লন্ডন শহরে যেন অন্ধকার নেমে এসেছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সবাই খুব সাবধানে চলাফেলা করছে। সবাই আতঙ্কিত, কখন আবার কোথায় হামলা হয়ে যায়। তাতে করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও ম্লান হয়ে গেছে। এই লন্ডনের কেনিংটন ওভাল স্টেডিয়ামেই আজ বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া লড়াই করবে। কার ভাগ্যে আজ অন্ধকার নেমে আসবে? দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ‘ডু অর ডাই’। যে দল হারবে তাদেরই বিদায় ঘণ্টা বেজে যেতে পারে। হারলেই বাংলাদেশের বিদায় ঘণ্টা নিশ্চিত। অস্ট্রেলিয়া হারলেও সেই শঙ্কাতেই থাকবে। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় সাড়ে ছয়টায় শুরু হবে। ম্যাচটি যখন শুরু হবে তার কিছুক্ষণ পরেই বাংলাদেশে রাত নেমে আসবে। কিন্তু লন্ডনে তখন দুপুর থাকবে। ম্যাচ শুরুর সময় দুপুর দেড়টা বাজবে। ম্যাচ যখন শেষ হবে তখন মাত্র রাত হবে। লন্ডনে অন্ধকার থাকে খুব অল্প সময়। সর্বসাকুল্যে পাঁচ বা সাড়ে চার ঘণ্টা। অথচ বাংলাদেশে ১০ ঘণ্টা রাত থাকে। লন্ডনে দিনের আলো থাকে অনেক সময়। ১৯ বা সাড়ে ১৯ ঘণ্টা দিন থাকে। মুসলমানরা রোজাও রাখে এই সময়জুড়েই। তবে লন্ডনবাসী কিন্তু লন্ডন সময় বিকেল ৬টার পর আর কোন কাজ করে না। সবাই এই সময়ে কাজ শেষে ঘরে ফিরে। যে যার মতো ব্যস্ত। এতটাই ব্যস্ত শহর কারও দিকে কেউ তাকানোর সময়টুকুও পায় না। এখন গ্রীষ্মকাল বলে দিনে আলো বেশি। তবে যখন শীতকাল থাকে তখন রাতেই ডুবে থাকে লন্ডনবাসী। দুই থেকে তিন ঘণ্টা আলো মিলে। এই শহরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলও আলোর খোঁজে আছে। ওভালে প্রথম ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ৩০৫ রান করেও হেরেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বলতে গেলে এত রান করেও পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। তাহলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তো আরও ভয়াবহ অবস্থা হওয়ার কথা। অস্ট্রেলিয়া দলটিতে যেমন ব্যাটসম্যান আছে, তেমনি বোলারও আছে। স্টিভেন স্মিথ তো যে কোন দলের জন্যই এখন আতঙ্ক। ডেভিড ওয়ার্নার তো শুরুতেই সব চুরমার করে দিতে চান। মাঝপথে আছেন গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল। যিনি ব্যাট হাতে জমে গেলে রান মেশিনের মতো হয়ে উঠতে থাকে। বল হাতে মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজলউড ও পেট কামিন্স তো দুর্ধর্ষ। হ্যাজলউড একাই তো শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেট তুলে নিলেন। যদিও বাকিরা সুবিধা করতে পারেননি। আর তাতে করে অস্ট্রেলিয়ার হারের সম্ভাবনাও জেগে উঠেছিল। কিন্তু বৃষ্টি অস্ট্রেলিয়াকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে খারাপ করেছে, ২৯২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৫৩ রানেই ৩ উইকেট হারায়, সেটা বাংলাদেশের জন্য প্রেরণা হয়ে ধরা দিতে পারে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচটার বিচার বিশ্লেষণ করে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ। যদি বাংলাদেশ ব্যাটিং ও বোলিংয়ে নিজেদের সেরাটা সমান তালে দিতে পারে তাহলে অস্ট্রেলিয়াকে কুপোকাত করাও যেতে পারে। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে কার্ডিফেই তো অসিদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও যে বাংলাদেশ জিতবে না তা কে বলতে পারে। তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান ব্যাটিংটা ভাল করতে পারলেই তো হলো। পাশাপাশি মুস্তাফিজ ঝলক মেলার সঙ্গে মাশরাফি, সাকিব, মিরাজের বোলিং দ্যুতি মিলে গেলেই তো হয়। আবার কার্ডিফ ফিরে আসবে ওভালে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এরআগে ১৯ ম্যাচ খেলে একবারই জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটি ইংল্যান্ডের মাটিতেই তো, কার্ডিফে। এবারও হয়ে যেতে পারে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, বৃষ্টি এই ম্যাচেও বাধা তৈরি করতে পারে। আজও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। যখন খেলা শুরু হবে, তা আধঘণ্টা আগে এবং প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ার পর যে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তা আর নাও থামতে পারে। তার মানে এই ম্যাচটিও পরিত্যক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি তাই হয় তাহলে সব দলেরই শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ থাকবে। বাংলাদেশ দল অবশ্য সেইরকম সুযোগ চায় না। তারা চায় ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে সুযোগ পেলেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিতে। পারবে বাংলাদেশ?
×